সাক্ষীকে হারিয়ে এক নম্বরের স্বপ্ন দেখছেন ‘আমিরের মেয়ে’

আমির খানের ‘দঙ্গল’ এই মুহূর্তে আলোড়ন ফেলেছে গোটা দেশে। ছবিটা যাঁদের জীবন নিয়ে, ভারতে মহিলা কুস্তির সেই জনক মহাবীর ফোগত ও তাঁর দুই মেয়ে, গীতা ও ববিতাকে নিয়েও সমান মাতামাতি হরিয়ানায়।

Advertisement

স্বপন সরকার

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৯
Share:

আসল গীতার মেহেন্দিতে যে দিন হাজির ছিলেন পর্দার বাবা আমির।

আমির খানের ‘দঙ্গল’ এই মুহূর্তে আলোড়ন ফেলেছে গোটা দেশে। ছবিটা যাঁদের জীবন নিয়ে, ভারতে মহিলা কুস্তির সেই জনক মহাবীর ফোগত ও তাঁর দুই মেয়ে, গীতা ও ববিতাকে নিয়েও সমান মাতামাতি হরিয়ানায়।

Advertisement

গীতা ফোগত অবশ্য নিজেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে চান এই সব হইচই থেকে। তাঁর পাখির চোখ এখন প্রো-রেসলিংয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ।

ছবিতে আমিরের এক মেয়ের চরিত্র তৈরি তাঁকে সামনে রেখেই। সেই গীতা এ দিন বলছিলেন, ‘‘আমার আসল দঙ্গল তো শুরু হচ্ছে ২ জানুয়ারি। প্রো-রেসলিং লিগে উত্তর প্রদেশের হয়ে নামব। আমার টার্গেট প্রথমে দিল্লির সাক্ষী মালিক আর তার পর তিউনিশিয়ার মারওয়া আমিরকে হারানো। ওই দু’টো লড়াইয়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’’

Advertisement

রিও অলিম্পিক্সের ব্রোঞ্জজয়ী সাক্ষীর সঙ্গে গীতার অলিম্পিক্স যোগসূত্রটা বেশ অদ্ভুত। গতবার প্রো-রেসলিংয়ের প্রথম পর্বের লিগে আটান্ন কিলোগ্রাম বিভাগে সাক্ষী মালিকের কাছে হেরেছিলেন গীতা। কিন্তু তা সত্ত্বেও অলিম্পিক্সের জন্য ফেডারেশনের প্রথম পছন্দ ছিলেন তিনিই। গীতাকে অবশ্য অলিম্পিক্সের যোগ্যতা পেতে নামতে হয়েছিল ইস্তানবুলের যোগ্যতা অর্জনের মিটে। কিন্তু সেখানে গীতা রেপেশাজে না লড়ায় তাঁকে ছ’মাস সাসপেন্ড করে ফেডারেশন। আর তাতেই শেষ মুহূর্তে রিওর শিকে ছেঁড়ে সাক্ষীর ভাগ্যে।

এই ব্যাপারটা এখনও মেনে নিতে পারেননি গীতা। নিজেকে ভারতের এক নম্বর মহিলা কুস্তিগির প্রমাণে মরিয়া তিনি। সেই কাজে বেছে নিয়েছেন প্রো-রেসলিংয়ের দ্বিতীয় পর্বের লিগেকে। যেখানে রিওর ব্রোঞ্জজয়ী সাক্ষীকে হারানো তাঁর প্রথম লক্ষ্য। এ দিন রীতিমতো প্রতিজ্ঞার সুরে বললেন, ‘‘ওই বাউটটায় নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতে হবে। প্রতিক্ষায় দিন গুনছি।’’ তাঁর পরের লক্ষ্য রিও গেমসের আর এক পদকজয়ী, তিউনিশিয়ার মারওয়া। ‘‘সাক্ষীর পর যে করে হোক মারওয়াকেও হারাতে হবে,’’ বলে দিলেন গীতা।

তারকা কুস্তিগির বিয়েটা সেরেছেন কিছুদিন হল। এবং স্বামী পবনের কাছ থেকে যে সাহায্য আর সহযোগিতা পাচ্ছেন, সেটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে তাঁকে। গীতা বলছিলেন, ‘‘পবন চায় আমি কুস্তিটা চালিয়ে যাই। শুধু তাই নয়, ট্রেনিংয়ে ভীষণ ভাবে সাহায্য করেছে। ওর সহযোগিতা আর প্রেরণায় এখন আমি প্রো-রেসলিংয়ের জন্য পুরোপুরি তৈরি।’’

‘দঙ্গল’ ছবিটা নিয়ে মাতামাতি থেকে দূরে থাকছেন দাবি করলেও আদতে তাঁর জীবন নিয়ে ছবির সাফল্যে গীতা যে যথেষ্ট প্রভাবিত, সেটা স্পষ্ট হল আরও একটু কথা বলতেই। ‘‘আমির খানের দঙ্গল সিনেমাটা গোটা দেশে এ ভাবে সাড়া ফেলেছে দেখে দারুণ লাগছে। ছবিটার সাফল্য আমাকেও দারুণ উত্তেজিত আর চাঙ্গা করে দিয়েছে। আমাদের জীবনের লড়াইটা মানুষের কাছে পৌঁছেছে, দেশবাসীর মনে ধরেছে। এটা ভাবলেই আনন্দ হচ্ছে। আমার বাবা মহাবীর ফোগতও মনে করেন, আমির আমাদের চরিত্রগুলো একদম সঠিক ভাবে তুলে ধরেছেন পর্দায়। আমরা আমিরের কাছে কৃতজ্ঞ।’’

অবশ্য তার পরেই আবার ফিরে এলেন প্রো-রেসলিংয়ে। বলে দিলেন, ‘‘আমি চাই, দিল্লিকে হারিয়ে আমাদের উত্তরপ্রদেশ এ বার চ্যাম্পিয়ন হোক।’’ বোঝা গেল, রূপোলি পর্দায় তাঁর জীবন তোলপাড় ফেললেও ‘আমিরের মেয়ে’ নিজে আখড়া আর কুস্তির ম্যাট থেকে দূরে থাকতে পারেন না বেশিক্ষণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন