সৌজন্য: কাশ্মীরের ফুটবলপ্রেমীদের অভিবাদন ফুটবলারদের। পিটিআই
সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ওঁরা দু’জনেই খেলে গিয়েছেন কলকাতায়। আবদুল মজিদ ও ইসফাক আহমেদ। শ্রীনগরের টিআরসি টার্ফ মাঠে পুরনো দলের খেলা দেখতে এই দু’জনেই হাজির হয়ে গিয়েছিলেন মঙ্গলবার।
ম্যাচ শেষে দিপান্দা ডিকার গোলে যখন মোহনবাগান ১-০ জিতে ফিরছে, তখন ফোনে ধরা গেল এই দুই প্রাক্তনকে। খেলোয়াড় জীবনে সুব্রত ভট্টাচার্যর সঙ্গী স্টপার মজিদ বলছিলেন, ‘‘সুযোগটা দারুণ কাজে লাগাল ডিকা। এই অভিজ্ঞতা কাশ্মীরের ফুটবলারদের কাজে লাগবে।’’ আর ইসফাক বলছিলেন, ‘‘হৃদয় চাইছিল কাশ্মীরের জয়। আর মস্তিষ্ক মোহনবাগান। শেষ পর্যন্ত আমার পুরনো ক্লাবই জিতল।’’
ভূস্বর্গের কাশ্মীরের ঠান্ডা ও কৃত্রিম ঘাসের মাঠ চিন্তা বাড়িয়েছিল হেনরি কিসেক্কাদের। সঙ্গে ছিল রিয়াল কাশ্মীরের বলপ্রয়োগের রণনীতি। সেই তিন কাঁটা উপ়ড়ে কাশ্মীর থেকে তিন পয়েন্ট নিয়েই ফিরছে মোহনবাগান। কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের বলেই দিলেন, ‘‘মাঠ, আবহাওয়া সবই প্রতিকূল ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিন পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা ফিরতে পারার আনন্দই আলাদা।’’
রিয়াল কাশ্মীর ০ • মোহনবাগান ১
এ দিন জয়ের ফলে চার ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে আই লিগের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল মোহনবাগান। শতাব্দী-প্রাচীন ক্লাবের জার্সি গায়ে শিল্টন পালও নজির গড়লেন একশো ম্যাচ গোল না খেয়ে। মোহনবাগানের ম্যাচ দেখতে এ দিন খেলা শুরুর আধঘণ্টা আগেই কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল স্টেডিয়াম। প্রিয় দলের খেলা দেখতে দিল্লি থেকেও গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন সবুজ-মেরুন সমর্থক। তাঁদের সামনে জিতে ফিরতে এ দিন শঙ্করলাল দল সাজিয়েছিলেন ৪-১-৪-১। রক্ষণে তিনি নামিয়ে দেন দলরাজ সিংহকে। পঞ্জাবের এই স্টপারের হেড ও অনুমানক্ষমতা বেশ ভাল। কড়া ট্যাকল করেন। কভারিংটাও দুর্দান্ত। রিয়াল কাশ্মীরের ডিফেন্ডাররা লম্বা বল ফেলছিলেন মোহনবাগান বক্সের আশেপাশে ঘুরঘুর করা আইভরিয়ান স্ট্রাইকার ক্রিজোর জন্য। যা নষ্ট করে দিচ্ছিলেন দলরাজ-কিংসলেরা।
বিপক্ষের ছন্দপতন ঘটাতে দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের দুই বিদেশি স্ট্রাইকার ডিকা ও হেনরি নিচে নেমে নিজেদের রক্ষণ থেকে বল ধরছিলেন। ইউতা, পিন্টুরাও পাসিং ফুটবল খেলতে শুরু করেন। আর তাতেই ভেঙে পড়ে রিয়াল কাশ্মীর রক্ষণ। সত্তর মিনিটে বাঁ দিক থেকে বল ধরে রিয়াল কাশ্মীর রক্ষণে বল ভাসিয়ে দিয়েছিলেন হেনরি। বিপক্ষের দুই ডিফেন্ডার রাভানন ও লাভডে-র মাঝে তৈরি হওয়া জায়গা থেকে সেই বলে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন ডিকা। ম্যাচ শেষে তিনি বলছেন, ‘‘বিপক্ষ ডিফেন্ডাররা নজরে রাখছিল। একটা সুযোগ পেয়েই তা
কাজে লাগিয়েছি।’’
মোহনবাগান: শিল্টন পাল, অরিজিৎ বাগুই, কিংসলে ওবুমনেমে, দলরাজ সিংহ, অভিষেক আম্বেকর, সৌরভ দাস, পিন্টু মাহাতো (উইলিয়াম লালনুনফেলা, অবিনাশ রুইদাস), ইউতা কিনোয়াকি, হেনরি কিসেক্কা, ওমর এলহুসেইনি, দিপান্দা ডিকা (শিল্টন ডি’সিলভা)।