এএফসি-র শেষ ষোলোয়

ভূমিকম্পে হোটেল ছেড়ে দেড় ঘণ্টা রাস্তায় গোটা বাগান

এএফসি কাপ ম্যাচ খেলে টিম হোটেলে ফিরে ডিনারের জন্য তখন হলে জমায়েত হয়েছে মোহনবাগান দল। হঠাৎ-ই কাতসুমি-গ্লেনরা দেখেন, যে টেবিলে বসে আছেন তার উপর রাখা গ্লাসের জল কাঁপছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২০
Share:

ইয়াঙ্গনের মাঠে আক্রমণাত্মক জেজে। বুধবার।-টুইটার

ইয়াঙ্গন ইউনাইটেড-১ : মোহনবাগান-১
(আদিলসন) (গ্লেন)

Advertisement

এএফসি কাপ ম্যাচ খেলে টিম হোটেলে ফিরে ডিনারের জন্য তখন হলে জমায়েত হয়েছে মোহনবাগান দল। হঠাৎ-ই কাতসুমি-গ্লেনরা দেখেন, যে টেবিলে বসে আছেন তার উপর রাখা গ্লাসের জল কাঁপছে। জোরে জোরে দুলতে শুরু করেছে ডাইনিং হলের ঝাড়বাতিগুলো। বুধবার সন্ধেয় তীব্র ভূকম্পের উৎসস্থল মায়ানমারে সবুজ-মেরুনের টিম হোটেলে তখন রীতিমতো হই-হট্টগোল। আতঙ্ক।

ভূমিকম্প হচ্ছে বুঝতে পেরেই গোটা টিম নিয়ে হোটেলের সামনের রাস্তায় দ্রুত নেমে আসেন বাগান কোচ সঞ্জয় সেন। সেই সময় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন প্রীতম-কিংশুকরা। ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে প্রীতম কোটাল মায়ানমার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে লিখে পাঠান, ‘‘খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। চারদিকে সব কিছু কাঁপছে। সব দুলছে। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল আমাদের মাথায় হোটেলের ছাদটাই ভেঙে পড়বে!’’ সতীর্থ কিংশুক দেবনাথও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পোস্ট করেন, ‘‘খেতে খেতে হঠাৎ দেখি সব কিছু দুলতে শুরু করেছে। খাবার ফেলে রেখে কোনও কিছু না ভেবে আগে দৌড় লাগিয়েছিলাম হোটেলের বাইরে।’’

Advertisement

এ দিনের ভূমিকম্পের উৎসস্থল মায়ানমারের রাজধানী নেপিদওয়ের ৩০৭ কিমি উত্তরে। সেখান থেকে মোহনবাগান দল যেখানে আছে সেই ইয়াঙ্গনের দূরত্ব অনেক। প্রায় সাড়ে ন’শো কিলোমিটার। তা সত্ত্বেও কম্পনের তীব্রতার রেশ এতটাই টের পেয়েছেন বাগান ফুটবলাররা যে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সঞ্জয় গভীর রাতে ফোনে বলছিলেন, ‘‘সত্যি, এটা আমাদের কাছে একটা খারাপ অভিজ্ঞতা। ফুটবলারদের নিয়ে বিদেশে। তার উপর এ রকম ভূমিকম্প। একটাই আশার কথা, যেখানে মূল ভূমিকম্প হয়েছে সেখান থেকে আমরা অনেক দূরে আছি।’’

তবে ভূমিকম্প থামার দু’ঘণ্টা পরেও আতঙ্ক কাটেনি বাগানের সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর। ফোনে বললেন, ‘‘দেড় ঘণ্টা আমরা হোটেলের বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম। ভয়ে ভেতরে ঢুকতে পারছিলাম না। আসলে নেপালে যা ঘটেছিল! সেটাই শুধু মাথায় ঘুরছিল। হোটেলের সবাই আমাদের আশ্বস্ত করার পর তবেই যে যার ঘরে যাই।’’

কলকাতায় ভূমিকম্পের পর বাগান কর্তারা যখন জানতে পারেন মায়ানমারেই এর উৎপত্তিস্থল, তখন থেকেই তারা ফোন করতে থাকেন ইয়াঙ্গনে টিম হোটেলে। ক্লাব তাঁবুতেও হইচই শুরু হয়ে যায়। পরে সেখানে দলের বিশেষ সমস্যা হয়নি জেনে আশ্বস্ত হন বাগান তাঁবুর সবাই।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আগে এ দিন ইয়াঙ্গন ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করে মোহনবাগান। আদিলসনের গোলে প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল মায়ানমারের ক্লাব। হাফটাইমের আগেই অবশ্য বাগানকে সমতায় ফেরান কর্নেল গ্লেন। লেনির পাস থেকে। আই লিগ থেকে কার্যত ছিটকে গেলেও এফএফসি কাপে চার ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ থেকে নক আউটে (শেষ ষোলো) কার্যত পৌঁছে গিয়েছে সঞ্জয়ের বাগান। আর দু’পয়েন্ট পেলে গ্রুপ শীর্ষেও থাকতে পারবে সবুজ-মেরুন। সঞ্জয় বললেন, ‘‘গ্রুপে পয়েন্ট টেবলের যা অবস্থা তাতে বলতেই পারি, আমরা নক আউটে পৌঁছে গিয়েছি। এ বার টেবল টপার হতে পারলে শেষ ষোলোর ম্যাচ প্রথমে আমরা নিজেদের মাঠে খেলতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন