গুজরাতে লংজাম্পে ব্রোঞ্জ জিরাটের মৌমিতার

অ্যাথলেটিক্সের ময়দানে পুরস্কার পাওয়া অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে সে। গুজরাতে জাতীয় স্কুল অ্যাথলেটিক্সেও গলায় পদক ঝুলিয়েই বাড়ি ফিরবে সে। লংজাম্পে তার প্রাপ্তি ব্রোঞ্জের পদক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বলাগড় শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩৬
Share:

সম্মান: পদক নিয়ে মৌমিতা (ডান দিক থেকে প্রথম)। নিজস্ব চিত্র

কাকভোরে ঘুম থেকে উঠে ডাউন কাটোয়া লোকালে শ্রীরামপুর স্পোর্টিংয়ের মাঠ। বাড়ি ফিরতে কোনও কোনও দিন দুপুর কাবার। তার মধ্যেই পড়াশোনাও চলে। শুধু মাঠ নয়, হুগলির জিরাটের মৌমিতা মণ্ডল পরিবারের অনটনের হার্ডলসও পেরিয়ে যায় অনায়াসে।

Advertisement

অ্যাথলেটিক্সের ময়দানে পুরস্কার পাওয়া অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে সে। গুজরাতে জাতীয় স্কুল অ্যাথলেটিক্সেও গলায় পদক ঝুলিয়েই বাড়ি ফিরবে সে। লংজাম্পে তার প্রাপ্তি ব্রোঞ্জের পদক।

শনিবার থেকে ৬৪তম অনূর্ধ্ব ১৯ মেয়েদের জাতীয় স্কুল অ্যাথলেটিক্স মিট শুরু হয়েছে গুজরাতের নাদিয়াদে। মঙ্গলবার ছিল প্রতিযোগিতার শেষ দিন। পশ্চিমবঙ্গের দলের ম্যানেজার, কুন্তিঘাটের বিশপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নীলেন্দু রায়চৌধুরী জনান, এ রাজ্য থেকে ২০ জন ছাত্রী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। মৌমিতাই প্রথম পদক পেল। বলাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েটির ইভেন্ট ছিল সোমবার। ৫.৫৮ মিটার লাফিয়ে সে তৃতীয় হয়। সোনা পেয়েছে কেরলের সন্দ্রা বাবু (৫.৯৭ মিটার)। রূপো জিতেছে তামিলনাড়ুর বাবিশা পি (৫.৬১ মিটার)। মৌমিতাদের কোচ হিসেবে গুজরাতে গিয়েছেন সিঁথির কস্তুরবা কন্যা বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা সবিতা মণ্ডল এবং নিমতা শ্যামাপ্রসাদ নগর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিতা শম্পা দাস।

Advertisement

গত অগস্ট মাসে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে রাজ্য অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৮ মেয়েদের বিভাগে ১০০ মিটার হার্ডলস এবং লংজাম্পে সোনা জেতে মৌমিতা। হার্ডলসে রেকর্ড করে। সেখানে লংজাম্পে সে ৫.৭১ মিটার লাফিয়েছিল।

মৌমিতার বাবা সুভাষচন্দ্র মণ্ডল জিরাট স্টেশন সংগগ্ন জায়গায় চা বিক্রি করেন। কাছেই নট্টপাড়ায় তাঁদের বাড়ি। মা সোমাদেবী গৃহশিক্ষকতা করেন। বছর বারো বয়সে দৌড়ের প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে মৌমিতা। বর্তমানে শ্রীরামপুর স্পোর্টিং ক্লাবে শুভময় দাসের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করে মৌমিতা।

চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রস্তুতিতে সমস্যা হচ্ছে না? গুজরাট থেকে ফোনে মৌমিতা বলে, ‘‘খেলার জন্য পরীক্ষার প্রস্তুতি আর পড়ার জন্য খেলা— দু’টোতেই সমস্যা হয়েছে। তবে দু’টোই সামলাতে পারব। বাড়ি ফিরে পড়ায় মন দেব।’’ মৌমিতা জানায়, তার বাবা ফুটবল খেলতেন। মা অ্যাথলেটিক্স। দু’জনেই খেলায় তাকে উৎসাহ দেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় প্রামাণিক বলেন, ‘‘পড়া আর খেলা সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে মৌমিতা। রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে ভিন্‌রাজ্য থেকে পদক আনছে। রাজ্য প্রতিযোগিতাতেও দুর্দান্ত ফল করেছে। ওর জন্য আমরা গর্বিত। মেয়েটা আরও সফল হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন