জর্ডনের দেশে পাড়ির স্বপ্ন দেখাচ্ছে জুনিয়র এনবিএ

মঙ্গলবার গোপালনগর থানা এলাকার কয়েকটি স্কুলের প্রায় একশো জন পড়ুয়াকে দেওয়া হল বাস্কেটবলের প্রাথমিক পাঠ। স্থানীয় নহাটা হাইস্কুলের মাঠে আয়োজিত ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে নহাটা হাইস্কুল তো ছিলই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোপালনগর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০২:১৬
Share:

প্রশিক্ষণ: ছোটদের শেখাতে ব্যস্ত জর্ডন। ছবি: সীমান্ত মৈত্র

আমেরিকার জুনিয়র এনবিএ কর্তৃপক্ষের হাত ধরেই এ বার এ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলিতে ঢুকে পড়ল বাস্কেটবলের চর্চা। সেই উদ্দেশ্যে রাজ্যের কিছু বাছাই করা স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দিল এনবিএ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মঙ্গলবার গোপালনগর থানা এলাকার কয়েকটি স্কুলের প্রায় একশো জন পড়ুয়াকে দেওয়া হল বাস্কেটবলের প্রাথমিক পাঠ। স্থানীয় নহাটা হাইস্কুলের মাঠে আয়োজিত ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে নহাটা হাইস্কুল তো ছিলই। এ ছাড়াও এসেছিল পাল্লা কালীপদ চক্রবর্তী উচ্চবিদ্যালয়, দিঘারী ভাসানচন্দ্র হাইস্কুল, নহটা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফুলবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। প্রশিক্ষণ দিতে এসেছিলেন নাতালিয়া অ্যানড্রে নামের এক মহিলা বাস্কেটবল খেলোয়াড়। ওই প্রশিক্ষককে পেয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে তুমুল উন্মাদনা তৈরি হয়। প্রশিক্ষণ পেয়ে বাস্কেটবল খেলার প্রতি উৎসাহও রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে নহাটা হাইস্কুলের রুবাই সরকার, অর্পণ সিকদার, কৌশিক মণ্ডল ও সৈকত বিশ্বাসের মতো স্কুল পড়ুয়াদের।

নহাটা হাইস্কুলে অবশ্য মাস তিনকে আগে থেকেই বাস্কেটবল খেলা শুরু হয়েছিল। এ দিন বিদেশি প্রশিক্ষকের কাছে তালিম নেওয়া পর রুবাই-অর্পণেরা জানাল, ‘‘বাস্কেটবলের প্রতি একটা টান ছিলই। বিদেশি কোচের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেককিছুই নতুন শিখেছি। খেলাটাকে এখন আরও সহজ মনে হচ্ছে।’’

Advertisement

সদ্য বাস্কেট বলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওই পড়ুয়ারা মাইকেল জেফ্রি জর্ডনের নাম অবশ্য আগেই শুনেছে। কেউ কেউ ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাঁর খেলাও ইতিমধ্যে দেখে ফেলেছে। বিখ্যাত মার্কিন বাস্কেটবল খেলোয়াড়। আশি ও নব্বইয়ের দশকে গোটা বিশ্বে মার্কিন পেশাদার বাস্কেটবল লিগ (এনবিএ) জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে যাঁর বিপুল অবদান ছিল। কয়েকজন পড়ুয়ার কথায়, ‘‘জর্ডনের দেশে গিয়ে বাস্কেটবল খেলার স্বপ্ন দেখছি।’’

কী ভাবে জুনিয়র এনবিএ এখানে এল? নহাটা হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিখিলরঞ্জন তালুকদার বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্র নরোত্তম দাস কলকাতার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তাঁর মাধ্যমেই যোগাযোগ হয়েছিল।’’ তিনি জানান, হাতে ধরে শুধু পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দেওয়াই নয়, স্কুলগুলিকে তিনটি করে বাস্কেটবলও দিয়েছেন জুনিয়র এনবিএ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া এলাকার তিনটি স্কুলের তিন শিক্ষককে কলকাতায় বাস্কেটবলের উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তাঁরা। যাতে ওই শিক্ষকেরা পরে স্কুলপড়ুয়াদের শেখাতে পারেন। নহাটা হাইস্কুল থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন শিক্ষক পবিত্র সিংহ ও পাল্লা কালীপদ চক্রবর্তী স্কুল থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন শিক্ষক হরিশঙ্কর সরকার।

নহাটা হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণের আগে থেকে অনেক স্কুলপড়ুয়ার মধ্যেই বাস্কেটবলের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কয়েকজন তো সকাল দশটার আগেই স্কুলে এসে ক্লাস শুরুর আগেই খেলে নিচ্ছিল। স্কুল ছুটির পরও প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। স্কুলশিক্ষক সুশান্ত মোদক অতীতে কলকাতায় রাজ্য বাস্কেটবল লিগে খেলেছেন। তিনিই পড়ুয়াদের মাস তিনেক ধরে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। এ দিন বিদেশি কোচের কাছ থেকে তিনিও নতুন অনেক কিছু শিখে নিয়েছেন। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘আমি ও পবিত্রবাবু এখন থেকে স্কুলে প্রশিক্ষণ দেব।’’

নাতালিয়ার অভিজ্ঞতা কেমন? কেমন দেখলেন ক্ষুদে বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের প্রশ্ন করলে নাতালিয়া বলেন, ‘‘অনেকের মধ্যেই সহজাত প্রতিভা রয়েছে। ঠিকমতো প্রশিক্ষণ পেলে তারা অনেক দূর পর্যন্ত যাবে।’’ নাতালিয়া ভবিষ্যতেও সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন