কোথাও উল্লাস, কোথাও হতাশা

মো ফারাহর ‘ডাবল ডাবল’, বোল্টের টিটকিরি গ্যাটলিনকে

উসেইন বোল্টের অবিশ্বাস্য মহারেকর্ডের পাশাপাশি রিও অলিম্পিক্সে আরও একটা রেকর্ড হল অ্যাথলেটিক্সে। মো ফারাহর। দশ হাজার মিটারের পর এ বার পাঁচ হাজার মিটারেও সোনা জিতলেন ব্রিটিশ অ্যাথলিট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৮
Share:

জোড়া সোনার উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

উসেইন বোল্টের অবিশ্বাস্য মহারেকর্ডের পাশাপাশি রিও অলিম্পিক্সে আরও একটা রেকর্ড হল অ্যাথলেটিক্সে। মো ফারাহর। দশ হাজার মিটারের পর এ বার পাঁচ হাজার মিটারেও সোনা জিতলেন ব্রিটিশ অ্যাথলিট।

Advertisement

১৩ মিনিট ৩.৩০ সেকেন্ডে অলিম্পিক্সের চার নম্বর সোনা তুলে নিলেন তিনি। লন্ডন অলিম্পিক্সের পর রিওর জোড়া সোনা মো ফারাহকে ব্রিটেনের সর্বকালের সফলতম ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথলিটের সিংহাসনে বসাল। সোমালিয়া বংশোদ্ভূত মো অলিম্পিক্সের ইতিহাসেও দ্বিতীয় অ্যাথলিট হিসেবে ‘ডাবল ডাবল’ করলেন। তাঁর আগে এই কৃতিত্ব ছিল ফিনল্যান্ডের লাসে ভিরেনের (১৯৭২ ও ১৯৭৬ অলিম্পিক্সে)।

দশ হাজার মিটারে দৌড়নোর সময় পড়ে গিয়েছিলেন মো গত সপ্তাহে। সেটা সামলেই জিতেছিলেন সোনা। তাই এ দিন যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না চার নম্বর সোনা জেতাটা। ‘‘১০ হাজার মিটারের ইভেন্টের পর পা দুটো খুব ক্লান্ত লাগছিল। এত খারাপ অবস্থা ছিল যে খাবার পর্যন্ত ঘরে আনাতে হচ্ছিল। কী ভাবে সব সামলে দু’নম্বর সোনা জিতলাম জানি না। স্বপ্ন দেখতাম অলিম্পিক্সে একটা সোনা জেতার। সেখানে চারটে সোনা! উফ বিশ্বাসই হচ্ছে না।’’

Advertisement

তবে ৩৩ বছরের ব্রিটিশ অ্যাথলিটের দৌড় এখানেই থামছে না। তিনি আরও দৌড়তে চান। ‘‘২০১৭ লন্ডন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তো বটেই। তার পরও কয়েকটা রোড রেস বা ম্যারাথনে দৌড়তে পারি। অলিম্পিক্সে লড়াইটা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। তবে আমার চার বাচ্চার জন্য যে একটা করে অলিম্পিক্স পদক জিততে পেরেছি এটাই দারুণ ব্যাপার।’’ পঞ্চম সন্তান আসলে ফের অলিম্পিক্সে সোনা জিততে নামবেন কিনা জানতে চাইলে ব্রিটেনের সর্বকালের সেরা দৌড়বীর মজা করে বলে দেন, ‘‘সন্তান আর না! এই রে আমার স্ত্রী আবার না এটা শুনে ফেলে!’’

মো ফারাহদের দাপটে চিনকে পিছনে ঠেলে পদক তালিকাতেও দু’নম্বর জায়গাটা পাকা করে ফেলছে ব্রিটেন। তবে শীর্ষে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আবার ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডেই ফের লজ্জার মুখে পড়তে হল। একশো মিটারের রিলেতে ব্রোঞ্জ জিতলেও ব্যাটন হাতবদল করার সময় নিয়ম ভাঙায় মার্কিন রিলে টিমকে ডিসকোয়ালিফাই করে দেওয়া হয়। তাই রিলেতে ব্রোঞ্জ পেল চার নম্বরে শেষ করা কানাডা।

প্রথম আর দ্বিতীয় লেগেই গণ্ডগোলটা হয়। মাইক রজার্স ব্যাটন হাতবদল করার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছনোর আগেই জাস্টিন গ্যাটলিন ভুল করে বসেন। ব্যাটন নিয়ে নেন রজার্সের হাত থেকে। যুক্তরাষ্ট্র ডিসকোয়ালিফাই করার বিরুদ্ধে আবেদন করলেও ফল হয়নি। গ্যাটলিনটদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার এমন সুযোগ ছাড়েনি বোল্টের জামাইকা।

স্প্রিন্ট দুনিয়ায় প্রবল রেষারেষি যুক্তরাষ্ট্র আর জামাইকার। শেষ তিনটে অলিম্পিক্সে ১০০ মিটারের রিলেতে জামাইকাকে হারানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। তাই রিওতে জামাইকার রিলের সোনা জয়ের উৎসব আলাদা জৌলুস যোগ হয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের এই হাল দেখে। জামাইকার রিলে টিমের অন্যতম সদস্য আসাফা পাওয়েল চিমটি দিতে গ্যাটলিনদের লক্ষ্য করে রেসের পর টিভি চ্যানেলে বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র আসলে আমাদের হারাতে এতটাই ফোকাসড ছিল যে ঠিকঠাক দৌড়টা কমপ্লিট করার দিকে নজর দিতে পারেনি। যা হয়েছে সেটা জামাইকাকে হারানোর কথা এত বেশি করে ভাবার জন্যই হয়েছে।’’ পাশে দাঁড়ানো পাওয়েলের সতীর্থ ইয়োহান ব্লেক, নিকেল আশমেয়াডে সবাই তখন হাসছিলেন। বোল্ট এ সব শুনে হাসতে হাসতে বেশ কয়েক বার ক্যামেরার সামনে মুখ বাড়িয়ে দুটো কথাতেই বুঝিয়ে দেন তাঁর মনের অবস্থা। জামাইকান সুপারস্টার বলেন, ‘‘আরে এ সব একটাই কারণে হয়েছে। সেটা চাপ। শুধু চাপ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন