বক্সিং গ্লাভস হাতে ঝড় তুলে ফের এশীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়াই নয়। মাইক হাতেও পাওয়া গেল অনুপ্রেরণামূলক মেরি কম-কে। যিনি সোনা জিতে বলে দিলেন, ‘‘আমার প্রত্যেকটা পদকের পিছনে রয়েছে সংগ্রামের কাহিনি।’’
পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তিনি। অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও রেকর্ড গড়লেন একমাত্র ভারতীয় বক্সার হিসেবে পাঁচটি সোনা জিতে। ভিয়েতনামের হো চি মিন শহরে ভারতের তেরঙ্গা উড়িয়ে দেওয়া মেরি বলছেন, ‘‘এই পদকটা আমার কাছে খুবই স্পেশ্যাল। এই পদকটার পিছনেও যে রয়েছে অনেক লড়াই।’’
কী সেই নতুন সংগ্রাম? মেরির বিশ্লেষণ, ‘‘আমার প্রত্যেকটা পদক জয়ের পিছনে সংগ্রামের কাহিনি রয়েছে। এই পদকটা যেমন জিতলাম সাংসদ হয়ে যাওয়ার পরে। আশা করি, এই জয় আমার সুনাম বাড়াবে।’’
কেন তিনি এই পদককে ‘স্পেশ্যাল’ বলছেন, তাঁর ব্যাখ্যাও এর পর দিলেন মেরি। বললেন, ‘‘আমি নানা ভূমিকা পালন করেছি গত কয়েক বছরে। সক্রিয় এক জন সাংসদ আমি। নিয়মিত ভাবে সংসদে যাই। সরকারের নিযুক্ত পর্যবেক্ষকও হয়েছি। সেই কারণে নানা বৈঠকে হাজির থাকতে হয়। তা সত্ত্বেও কখনও ট্রেনিংয়ে হাল্কা দিইনি।’’ এখানেই শেষ নয়। দ্রুত এর পর মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ভুললে চলবে না যে, এ সবের মধ্যেই আমি একজন মা-ও। তিনটে ছেলে আছে আমার।’’
অসাধারণ এই প্রত্যাবর্তন দেখে কে বলবে, মণিপুরের বক্সারের বয়স ৩৫! শুধু ভারতীয় বক্সিংয়েরই নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেই অন্যতম সেরা মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। গত বছর আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থা তাঁকে কিংবদন্তির পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানায়। এর পর কী?
জিজ্ঞেস করায় মেরির জবাব, ‘‘আইওসি (ইন্টারন্যাশানল অলিম্পিক্স কমিটি)-র একটা বৈঠক আছে। সেটায় অংশ নিতে যেতে হবে। আমি ভ্রমণ করাটাকে খুব ঘৃণা করি এখন। মাত্র কয়েক দিনের তফাতে এক বিমানবন্দর থেকে আর এক বিমানবন্দরে যাওয়াটা আতঙ্কের হয়ে উঠেছে এখন আমার কাছে।’’
প্রায় দু’দশক ধরে তিনি বক্সিং রিংয়ে রয়েছেন। এশিয়ান গেমসে থেকে শুরু করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ— সোনা জিতেছেন সব জায়গায়। আর এ বার সোনা জিতলেন অবসর নিয়ে ফিরে আসার পরেও।
‘সোনার মেয়ে মেরি’-কে এখনও থামানোর মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।