নেতৃত্ব গেলে যাক, আগ্রাসী খেলার ভাবনা মনোজের

শেষ বার রঞ্জি ট্রফিতে আট ম্যাচে ৬১৬ রান করেছেন মনোজ। তিনটি হাফসেঞ্চুরি, একটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরির সৌজন্যে। গত মরসুম শুরু হওয়ার আগেও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বাংলার অধিনায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০৪:৪৭
Share:

নির্লিপ্ত: অধিনায়কত্বের মোহ কাটছে মনোজের। ফাইল চিত্র

আগামী মরসুমে মনোজ তিওয়ারি বাংলার অধিনায়ক থাকবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েইছে। ময়দানে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, মনোজের পরিবর্তে ঋদ্ধিমান সাহা অথবা অভিমন্যু ঈশ্বরনকে ভাবছেন সিএবি কর্তারা। ঋদ্ধি যদিও জানিয়ে দিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি এখনও কিছু শোনেননি। বৃহস্পতিবার ইডেনে মনোজ জানিয়ে দিলেন, আগামী মরসুমে নেতৃত্ব না থাকলে তাঁর কোনও আক্ষেপ থাকবে না।

Advertisement

সিএবি প্রথম ডিভিশন ওয়ান ডে-র ফাইনালে মোহনবাগানের হয়ে ৫৯ বলে ৬১ রান করেন মনোজ। কোনও অনুশীলন ছাড়াই ক্লাবকে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দিয়ে মনোজ বললেন, ‘‘নেতৃত্ব থাকবে কি না তা নিয়ে ভাবতে চাই না। আমার কাজ রান করা। সেটা নেতৃত্ব থাকলেও করব, না থাকলেও করব। তা ছাড়া অধিনায়ক কে হবে তা নিয়ে ভাবতে চাই না। যদি আমার জায়গায় কেউ তৈরি থাকে তা হলে করুক।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘তবে একটা কথা ঠিক যে, আমাদের দলে যত তরুণ ক্রিকেটারেরা ছিল, তারা প্রত্যেকেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে। আশা করছি, আগামী মরসুমে ট্রফি জিততে কোনও অসুবিধা হবে না।’’

শেষ বার রঞ্জি ট্রফিতে আট ম্যাচে ৬১৬ রান করেছেন মনোজ। তিনটি হাফসেঞ্চুরি, একটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরির সৌজন্যে। গত মরসুম শুরু হওয়ার আগেও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বাংলার অধিনায়ক। সিএবি কর্তৃপক্ষ প্রথম দু’ম্যাচ তাঁকে সময় দিয়েছিল পারফর্ম করে দেখানোর। ডাবল সেঞ্চুরি করে যোগ্য জবাব দিয়েছিলেন বাংলার অধিনায়ক। যদিও মরসুমের শেষ পর্যন্ত সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি।

Advertisement

সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে তাঁর নেতৃত্বে দুরন্ত শুরু করেছিল বাংলা। প্রাথমিক স্তর থেকে সুপার লিগ খেলার সুযোগ পায়। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিই জিতেছিল বাংলা। কিন্তু মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হেরে ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মনোজের বক্তব্য, ‘‘গত বার আমরা খারাপ খেলিনি। শুধু ট্রফি আসেনি। তা ছাড়া, অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে বাংলাকে জিতিয়েছি। চোট নিয়ে খেলেছি। তাই কোনও আফসোস নেই।’’

বাংলার অধিনায়ক এমনও মনে করেন, নেতৃত্বের দায়িত্ব তাঁর কাঁধ থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে আরও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে পারবেন। মনোজের ব্যাখ্যা, ‘‘অধিনায়ক হিসেবে যখন ব্যাট করতে নামি, আমার কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব থাকে। সেই দায়িত্ব সরিয়ে নেওয়া হলে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে পারব। যে শটগুলো এখন নিতে ভয় পাই, তখন সেই শটগুলো নিতে ভয় লাগবে না। এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয়, যখন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে হয়। কিন্তু সেই দায়িত্ব চলে গেলে আর কোনও বাধা থাকবে না। প্রাণ খুলে শট নিতে পারব।’’

তা হলে কি সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে দলের প্রতি সেই দায়বদ্ধতা মনোজের আর থাকবে না? অধিনায়কের উত্তর, ‘‘অবশ্যই থাকবে। প্রাণ খুলে খেলার মানে এটা নয় যে, আমি খারাপ শট খেলে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলাম। প্রাণ খুলে খেলা মানে, আক্রমণ করা কিন্তু যতটা সম্ভব ঝুঁকিহীন পদ্ধতি মেনে।’’

মনোজ যদিও জানিয়ে গেলেন, এ বার কলকাতায় যে রকম গরম পড়েছে তাতে খেলা সত্যি খুব কঠিন। মনোজ বলেন, ‘‘অন্য বারও গরমে খেলতে হয়। কিন্তু এ বার গরম যেন একটু বেশিই লাগছে। তাই বেশির ভাগ সময় শরীর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছি। যতটা সম্ভব বিশ্রাম করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন