Margarita Mamun

দীপা’র কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে রীতা!

অল্পের জন্য মেয়েদের জিমন্যাস্টিকসের ভল্ট ইভেন্টে ত্রিপুরা কন্যা দীপা কর্মকারের পদক হাতছাড়া হওয়ায় কম কষ্ট পায়নি বাংলাদেশ। এই কষ্ট শনিবার রাতে ভুলিয়ে দিয়েছেন আর এক বাঙালি মার্গারিতা মামুন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ২০:০৮
Share:

অল্পের জন্য মেয়েদের জিমন্যাস্টিকসের ভল্ট ইভেন্টে ত্রিপুরা কন্যা দীপা কর্মকারের পদক হাতছাড়া হওয়ায় কম কষ্ট পায়নি বাংলাদেশ। এই কষ্ট শনিবার রাতে ভুলিয়ে দিয়েছেন আর এক বাঙালি মার্গারিতা মামুন। জিমন্যাস্টিকসে দীপা যেখানে শেষ করেছিলেন সেই রিও অলিম্পিক্স এরিনা থেকেই রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সের অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টে ২০ বছরের বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মার্গারিতা জিতেছেন সোনা! বাবা রাজশাহীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন, স্কলারশিপ নিয়ে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ১৯৮৩ সালে উড়ে গিয়েছিলেন মস্কো। সেখানে প্রেম থেকে পরিণয়ে আবদ্ধ হন সোভিয়েত ইউনিয়নের রিদমিক জিমন্যাস্ট আনার সঙ্গে। সেই বাবা’র সন্তান মার্গারিতা মামুনের ডাক নাম রীতা। রাশিয়ায় বড় হলেও কথা বলতে পারেন বাংলা ভাষায়। সেই মেয়েটির কণ্ঠেই কি না শনিবার রাতে বেজে উঠল রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত ! পরিচয়টা বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত রাশান হলেও তাকে সবাই চেনে ‘বেঙ্গল টাইগার’ বা বাংলার বাঘিনী হিসেবে। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে বল, ক্লাবস, রিবন, হুপ এবং টীম ইভেন্টে রিতার স্বর্ণ পদকের সংখ্যা ছিল ২৮টি। তবে অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টের বিশ্বমঞ্চে এ বারই প্রথম সেরা’র কৃতিত্ব দেখালেন এই রিদমিক জিমন্যাস্ট।

Advertisement

বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সর্বশেষ দু’টি আসরে ২০১৪ ও ২০১৫তে সোনা হাতছাড়া করার কষ্টটা একটু বেশিই তাতিয়ে দিয়েছিল তাঁকে। ইয়ানা কুর্দিয়াভাস্তিবা’র সঙ্গে লড়াইটা ছিল দীর্ঘদিনের। শুক্রবার রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সের অল রাউন্ড ইভেন্টে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে ৭৪.৩৮৮ পয়েন্ট স্কোর করে ফাইনালে ফেভারিটের বার্তাটা দিয়ে দিয়েছিলেন রিতা। শনিবার রাতে ইয়ানাকে হারিয়ে রিমিক জিমন্যাস্টিকসের অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টে সোনা জয়ে প্রকারান্তরে সে জবাবটাই যে দিতে পেরেছেন এই বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত সুদর্শনা। ভাগ্যটাও অবশ্য ভাল, অল অ্যারাউন্ডের ৪টি ড্রিলের মধ্যে হুপ, বল এ ইয়ানা দেখিয়েছেন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব, দেখিয়েছেন রিবনেও। তবে ক্লাবস ড্রিলের শেষ পর্যায়ে এসেই ভুলটি করে বসলেন। তাতেই কপালটা খুলেছে রিতার। ওই ড্রিলেই ইয়ানার সঙ্গে ব্যবধানটা তৈরি হয়ে যায়। যে ব্যবধানে শেষ পর্যন্ত মার্গারিতা মামুনের স্কোর ৭৬.৪৮৩, সেখানে তিনটি ড্রিলে প্রথম হয়েও রুপোজয়ী ইয়ানার স্কোর ৭৫.৬০৮! ক্লাবস ড্রিলে ১৯.০৫০ পয়েন্ট স্কোর করায় রিবন ইভেন্টে চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়নি রিতাকে। রিবনে ১৯.২৩৩ পয়েন্ট স্কোর করেই রিতার শূন্যে লাফ বুঝিয়ে দিয়েছে সোনার দখল নিয়ে ফেলেছেন তিনি।

২০০৮ বেজিং অলিম্পিক্সে বাংলাদেশের হয়ে রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে অংশ নেওয়ার কথা ছিল রিতার। মস্কো থেকে উড়ে এসে বাবা আবদুল্লাহ আল মামুন ঢাকায় এসে যোগাযোগ করেছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে (বিওএ)। রাশিয়ায় তাঁর রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে পারফর্মের ভিডিও ক্লিপিংস জমা দিয়েছিলেন বিওএকে। তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পাল্টে রাশিয়ার হয়েই রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে মেয়েকে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন মামুন। এমন তথ্যই দিয়েছেন বিওএ’র পক্ষ থেকে কর্নেল ওয়ালিউল্লাহ,‘‘বাংলাদেশের হয়ে বেজিং অলিম্পিক্সে মেয়ে অংশ নিক রিতার বাবা এ ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিলেন। সঙ্গে করে নিয়ে আসা ভিডিও দেখিয়ে আমাদেরকে মুগ্ধও করেছেন উনি। পদকের সম্ভাবনা আছে বলেই আমরাও খুব করে চেয়েছিলাম। রিতা বাংলাদেশের হয়ে রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে পারফর্ম করুক। কিন্তু বাংলাদেশের হয়ে অলিম্পিক্সে অংশ নিলে রাশিয়া জিমন্যাস্ট দল ছাড়তে হবে, তা জানার পর ওর বাবা মত পাল্টান।’’

Advertisement

আরও খবর

ব্রিসবেন পরীক্ষার জন্য প্রস্তত তাসকিন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন