ইব্রার ফেরার দিনে লাল-ঝড় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে

সাতাত্তর মিনিটে যে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের লাল জার্সি পরে নামতে দেখা গেল সেই পরিচিত চেহারাকে। জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০২
Share:

উড়ন্ত: আবার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে ইব্রাহিমোভিচ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইব্রা গোল না পেলেও ফের দেখা গেল তাঁর সেই অতিমানবীয় ভলি। ছবি: এএফপি

নিউ ক্যাসল ১ : ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ৪

Advertisement

একটার পর একটা গোল হয়েছে আর ওল্ড ট্র্যাফোর্ড গর্জন করে উঠেছে। কিন্তু ম্যাচের সাতাত্তর মিনিটের মাথায় যে গর্জনটা উঠল, সেটা গোলের ছিল না। কিন্তু তা বলে সেই গর্জনের ডেসিবেল মাত্রা কম কিছু ছিল না।

সাতাত্তর মিনিটে যে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের লাল জার্সি পরে নামতে দেখা গেল সেই পরিচিত চেহারাকে। জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ।

Advertisement

যাঁকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে মেতে উঠল স্টেডিয়াম। ইব্রা-র পা থেকে কোনও গোল আসেনি ঠিকই, কিন্তু মাঝে একবার দেখা গিয়েছিল সেই পুরনো ঝলক। যখন শরীরটা শূন্যে ভাসিয়ে একটা সাইড ভলি মারলেন ইব্রা। সেই এপ্রিল মাসে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পরে এই প্রথম মাঠে নামলেন তিনি। একবার তো এও মনে হয়েছিল, এ বার বোধহয় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলা নাও হতে পারে তাঁর। কিন্তু ফুটবল মাঠের ‘স্করপিয়ন কিক’-এর মালিক ফিরে এলেন। আর ফিরেই তাঁর হুঙ্কার, ‘‘আমার মাথাটা খেলা ধরে নিয়েছে। এ বার আমার হাঁটুকে সেই মতো চলতে হবে। আমি দুশ্চিন্তায় নেই। সিংহের কিন্তু মানুষের মতো সুস্থ হতে সময় লাগে না।’’

আরও পড়ুন: রক্তাক্ত মাদ্রিদ ডার্বিতে দুই সাত নম্বরই নিষ্প্রভ

‘সিংহ’ ফিরে আসার দিনে আরও এক জন নজর কাড়লেন। তিনি পল পোগবা। পোগবাও চোটের কারণে বাইরে ছিলেন। এবং ফিরে এসে গোলও করে গেলেন এই ফরাসি মিডফিল্ডার। সেপ্টেম্বরে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট তাঁকে ছিটকে দিয়েছিল।

শনিবারের ম্যাচে ১৪ মিনিটের মাথায় নিউ ক্যাসল-কে এগিয়ে দিয়েছিলেন ডোয়াইট গেইল। কিন্তু পোগবার ঠিকানা লেখা পাসে হেড করে সমতা ফেরান অ্যান্টনি মার্শিয়াল। ম্যান ইউনাইটেডের হয়ে স্কোর ২-১ করে দেন ক্রিস স্মলিং। হাফ টাইমের পরে আসে পোগবার গোল। মার্কাস র‌্যাশফোর্ডের হেড থেকে। শেষ গোলটা রমেলু লুকাকুর।

এই জয়ের পরে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা ম্যাঞ্চেস্টার সিটির চেয়ে আট পয়েন্ট পিছনে থাকল ইউনাইটেড। তবে পুরো পয়েন্ট পাওয়ার পাশাপাশি জোসে মোরিনহো-কে স্বস্তি দেবে তাঁর চোট পাওয়া ফুটবলারদের প্রত্যাবর্তন। যা নিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার বলেছেন, ‘‘চোট পাওয়া ফুটবলাররা যে ফিরে এসেছে, এতে আমরা সবাই খুশি। বিশেষ করে ইব্রাহিমোভিচের জন্য ভাল লাগছে। ওর চোটটা মারাত্মক ছিল। ইব্রাকে আবার মাঠে ফিরতে দেখাটা বিশেষ আবেগের ব্যাপার।’’

সিটি যে ভাবে এগিয়ে গিয়েছে, তাতে এ বার কি তাদের ধরা সম্ভব? মোরিনহো বলেছেন, ‘‘আমরা একটা মরসুমে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র বিরুদ্ধে দু’বার খেলতে পারি। ওই ম্যাচ দু’টোয় আমরা পয়েন্ট নেওয়ার চেষ্টা করব। বাকি আমাদের হাতে নেই।’’

নিজের চোট নিয়ে ইব্রাহিমোভিচ বলছিলেন, ‘‘আমার পক্ষে ব্যাপারটা সোজা ছিল না। আমি যখন দারুণ ফর্মে ছিলাম, তখনই চোট পেয়ে যাই।’’ ম্যাঞ্চেস্টারে প্রথম মরসুমে ২৮টি গোল করেন ইব্রা। কিন্তু চোট পাওয়ার পরে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল তাঁর ক্লাব ভবিষ্যৎ নিয়ে। পরে মোরিনহো নতুন করে সই করান তাঁকে। ইব্রা বলছিলেন, ‘‘ক্লাবের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে সই হওয়ার পর থেকেই আমি ফোকাস করতে থাকি ফিরে আসার ওপর। আর ফিরে আসা মানে তো শুধু ফিরে এসে মাঠে নেমে পড়া নয়। এমন ভাবে ফিরে আসা, যাতে মাঠে নেমে একটা প্রভাব ফেলা যায়। দুনিয়াকে বোঝানো যায়, আমি এসে গিয়েছি।’’ইব্রার যদি সত্যিই সেই ‘কামব্যাক’ ঘটে, তা হলে মোরিনহোকে সম্ভবত আর সমস্যায় পড়তে হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন