পর পর চার ম্যাচে হার। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে অবনমনের খাঁড়া ঝুলছে। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের কাছে পর পর হার। এই অবস্থায় শুক্রবার টালিগঞ্জ অগ্রগামী ছেঁটে ফেলল তারকা কোচ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। তাঁর জায়গায় কামো বায়োদের কোচিং করাতে মুম্বই থেকে উড়িয়ে আনা হল বিমল ঘোষকে। আঠারো বছর এয়ার ইন্ডিয়ার কোচিং করে বহু বার যিনি আই লিগে অবনমন বাঁচিয়েছেন বিমানকর্মীদের। সন্ধ্যায় কলকাতায় পা দেওয়ার পরে হাসতে হাসতে বিমল বলে দিলেন, ‘‘টালিগঞ্জের কোনও ফুটবলারকেই তো চিনি না। কাল মাঠে নেমে চিনব। সবাই বলে আমি অবনমন বাঁচানোর স্পেশালিস্ট। দেখি টালিগঞ্জকে বাঁচাতে পারি কী না!’’ বিমলের অবশ্য কোনও কোচিং ডিগ্রি নেই। তিনি টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবেই থাকবেন রিজার্ভ বেঞ্চে। রবিবারই বারাসত স্টেডিয়ামে এফ সি আইয়ের সঙ্গে খেলা রয়েছে টালিগঞ্জের।
বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গলের কাছে তিন গোল খাওয়ার পরে নিজেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন মনোরঞ্জন। ছাড়বেন কী না তা নিয়ে দোটানায় ছিলেন সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু রাতে টালিগঞ্জের পক্ষ থেকেই মনোরঞ্জনকে ফোন করে বলা হয়, ‘‘আপনাকে ফুটবলাররা ভয় পাচ্ছে। কর্তারাও কেউ আর চাইছে না। আর আপনার অনুশীলনে আসার দরকার নেই।’’ ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ দেওয়া কোচ এবং দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার মনোরঞ্জন অবশ্য এ দিন বলে দিয়েছেন, ‘‘টালিগঞ্জ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাকে ফুটবলারদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল পরে দেখেছি তাদের বেশির ভাগই নেই। আমার কাছে সেই তালিকা আছে। এই অবস্থা দেখে মরসুমের শুরুতেই আমি দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু বলা হয়েছিল ভাল বিদেশি এনে দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতিও রাখা হয়নি। টালিগঞ্জের কোচের দায়িত্ব নেওয়াটা আমার জীবনের একটা ভুল সিদ্ধান্ত।’’
মনোরঞ্জনের জায়গায় আসা বিমল মুম্বইয়ে একটি অ্যাকাডেমি করেছেন। সেখানকার দায়িত্ব অন্য একজনের উপর দিয়ে চলে এসেছেন এক মাসের ছুটি নিয়ে। এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়াও মুম্বই টাইগার্স বা নাগপুর এফ সির কোচিং করেছেন দেশের অন্যতম পরিচিত কোচ। বহু জুনিয়র ফুটবলারকে তারকা বানিয়েছেন তিনি। কলকাতার তিন প্রধানকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বারবার আটকানোর রেকর্ডও আছে। বলছিলেন, ‘‘যখন কলকাতায় কোচিং করতে চেয়েছিলাম তখন কেউ ডাকেনি। এখন চার-পাঁচ ম্যাচের দায়িত্ব পেলাম।’’ এ দিকে ম্যাচ জেতার পরেও এ দিন অনুশীলনে আসেননি ইস্টবেঙ্গল টিডি সুভাষ ভৌমিক। তাঁর জ্বর হয়েছে।