আগমন: এ বার প্রতিপক্ষ মোহনবাগান। বুধবার দুপুরে কলকাতা বিমানবন্দরে নাওরেম। ছবি: সুমন বল্লভ
নাঙ্গাম্বা নাওরেমের বিস্ময়কর গোল মঙ্গলবার রাতে দেখার পর মোহনবাগানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া! ইন্ডিয়ান অ্যারোজের সুপার সাবের গোলকে বাহবা দেওয়ার পর শিলং লাজংয়ের রক্ষণের দুর্দশার দিকেও আঙুল তুলছে সবুজ-মেরুন শিবির।
মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই নাওরেম টিম অ্যারোজের মুখোমুখি হবেন কিংসলে ওবুমেনেমেরা। তার আগে টিমের কোচ সঞ্জয় সেন বললেন, ‘‘এ রকম গোল একজন ফুটবলার তাঁর জীবনে কমই করতে পারে। দু’একবার করতে পারে একজন ফুটবলার। তা সত্ত্বেও নাওরেমকে সব রকম কৃতিত্ব দিয়েও বলব, শিলং লাজংয়ের রক্ষণকে দেখে অবাক লাগছিল। কেউ তাড়া করল না বা একবারও আটকালো না! বিদেশি ডিফেন্ডাররা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে গেল। অ্যারোজের গোলকিপার মনে হয় গোটা চারেক বল ধরেছে পুরো ম্যাচে। এত খারাপ শিলংকে খেলতে দেখিনি।’’
আর লুইস নর্টন দ্য মাতোসের দলকে দেখে সঞ্জয়ের সহকারী শঙ্করলাল চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার দেখা ভারতীয় ফুটবলে সেরা গোল নাওরেমেরটা। এই টিমটা ইউরোপ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু ম্যাচ খেলেছে। তার সুফল পাচ্ছে এখন।’’ আর সবুজ-মেরুনের সবচেয়ে সিনিয়র ফুটবলার শিল্টন পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গোলটা দুর্দান্ত। লিওনেল মেসির মতো। অ্যাকাডেমির ছেলেরা বরাবরই সাহসী হয়। সে রকম সাহস নিয়েই ছ’জনকে ড্রিবল করে গোলটা করেছে নাওরেম।’’
যে শিলং-কে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ০-৩ হারিয়েছে, তাদের হারাতে পারেননি সনে নর্দেরা। সে জন্যই সবুজ-মেরুন শিবির অবাক। কিছুটা হলেও চিন্তিতও। বুধবার বিকেলে যুবভারতী স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে অনুশীলনের আগে ও পরে পুরো টিমকে সতর্ক করে দিয়েছেন সঞ্জয়। এই বলে যে, ‘‘একজন ভাল বিদেশি কোচের কাছে দীর্ঘদিন রয়েছে টিমটা। কোনও বিদেশি ফুটবলার ছাড়াই দুটো ম্যাচ জিতেছে। ওদের হারানোর মতো কিছু নেই। আর নেই বলেই ওরা আমাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপাবে। সতর্ক থাকতে হবে।’’
আই লিগে ঘরের মাঠে সঞ্জয় তাঁর অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষত রাখলেও মোহনবাগান জেতার রাস্তায় ফিরতেই পারছে না। পাঁচ ম্যাচের তিনটেতেই ড্র। সে জন্যই বেশ চাপে রয়েছেন দিপান্দা ডিকারা। ইস্টবেঙ্গল পরপর চার ম্যাচ জিতে যাওয়ায় সেই চাপ আরও বেড়েছে। শুক্রবার চোটের জন্য সনি নর্দে খেলতে পারছেন না। তবে কিংসলে ফিরছেন রক্ষণে। সনির জায়গায় নিখিল কদম শুরু করতে পারেন। মোহনবাগান কোচ বলছিলেন, ‘‘খেতাব পেতে হলে জয়ে ফিরতে হবে। লিগে অঘটন ঘটবেই। এই তো মিনার্ভা পঞ্জাবকে হারিয়ে দিল আইজল। মিনার্ভা তো অপরাজিত ছিল এত দিন।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘তিনটে ড্র করেছি বলে খেতাব থেকে ছিটকে যাইনি। তবে খেতাব পেতে হলে জিততে হবে।’’
আই লিগের ইতিহাসে প্রথম বার নিজেদের মাঠে শুক্রবার সন্ধ্যায় খেলবে মোহনবাগান। ফেডারেশনের অনুমতি পাওয়ার পর পুরো মাঠের চেহারাটাই বদলে ফেলা হয়েছে। বিপক্ষ টিমের ড্রেসিংরুম থেকে রেফারিদের ঘর, ডোপ টেস্টের ঘর থেকে রিজার্ভ বেঞ্চ—সবই নতুন করে তৈরি হয়ে গিয়েছে। যুবভারতীর তুলনায় মোহনবাগান মাঠ ছোট। ফলে উইং প্লে আটকে যেতে পারে। গোল করার রাস্তা খুঁজতে হবে সেটা ফ্রি-কিক এবং কর্নার থেকে। সে কথা ভেবেই অনুশীলন করিয়েছেন মোহনবাগান কোচ। তবে বলে দিয়েছেন, ‘‘মাঠ কোনও সমস্যা নয়। এই মাঠে তো কলকাতা লিগের ম্যাচে জিতেছি। আই লিগে জিতব না কেন?’’