ডার্বির পরিণতি জেনে ডাফি ও ডং। মঙ্গলবার। ছবি: উৎপল সরকার, শঙ্কর নাগ দাস
ড্যারেল ডাফি চেয়েছিলেন, ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করে তাদের হারাতে। কলকাতা লিগ সবুজ-মেরুনে ফিরিয়ে আনতে।
নিজেকে প্রমাণ করার জন্য ডার্বির মঞ্চকেই বেছে নিয়েছিলেন ড্যানিয়েল বিদেমি। কিন্তু সেই সুযোগ পেলেন না তিনিও।
শঙ্করলাল চক্রবর্তীর কোচিং জীবনে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই ডার্বি। টিমকে জেতাতে পারলে বড় দলের কোচ হিসেবে ময়দানে তাঁর কদর অনেকটাই বেড়ে যেত।
প্রবীর দাস, অর্ণব দাসশর্মা, তপন মাইতিরাও যে এই ম্যাচেই নিজেদের জাত চেনানোর জন্য মরিয়া হয়েছিলেন। সে ভাবে মানসিক ভাবে প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধেয় মোহনবাগান কর্তাদের ডার্বি না খেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ডাফি, প্রবীর, বিদেমিদের স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে গেল। কর্তাদের নির্দেশে বাগান ফুটবলাররা মুখে কুলুপ এঁটেছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের চোখেমুখে হতাশার রেখাগুলো বড় স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ল।
ইস্টবেঙ্গল অবশ্য ডার্বি খেলতে জন্য মঙ্গলবারই কল্যাণী পৌঁছে গিয়েছিল। বিকেল তিনটে থেকে কল্যাণীর মাঠে প্র্যাকটিসও করেছে। রাতে কল্যাণীতেই থাকছে লাল-হলুদ দল। মঙ্গলবার প্র্যাকটিসের পর ডু ডং, মেহতাব হোসেন, অর্ণব মণ্ডলরা প্রত্যেকেই বলে দিয়েছিলেন, ‘‘ডার্বি খেলার জন্য আমরা তৈরি।’’ তবে ডার্বি না হওয়ায় লাল-হলুদ ফুটবলাররাও খুশি নন। কারণ তাঁদের লক্ষ্য ছিল মোহনবাগানে হারিয়ে কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। ফুটবলারদের দাবি, ‘‘ডার্বি জিতলে টানা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুশিটা দ্বিগুণ হয়ে যায়।’’
মোহনবাগান অবশ্য ডার্বি যে সময় ছিল অর্থাৎ দুপুর তিনটে থেকেই এ দিন নিজেদের মাঠে প্র্যাকটিস করেছিল। আসলে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কর্তারা নিজেরাই দোটনায় ছিলেন ডার্বি বয়কট করা নিয়ে। সে কারণে তাঁরা ফুটবলারদের ডার্বির জন্য মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে বলেছিলেন বলে খবর। তবে মোহনবাগানের ডার্বি না খেলার নাটকে রীতিমতো বিরক্ত সদস্য-সমর্থকদের একাংশ। সেই কারণেই বোধহয় এ দিন বাগান প্র্যাকটিসে সমর্থকদের ভিড় ছিল না। যা সাধারণত সব ডার্বির আগে দেখা যায়। হাতে গোনা কিছু সমর্থক এসেছিলেন। যাঁরা আবার বাগান কর্তাদের ডার্বি না খেলার সিদ্ধান্তে অত্যন্ত হতাশ। বিরক্ত। একজন সমর্থক বললেন, ‘‘কর্তাদের নিজেদের জেদাজেদিতে এ বারও কলকাতা লিগটা ওরা (ইস্টবেঙ্গল) পেয়ে গেল। মানতে পারছি না।’’ আর একজন বলেন, ‘‘গত বার একটা ডার্বিও জিতিনি। এ বার মরসুমের প্রথম ডার্বি খেলাই হল না। ইস্টবেঙ্গল বলছে, আমরা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেলাম। জবাব দেওয়ার সুযোগটাই পেলাম না।’’