অভিনব: মেহতাবকে বিদায়ী অভিনন্দন সতীর্থদের। নিজস্ব চিত্র
বিদায়ী ম্যাচে মেহতাব হোসেনকে অধিনায়ক করে সম্মানিত করছে মোহনবাগান। আজ বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে আই লিগের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন ময়দানের ‘মিডফিল্ড জেনারেল’। সেই ম্যাচেই অধিনায়কের ‘আর্ম ব্যান্ড’ পরে মাঠে থাকবেন দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে শুরু থেকেই নামবেন মেহতাব। বুধবার বিকেলে অবসর নিতে যাওয়া ফুটবলারকে শুরু থেকেই নামানোর জন্য ক্লাব কর্তারা কোচ খালিদ জামিলকে অনুরোধ করেছেন বলে খবর। মেহতাব নিজেও তাই চাইছেন। খালিদ অবশ্য বললেন, ‘‘মেহতাব খেলবে। তবে কখন নামাব ঠিক করিনি।’’
ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, কেরল ব্লাস্টার্স, জামশেদপুর-সহ বিভিন্ন ক্লাবে প্রায় কুড়ি বছর ধরে টানা খেলেছেন মেহতাব। দেশের জার্সিতে খেলেছেন তেত্রিশটি ম্যাচ। গত বছরই ঘোষণা করেছিলেন অবসর নেবেন। ঠিক করেছিলেন দশ বছর যে ক্লাবে খেলেছেন, সেই লাল-হলুদ জার্সিতেই খেলবেন শেষ ম্যাচ। কিন্তু হঠাৎই মত বদলে এ বছর মেহতাব চলে আসেন মোহনবাগানে। কলকাতা লিগের পরই ঠিক করেছিলেন অবসর নেবেন। কিন্তু কর্তাদের অনুরোধে আই লিগ খেলতে রাজি হন। তবে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। বলছিলেন, ‘‘রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে ভাল লাগে না। ঘরের মাঠে আই লিগের আর ম্যাচ নেই। তাই এই ম্যাচ খেলেই অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কলকাতাতেই আমি অবসর নিতে চেয়েছিলাম।’’ অবসরের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার ফলে আই লিগের শেষ ম্যাচে এবং সুপার কাপে আর সবুজ-মেরুন জার্সিতে দেখা যাবে না মেহতাবকে।
সে জন্যই এ দিন অনুশীলনের পর শিল্টন পালের নেতৃত্বে তাঁকে সতীর্থরা চমকপ্রদ সংবর্ধনা দেন মাঠের মাঝে। দু’দিকে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের বুট উপরে তুলে সনি নর্দে, আজহারউদ্দিন মল্লিক, দিপান্দা ডিকারা অভিবাদন জানান ময়দানের সফলতম ফুটবলারকে। সতীর্থদের মাঝখান দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় তিরিশটি মালা পরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। মেহতাব বলছিলেন, ‘‘বড় ক্লাবে খেলা শুরু করি মোহনবাগানে। সেখান থেকেই অবসর নিলাম। কিছু দিন বিশ্রামের পর ছোটদের কোচিং করাব ঠিক করেছি। কোচের লাইসেন্স পাওয়ার পরীক্ষায় বসার ইচ্ছে আছে।’’ দীর্ঘ আলোকিত ফুটবলার জীবনে নানা সম্মান পেলেও অপ্রাপ্তিও অবশ্য রয়েছে মেহতাবের। ‘‘অনেক ট্রফি জিতেছি। তবে আই লিগ পাইনি বলে আক্ষেপ রয়েছে। দেশের জার্সিতে অন্তত ৫০টি ম্যাচ খেললে ভাল হত।’’
এমনিতে মোহনবাগান বনাম ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ম্যাচের লিগ টেবলে তেমন গুরুত্ব নেই। সুপার কাপের মূলপর্বে খেলার জন্য ছয় নম্বরে থাকলেই হবে। সনি নর্দেরা রয়েছেন ছয়েই। তবুও জিততে মরিয়া খালিদ। বললেন, ‘‘অ্যারোজে বিদেশি না থাকলেও ওরা ভাল দল। জেতার জন্য ঝাঁপাব আমরা।’’