প্রথম বার ব্যাগি গ্রিন পরার সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, কোনও দিন টিম থেকে বাদ পড়বেন না। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার আইকন হয়ে উঠবেন। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, গোটা দেশের কাছ থেকে সম্মান, ভালবাসা আদায় করে ছাড়বেন।
এগারো বছরের ক্রিকেটজীবনে সবই পেয়েছেন মাইকেল ক্লার্ক। কিন্তু সঙ্গে জুটেছে বিতর্ক, মিডিয়ার সমালোচনা, টিমের উপর নিয়ন্ত্রণ হ্রাস। ক্রিকেটজীবনের শেষবেলায় অবশ্য তাঁর দেশ, দেশের মানুষ, দেশজ মিডিয়া, এমনকী গোটা বিশ্ব অভিবাদনে ভরিয়ে দিয়েছে। কেরিয়ারের মহরতের প্রতিজ্ঞা পূর্ণতা পেয়েছে কেরিয়ারের শেষলগ্নে।
বিরাট কোহলি থেকে শেন ওয়ার্ন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন থেকে অ্যালিস্টার কুক— বিদায়ী সিদ্ধান্তে ক্লার্ক মিলিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন ক্রিকেট-ঘরানাকে। ‘পাপ’-এর প্রিয় বন্ধু ওয়ার্ন বরাবরই বলে এসেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরা ট্যাকটিক্যাল অধিনায়ক ক্লার্ক। ‘‘আমরা যে ক্রিকেটটা খেলতে ভালবাসি, ক্লার্ক সেটা খেলত। আমার চোখে ও অসাধারণ,’’ বলছেন ওয়ার্ন। আইসিসি তাঁর সম্মানে বিশেষ টুইটার হ্যাশট্যাগ চালু করেছে— থ্যাঙ্কস মাইকেল।
যাঁর দেশের কাছে বিপর্যস্ত হয়ে অবসর ঘোষণা করা, সেই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও পিছিয়ে নেই। স্পিনার গ্রেম সোয়ানের প্রশস্তি, ‘‘আমার বল করা সেরা স্পিন প্লেয়ার। আর মানুষ হিসেবেও দুর্দান্ত।’’ জেমস অ্যান্ডারসন বলছেন, ‘‘ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুম ওর প্রতি সম্মানে ভরে গিয়েছে।’’ কুক তো আগেই বলেছেন, ক্লার্কের মতো ক্যাপ্টেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিরল।
অস্ট্রেলীয় জনমত হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবটের কাজটা দেশের সবচেয়ে কঠিন চাকরির তালিকায় দু’নম্বর। এক নম্বর এত দিন ধরে ছিল মাইকেল ক্লার্কেরটা! সেই অ্যাবট বলে দিচ্ছেন, ‘‘ক্লার্ক দেশের বিরাট রোল মডেল। বিশেষ করে গত বছর ফিল হিউজের ঘটনাটা যে ভাবে সামলাল, দারুণ।’’
কে বলতে পারে, প্রিয় ছোট ভাই ‘হিউজি’ও আকাশ থেকে ক্লার্ককে অদৃশ্য স্যালুট করছেন না!