যুযুধান: মোরিনহোকে পাল্টা বিদ্রুপ ক্লপের। ফাইল চিত্র
ইপিএলে নতুন মরসুমের প্রথম ম্যাচ খেলা হওয়ার আগেই শুরু হয়ে গেল বাগযুদ্ধ। তাও সেই জোসে মোরিনহোকে দিয়েই। শেষ বারো মাসে লিভারপুল নতুন ফুটবলার কিনতে খরচ করেছে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে বাইশ হাজার কোটি টাকা। যা নিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজার মন্তব্য করেন, ‘‘চার জন ফুটবলারকে কিনতেই লিভারপুল খরচ করেছে পনেরোশো কোটি টাকা। তাই ওদের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগটা জিততেই হবে।’’
মোরিনহোর মন্তব্য ভাল ভাবে নেননি লিভারপুল ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপ। পাল্টা বলেছেন, ‘‘আমার জীবনের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে জোসে মোরিনহোর মুখে হাসি ফোটানো।’’ মিশিগানে আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন্স কাপ ফাইনালে ম্যান ইউর মুখোমুখি হওয়ার আগে ক্লপের আরও কথা, ‘‘আমরা একটা উদার বিশ্বে বাস করি। এখানে যে যা ইচ্ছে বলতে পারে। আমার জোসেকে নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। তবে আমরা দায়বদ্ধ একমাত্র আমাদের ক্লাবের মালিক আর সমর্থকদের কাছে।’’
লিভারপুলের ফুটবলার কেনায় এত খরচ করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মোরিনহো বলেছিলেন, ‘‘লিভারপুল যা খরচ করেছে তার ধারেকাছে কেউ যেতে পারবে না। হাজার হোক ওরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালিস্ট! আপনাকে বলতেই হবে যে, ইপিএল জেতার সব চেয়ে বড় দাবিদার ওরাই।’’ যা নিয়ে ক্লপের আরও পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার তো মনে হয় না সে রকম কোনও ব্যাপার আছে যে ইপিএল জিততেই হবে। আপনারা ভাবতে পারেন, লিভারপুল এ বারও না পারলে আমার চাকরিটা থাকবে কি না? সেটা কিন্তু নির্ভর করবে আমরা কেমন খেলি তার উপর।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘প্রতিপক্ষ দলগুলিও এত দিন ঘুমিয়ে কাটায়নি। ওরাও অনেক ভাল ভাল ফুটবলার নিয়েছে।’’
লিভারপুল সম্প্রতি যাঁদের নিয়েছে তাঁদের এক জন ব্রাজিল বিশ্বকাপ দলের গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। তাঁকে রোমা থেকে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকায়। কোনও গোলরক্ষককে আজ পর্যন্ত এত টাকায় কেনা হয়নি। সঙ্গে জানুয়ারি মাসে লিভারপুল ভির্জিল ফান দিককে সাউদাম্পটন থেকে নিয়েছিল প্রায় ৬৭৫ কোটি টাকায়। আরও অনেকে হালফিলে এসেছেন লিভারপুলে। গিনির মিডফিল্ডার নাবি কেইতা যেমন। মোনাকো থেকে সই করেছেন ফাভিনহো। স্টোক সিটি থেকে উইঙ্গার জার্দান শাচিরি। ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন, গত মরসুমে ফিলিপে কুটিনহোকে প্রচুর টাকায় বার্সেলোনায় বিক্রি করায় নতুনদের জন্য খরচ করতে কোনও অসুবিধা হয়নি লিভারপুল বোর্ডের।
শুধু তাই নয়, গত মরসুমে তাদের সব চেয়ে সফল ফুটবলার মিশরের মহম্মদ সালাহর বেতনও বাড়ানো হয়েছে। ক্লপের অবশ্য তাঁর চোট নিয়ে এখনও উদ্বেগ রয়েছে। যে কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে সের্খিয়ো র্যামোসের সঙ্গে সালাহর সংঘর্ষের ঘটনা ভুলতে পারেননি, ‘‘আপনি যদি রিয়াল মাদ্রিদের কেউ না হন এবং সেই ঘটনার ভিডিয়ো আবার দেখেন, তা হলে পরিষ্কার বুঝতে পারবেন ঘটনাটা কতটা নিষ্ঠুর ও পাশবিক ছিল।’’ সঙ্গে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘জানি না আগামী দিনেও এই ধরনের অভিজ্ঞতা হবে কি না।’’
সঙ্গে ক্লপের যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়েছে র্যামোসের উপর, ‘‘ওই ঘটনা নিয়ে র্যামোস অনেক কথা বলেছে। এই ধরনের ঘটনা নাকি স্বাভাবিক। মোটেই তা নয়। তা ছাড়া এই ধরনের কাণ্ড এর আগেও ঘটিয়েছে। কিন্তু পরে সে সব নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। যেন সবাই সব কিছু মেনে নিয়েছে। আমি নিজে মেনে নেওয়ার লোক নই। ফুটবল ম্যাচে তুমি আক্রমণাত্মক হতেই পারো। কিন্তু সেটা হতে হবে আইন মেনে।’’