ছন্দে: আইপিএলে ফের পুরনো মেজাজে ধোনি। ফাইল চিত্র
কয়েক মাস আগে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সম্পর্কে আমি লিখেছিলাম, সেই আগের ফিনিশার ধোনি আর নেই। বোলারদের আর শাসন করতে পারছেন না তিনি। ২০১৯ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক হিসেবে পরিবর্ত বেছে রাখতে হবে।
কিন্তু এ বারের আইপিএলে ধোনি এমন ক্রিকেট খেলছেন, যা আমার মতো অনেক ধোনি সমালোচকের মুখ বন্ধ করিয়ে দিয়েছে। মনে পড়ছে, আমার জাতীয় নির্বাচক থাকার সময়ের কথা। ধোনি তখন ঝাড়খণ্ডের হয়ে সাত নম্বরে ব্যাট করতেন। প্রথম দিন ধোনির খেলা দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম, ছেলেটার হাতে মারাত্মক জোর রয়েছে। তাই ওঁকে দিয়ে ওপেন করানো হয় ঘরোয়া ক্রিকেটে। আর সেই সুযোগ পাওয়া মাত্রই সেঞ্চুরি আসতে শুরু করে ধোনির ব্যাটে। বাকিটা ইতিহাস। চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে ধোনি একবার আশিস নেহরা আর রমেশ পওয়ারকে বিশাল ছক্কা মেরে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে ফেলে দিয়েছিলেন। যা আমি আজ পর্যন্ত কোনও ক্রিকেটারকে করতে দেখিনি। এমনই ওঁর হাতের শক্তি।
গত কয়েক বছর এই ধোনিকেই পাচ্ছিলাম না। বেশি সিঙ্গলস নিচ্ছিলেন। শুরু থেকে মারতেন না। শেষের দিকে মারতে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। হয়তো ভারতীয় দলে অধিনায়কত্বের চাপ, মনঃসংযোগের অভাব, আত্মবিশ্বাস ধাক্কা খাওয়া এই ব্যর্থতার নেপথ্যে থাকতে পারে।
এ বারের আইপিএলে ফের সেই চেন্নাইয়ের হয়ে ধোনি অনেক চাপমুক্ত হয়ে খেলছেন। মাঝখানে পেসারদের মারতেন না ধোনি। বাঁ হাতি স্পিনার খেলতে সমস্যায় পড়তেন। অফস্টাম্পের বাইরের বলকে লং অনের উপর দিয়েই ছক্কা মারতেন। কিন্তু এ বার আত্মবিশ্বাসী ধোনি শুরু থেকেই মারছেন। পেসার ও স্পিনার দু’জনকেই আগের মতো আক্রমণ করছেন। শুধু লং অন নয়। মিড উইকেট, কভার অঞ্চল দিয়েও বড় শট মারছেন।
এ বারের আইপিএলে এ পর্যন্ত দশটি ম্যাচ খেলে ২১৭ বলে ৩৬০ রান করেছেন ধোনি। মেরেছেন ১৮টি চার ও ২৭টি ছক্কা। ২০১৩ সালে আইপিএলে ৪৬১ রান করেছিলেন চেন্নাই অধিনায়ক। সে বার পঞ্চাশের উপর ইনিংস ছিল চারটি। এ বার তিনটি পঞ্চাশের উপর তিনটি ইনিংস খেলে ফেলেছেন তিনি। ২০১৩ সালে ধোনির ম্যাচ প্রতি রানের গড় ছিল ২৫.৬১। যা নামতে নামতে গত বছর হয়েছিল ১৮.১৩। এ বার তা দশ ম্যাচের মধ্যেই হয়ে গিয়েছে ৩৫.৭৫। সুতরাং অঙ্কই বলছে ধোনি ফিরেছেন ধোনিতেই।
আর এতে লাভবান হবেন কে? অবশ্যই ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। ধোনি রান পেতেই যিনি বলেছেন ব্যাপারটা ভারতের পক্ষে ভাল হবে। এক বছর পরে বিশ্বকাপে বিরাট আর ধোনি যদি ব্যাট হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রতিপক্ষের উপর, তা ভারতের জন্য দুর্দান্ত ব্যাপার হবে।