প্রশ্ন: ধোনি বলেছিলেন, মইয়াপ্পন ক্রিকেট উৎসাহী। কমিটির রায় বলছে, মইয়াপ্পন সিএসকের অন্যতম কর্তা, যিনি বেটিং করেছেন। প্রমাণ হল, ধোনির সাক্ষ্য ঠিক নয়। তা হলে ধোনির ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন?
আনন্দবাজারের উত্তর: ধোনি যা বলেছিলেন, কমিটির সামনে বলেছিলেন। শপথ নিয়ে বলেননি। তাঁর শাস্তি হবে কি না, সেটা সুপ্রিম কোর্টের বিচার্য। তবে এর জন্য সাধারণত শাস্তি হয় না।
প্রশ্ন: সিএসকে সাসপেন্ড হলেও শ্রীনিবাসন কী ভাবে রেহাই পাচ্ছেন? টিমটা যেখানে তাঁরই ছিল।
আনন্দবাজারের উত্তর: শ্রীনির ব্যাপারটা দেখা লোঢা কমিশনের এক্তিয়ারে ছিল না। এটা আবারও সুপ্রিম কোর্টের ব্যাপার। আর সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতিরা বলে দেন যে, শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে শ্রীনিকে শাস্তি দেওয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: ইন্ডিয়া সিমেন্টসকে বাদ দিয়ে শ্রীনি আবার কোনও সংস্থার মাধ্যমে সিএসকে কিনে নিতে পারেন কি না?
আনন্দবাজারের উত্তর: পারেন। সেটা করলে আইনের মাধ্যমে আটকানো কঠিন। ইন্ডিয়া সিমেন্টস নিয়ে রায় দিয়েছে কমিটি। কিন্তু শ্রীনি যদি অন্য কোনও সংস্থার মাধ্যমে টিম ফের কেনেন, কিছু করার নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, বোর্ড সেটা মেনে নেবে কি না। পুরোটাই নির্ভর করবে বোর্ডের উপর।
প্রশ্ন: আইপিএল সিইও সুন্দর রামন নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়ল না কেন? কেন সেটা পিছিয়ে দেওয়া হল?
আনন্দবাজারের উত্তর: পড়েনি কারণ পূর্বতন তদন্তকারী অফিসার বিবি মিশ্র অবসর নিয়েছেন। তাঁর জায়গায় এখন তদন্ত করছেন বিবেক প্রিয়দর্শী। তাঁর রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি।
প্রশ্ন: আদালতে আবেদন করলে সাসপেনশন কি উঠে যেতে পারে? বা এই রায়ের উপর কোনও স্থগিতাদেশ আনা যেতে পারে?
আনন্দবাজারের উত্তর: এটা আবেদন নয়, হলে হবে জুডিশিয়াল রিভিউ। যে ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ সম্ভব নয়। তবে রায়ের বিরুদ্ধে সিএসকে-রাজস্থান সুপ্রিম কোর্টে যেতেই পারে। যে হেতু শাস্তিটা আদতে দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। গত ২২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট রায়ে পরিষ্কার বলা আছে, যে হেতু বোর্ড অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারেনি, তাই সুপ্রিম কোর্ট লোঢা কমিশনের হাতে সেই দায়িত্ব তুলে দিচ্ছে।
প্রশ্ন: মুখবন্ধ খামে যে তেরো জনের নাম ছিল, তাদের কী হল? সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে কেন কিছু করা হল না?
আনন্দবাজারের উত্তর: এটা সুপ্রিম কোর্টের ব্যাপার। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে যে এ বার সাধারণ মানুষের সামনে সন্দেহভাজনদের নাম আনা হবে কি না। সন্দেহভাজনদের ক্ষেত্রে লোঢা কমিশনের কিছু করার নেই কারণ তাদের সেই ক্ষমতা দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট।
প্রশ্ন: আইপিএল হচ্ছে বোর্ডের অংশ। আইপিএলে দুর্নীতির জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তারা ফাঁসলেন। কিন্তু বোর্ড কর্তাদের ক্ষেত্রে কেন কোনও শাস্তি হল না?
আনন্দবাজারের উত্তর: অভিযোগ নেই, তাই কোনও শাস্তির ব্যাপারও নেই। তৎকালীন বোর্ড কর্তাদের দিকে কেউ অভিযোগের আঙুল তুলে বলেনি যে তাঁরা বেটিং করেছিলেন। ঘটনার দায়িত্ব তাঁদের অবশ্যই আছে। কিন্তু শাস্তি দেওয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: লোঢা কমিশনের দ্বিতীয় ও শেষ রিপোর্ট কবে? সেই রিপোর্টে কী থাকতে পারে?
আনন্দবাজারের উত্তর: তদন্তের কাজ এখনও চলছে। রিপোর্ট বার হতে হতে অগস্ট-সেপ্টেম্বর হয়ে যেতে পারে। তবে বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভার আগেই রায় বেরোবে ধরে নেওয়া যায়। রায়ের আওতায় থাকছে আইপিএল মহাকর্তা সুন্দর রামনের আচরণ। এখানেও রায় বিস্ফোরক হওয়ার সম্ভাবনা। দ্বিতীয়ত বোর্ডের শাসন ব্যবস্থা ও চালচলন সম্পর্কে খসড়া প্রস্তাব দেওয়া। সুন্দরকে শাস্তি দেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে কমিটির। বোর্ডের ক্ষেত্রে প্রস্তাব দিতে পারে। কার্যকর করতে পারে না। তাতেও মনে করা হচ্ছে, প্রথম রায়ে যে অনমনীয় মনোভাব দেখা গিয়েছে, তাতে সেপ্টেম্বরে বোর্ড কর্তাদের কপালে নতুন ভাঁজ পড়তে পারে।
(বিভিন্ন আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথার ভিত্তিতে)