বিওএ নির্বাচন

দুই ভাইয়ের লড়াইয়ে নতুন মোড়

শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের আকর্ষণীয় নির্বাচন নাটকীয় মোড় নিতে শুরু করল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:০২
Share:

শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের আকর্ষণীয় নির্বাচন নাটকীয় মোড় নিতে শুরু করল।

Advertisement

নাটক হঠাৎ-ই ঢলে পড়ল অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্সে। নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হয়ে যেতেও পারে নিয়ম রক্ষার।

শোনা যাচ্ছে নির্বিষ একটি সংস্থার নির্বাচন নিয়ে দাদা এবং ভাই মুখোমুখি লড়াইয়ে নেমে পড়ায় বিরক্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, তাঁর ইচ্ছেতেই নাকি শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে নেমেছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী।

Advertisement

এক মন্ত্রী নির্বাচনে সচিব পদে দাঁড়িয়ে পড়া ছোট ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ দিন নাকি বার্তা পাঠিয়েছেন, সরে দাঁড়ানোর জন্য। আর এক মন্ত্রী নাকি ভোট নিয়ে আলোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর প্যানেলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। শোনা যাচ্ছে সেই মন্ত্রী নাকি আলোচনার সময় বলেছেন, ‘‘অজিতবাবু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর মাধ্যমেই সব ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।’’ মন্ত্রীদের কথা ও কাজেই স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দিতে চাইছেন।

মন্ত্রীরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত অবশ্য সংস্থার নির্বাচন প্রক্রিয়া সরকারি ভাবে এড়ানো যাবে না। বুধবার ছিল মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এবং দেখা যাচ্ছে, তাঁর প্যানেলের দু’জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও স্বপন নিজে সচিব পদ থেকে এখনও সরে দাঁড়াননি। তবে নিয়মিত বিওএ অফিসে এসে নিজের লোকজনদের সঙ্গে দীর্ঘসময় কাটালেও এ দিন স্বপনবাবুকে দেখা যায়নি ময়দানেই। ফোন বন্ধ রেখেছেন। বারবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ লোকজন অবশ্য জানাচ্ছেন, ‘‘স্বপনবাবু অসুস্থ। তাই আসেননি।’’

ভাই না এলেও দাদা অজিতবাবু এসেছিলেন রাজ্য অলিম্পিক সংস্থার অফিসে। ছিলেন ঘণ্টা তিনেক। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে তাঁকে আলোচনা করতে দেখা যায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার পরেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। বললেন, ‘‘আমার কাজ আমি করছি। চাই না নির্বাচন ঘিরে কোথাও কোনও তিক্ততা তৈরি হোক। ভাইয়ের ব্যাপারেও আমি কিছু বলতে পারছি না। ওর সঙ্গে তো ফোনে আমিও কথা বলার চেষ্টা করছি। পাচ্ছি না।’’

জানা গিয়েছে, নির্বাচন হলেও তাঁর জন্য তৈরি থাকছেন মুখ্যমন্ত্রীর দাদা। তাঁকে জেতাতে আসরে নেমে পড়েছেন নাকি মন্ত্রীরাও। রাতের খবর, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না-ও হতে পারে। বের হতে পারে কোনও নতুন সমাধানসূত্র।

বি ও এ নির্বাচন নিয়ে মু্খ্যমন্ত্রীর পরিবারের ঝামেলা ময়দানে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুখরোচক খবর। তাঁর ধারণা ছিল এটা যে কোনও সময় মিটে যাবে। কিন্তু তা না হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন তাঁর দাদা অজিতবাবুর সঙ্গে। কালীঘাটের খবর, দাদার কাছে কেন এ সব হচ্ছে জানতে চান মমতা। বিরক্তিও প্রকাশ করেন নির্বাচন নিয়ে মিডিয়াতে নানা খবর বেরোনোয়। আলোচনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুরমন্ত্রী ববি হাকিম। পাশাপাশি বুধবার দুপুরে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গিয়েছিলেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। বিওএ নির্বাচন নিয়ে অজিতবাবুর লোকজন সেখানে ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে খবর। অরূপবাবু অবশ্য রাতে বলেছেন, ‘‘আমি ক্রীড়ামন্ত্রী। কোনও সংস্থার নির্বাচনে ঢুকতে পারি না।’’

পরিস্থিতি যা, তাতে অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্সের আবহের মধ্যেও আরও নতুন কিছু নাটকীয় উপাদান হাজির হতেই পারে যে কোনও মুহূর্তে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন