ফাইনালে পড়ে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন। সেই চোট নিয়েই পুরো ম্যাচ মাঠে দাপিয়ে বেড়ালেন লালবাগের দিলরুবা ইয়াসমিন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। তবে মহিলাদের আন্তঃজেলা কবাডি প্রতিযোগিতায় মুর্শিদাবাদের রানার্স হওয়া কম গৌরবের নয় বলেই ধারণা জেলার ক্রীড়াপ্রেমীদের। এক হাত স্লিংয়ে ঝোলানো। সেই অবস্থাতেই পুরস্কার নিতে এসে আত্মবিশ্বাসী দিলরুবা বললেন ‘‘এবার একটুর জন্য হল না। তবে পরের বার আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়েই ফিরব।’’
আন্তঃজেলা কবাডি প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল গত ১৫ই মার্চ। পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে গত রবিবার ছিল প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্বের খেলা। সেখানে ১৩টি জেলার মধ্যে রানার্স হয় মুর্শিদাবাদের মহিলা দলটি। ফাইনালে সুন্দরবনের কাছে তারা ১১-২৬ পয়েন্টে হেরে যায়। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন দিলরুবা।
এই প্রতিযোগিতা এবার দশম বর্ষে পা দিল। আগের বছরগুলিতেও সেখানে যোগদান করেছিল মুর্শিদাবাদ। তবে এবারই প্রথম ফাইনালে যেতে পারল তারা। এই সাফল্য অবশ্য রাতারাতি আসেনি। গত ছ’মাস ধরে সপ্তাহে দু’দিন (শনি ও রবিবার) বহরমপুরের কে এন কলেজের মাঠে কবাডির অনুশীলন করেছেন আয়েশবাগের মাহমুদা খাতুন, লালবাগের সীমা খাতুনরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাঠে ঘাম ঝরিয়েছেন তাঁরা কোচ শাহজামাল শেখের নির্দেশে। বেলডাঙা, জঙ্গিপুর থেকেও দলের কয়েকজন সদস্য নিয়মিত অনুশীলন করতে ছুটে আসতেন বহরমপুরে। দলের প্রশিক্ষক শাহজামাল বলছিলেন, ‘‘১৩টি দলের মধ্যে রানার্স হওয়া কম গৌরবের নয়। ছ’মাস ধরে ওরা কঠোর অনুশীলন করেছে বলেই এই সাফল্য মিলল। দুর্ভাগ্যবশত ফাইনালে দিলরুবা চোট পেল। ও দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ওকে চোট পেতে দেখে বাকিরাও ছন্দ হারাল। যার জন্য আমরা পিছিয়ে পড়লাম। তা সত্ত্বেও মাঠে যেভাবে মেয়েরা লড়াই করেছে, তার তারিফ করতেই হয়।’’
বেঙ্গল অ্যামেচার কবাডি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি তথা জেলার অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক জগন্ময় চক্রবর্তী মাহমুদাদের পারফরম্যান্স নিয়ে উচ্ছ্বসিত। বললেন, ‘‘জেলায় প্রতিভাবান কবাডি খেলোয়াড়ের অভাব নেই। দরকার ছিল শুধু উপযুক্ত প্রশিক্ষণের। এবার সেটাই করেছেন শাহজামাল। জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে কবাডি খেলা নিয়ে উৎসাহ যথেষ্ট। আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে দিলরুবাদের মতো আরও ভাল খেলোয়াড় উঠে আসবে।’’ জেলা কবাডি সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক বুদ্ধদেব বসু বলেন, ‘‘গত কয়েক মাস কঠোর অনুশীন করে দলটাকে তৈরি করেছেন প্রশিক্ষক। তারই সুফল মিলল।’’