ব্যাটিংয়ের নতুন ফর্মুলা নির্বিষ করছে স্পিনারদের

বিবর্তনের নতুন ধাপে পৌঁছে গিয়েছে আইপিএল। স্পিনাররা যেখানে কোণঠাসা। মিশ্র, চাওলা, নারিনের মতো স্পিনারদের জাদু যখন আমাদের আবিষ্ট করে ফেলেছে ঠিক তখনই খেলাটা উঠে এল নতুন একটা পর্যায়ে। যে কেউ এ ব্যাপারে এক মত হবে যে, এই আইপিএলে কলকাতাকে বাদ দিলে স্পিনাররা জোট হিসেবে সে রকম নজর কাড়তে পারেনি।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০৩:২২
Share:

বিবর্তনের নতুন ধাপে পৌঁছে গিয়েছে আইপিএল। স্পিনাররা যেখানে কোণঠাসা। মিশ্র, চাওলা, নারিনের মতো স্পিনারদের জাদু যখন আমাদের আবিষ্ট করে ফেলেছে ঠিক তখনই খেলাটা উঠে এল নতুন একটা পর্যায়ে।

Advertisement

যে কেউ এ ব্যাপারে এক মত হবে যে, এই আইপিএলে কলকাতাকে বাদ দিলে স্পিনাররা জোট হিসেবে সে রকম নজর কাড়তে পারেনি। তা সে উইকেট তোলায় হোক বা ইকনমি রেটে। বোকারা অবশ্য এর পিছনে এক রাশ অজুহাত দেখাবে— উইকেট অনুকূল নয়, ছোট বাউন্ডারি, এখনকার ব্যাটগুলো অনেক বেশি শক্তিশাল, ক্যাপ্টেনরা পাওয়ার প্লে বা ডেথে স্পিনারদের উপর সে ভাবে ভরসা করতে পারছে না ইত্যাদি। কিন্তু কেউই লক্ষ্য করেনি যে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলাপমেন্ট ল্যাবরেটরিতে ব্যাটসম্যানরা নিভৃতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিল একটা ফর্মুলা নিয়ে।

ফর্মুলাটা যখন সামনে এল, স্পিন নিয়ে সব তত্ত্ব উড়িয়ে দিল এক ঝটকায়। বিশাখাপত্তনমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের লড়াইটাই নেওয়া যাক। এটা এমন একটা মাঠ যেখানে আগে দু’বার তিন অঙ্কের রানে পৌঁছতে মুম্বইয়ের কালঘাম ছুটে গিয়েছিল। দিল্লি তৈরি ছিল ওদের তিন স্পিনারের বিষাক্ত ছোবল নিয়ে। তার পর টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে প্রথম ওভারে সেই স্পিনারকে আক্রমণে লেলিয়ে দাও। আর কী চাই!

Advertisement

প্রথম বলটা পিচে পড়ে কিছুটা থমকে এল ব্যাটসম্যানের দিকে। দ্বিতীয়টা একেবারে রোহিত শর্মার ব্যাটের মুখে এসে স্পিন করল, সঙ্গে বাউন্সও। যেটা দেখে ফিল্ডাররা উইকেটের আশায় ব্যাটসম্যানকে ঘিরে ধরল। শিকারের গন্ধ পেয়ে ঠোটটা এক বার চেটে নিল বোলার। আর উইকেটকিপার উৎসাহে লাফাতে শুরু করল। রোহিত কিন্তু পরের দুটো বল চার আর ছক্কা কষিয়ে দিল। পরের ১৯ ওভারে চলল শুধু ঝড়। জাহিরের কাছে ওর স্পিনারদের উপর ভরসা না করার কোনও কারণ ছিল না। তাই ও স্পিনারদের আক্রমণ থেকে সরায়নি। কিন্তু স্পিনাররা ক্রমাগত ছক্কা খেতে লাগল। মিশ্র, তাহির, নাদিম কেউ বাদ গেল না মার খাওয়ার হাত থেকে। তাহির তো শেষ করল চলতি আইপিএলে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার নজির গড়ে।

শেষ পর্যন্ত মুম্বই যখন থামল দেখা গেল চারের থেকে বেশি ছক্কা এসেছে। পিচ যেখানে স্লো, সঙ্গে স্পিন আর বাউন্সও আছে, সেখানে ড্রাইভ বা কাট করা মোটেই ব্যাটিংয়ের সেরা পন্থা নয়। তার থেকে বল যেখানে পিচ করছে সেখানে পৌঁছনোর চেষ্টা করতে হবে। স্পিন করার আগেই মারতে হবে। আর তার জন্য আকাশ পথটাই সবচেয়ে কার্যকরী। প্রয়োজন পড়লে তার জন্য পিঞ্চ-হিটারকে আগে নামিয়ে দাও। মুম্বই যেটা করেছে অম্বাতি রায়ডুর আগে ক্রুনাল পাণ্ড্যকে পাঠিয়ে। এ বার দেখার স্পিনাররা এই অস্তিত্বরক্ষার চ্যালেঞ্জ কী ভাবে সামলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন