Ranji Trophy

লড়ছে ওড়িশা, শেষ এক ঘণ্টায় ফিরল বাংলা

সকালের এক ঘণ্টায় যদিও কিছুটা সাহায্য পান ওড়িশার পেসাররা। শাহবাজ আহমেদ যে বলে ফিরে যান, সেটাই দিনের সেরা বল।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৪১
Share:

চ্যালেঞ্জ: শুরুর দু’ঘণ্টাকে কাজে লাগাতে হবে ঈশানকে। ফাইল চিত্র  

ভাগ্যিস নিরপেক্ষ কিউরেটর এল প্রশান্ত বাড়ি চলে গিয়েছেন। না হলে লজ্জায় আর মুখ ঢাকতে পারতেন না। ম্যাচের আগের দিন বাংলা শিবিরকে বলেছিলেন, উইকেট থেকে প্রচুর সাহায্য পাবেন পেসাররা। কাঁধের জোর দিয়ে বল করলে, বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের কাজ কঠিন হয়ে যাবে।

Advertisement

কিন্তু কোথায় বাউন্স? কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় দিন ড্রিমস ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাইশ গজে হাঁটুর উপরে বল উঠছে না। ঈশান পোড়েল, মুকেশ কুমাররা বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করতে নাজেহাল হয়ে পড়লেন।

সকালের এক ঘণ্টায় যদিও কিছুটা সাহায্য পান ওড়িশার পেসাররা। শাহবাজ আহমেদ যে বলে ফিরে যান, সেটাই দিনের সেরা বল। সূর্যকান্ত প্রধানের ভিতরে আসা ডেলিভারি ব্যাট নামানোর আগেই আছড়ে পড়ে স্টাম্পে। ৮২ রানে শেষ হয় তাঁর ইনিংস। দাঁড়াতে পারেননি বাংলার নীচের দিকের ব্যাটসম্যানেরাও। অনুষ্টুপ মজুমদারকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ তাঁরা। সকালের আর্দ্রতা ব্যবহার করে চার উইকেট নিয়ে ইনিংস শেষ করেন ওড়িশার অভিজ্ঞ পেসার বসন্ত মোহান্তি। অনুষ্টুপ যদিও রঞ্জিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেললেন। ১৫৭ রান করেন তিনি। ৩৩২ রানে শেষ হয় বাংলার ইনিংস।

Advertisement

জবাবে শুরু থেকে পেসারদের বিরুদ্ধে অতি সাবধানী নীতি নিয়ে ইনিংস শুরু করে ওড়িশা। দশ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন। নীলকণ্ঠ দাসের সুইং অনুরাগ সারেঙ্গির ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় শ্রীবৎস গোস্বামীর হাতে। তার পর থেকে হতাশা গ্রাস করে বাংলা শিবিরে। সমস্ত চেষ্টাই বিফলে যেতে শুরু করে। ব্যাটের মাঝখান দিয়ে খেলে চলেন বাঁ-হাতি দেবাশিস সামন্তরায় ও শান্তনু মিশ্র।

কিন্তু এতটাই ধীর গতিতে তাঁরা খেলছিলেন যে, ৪৪ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৮৮-১। লাঞ্চ থেকে চা বিরতি পর্যন্ত কোনও উইকেট পড়েনি। রানও সে রকম হয়নি। লাঞ্চের সময় ওড়িশার রান ছিল মাত্র ২০! চা বিরতির সময় ৮৮-১। ২৫ ওভার ব্যাট করে মাত্র ৬৮ রান করে এই জুটি। শেষ সেশনে রানের গতি বাড়াতে শুরু করে ওড়িশা। বাংলার ড্রেসিংরুম দেখে এক বারও মনে হয়নি কেউ ভেঙে পড়বেন। কোচ অরুণ লাল এবং স্পিন উপদেষ্টা উৎপল চট্টোপাধ্যায় চেঁচিয়ে বলতে থাকেন, ‘‘হতাশ হওয়ার কোনও জায়গা নেই। বিপক্ষকে তোদের উপরে চাপতে দিবি না। চালিয়ে যা।’’

এই উৎসাহই টনিকের মতো কাজ করেছে। শেষ এক ঘণ্টায় পুরো অঙ্ক বদলে যায়। নীলকণ্ঠ দাসই ১২৫ রানের জুটি ভাঙেন তাঁর সুইংয়ের সাহায্যে। ১৩৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে তাদের। ৬৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান দেবাশিস। শান্তনু তখনও ক্রিজে। কিন্তু বাংলার ‘ম্যান উইথ মিদাস টাচ’ শাহবাজ আহমেদের বিস্ময় ডেলিভারি ফিরিয়ে দেয় তাঁকে। মিডল স্টাম্পের উপর থেকে বল সামান্য ঘুরে অফস্টাম্পে চুমু খেয়ে চলে যায়। যা ইঙ্গিত, তৃতীয় দিনের শেষ থেকে বল ঘুরতে শুরু করবে। দিনের শেষ উইকেট নেন ঈশান পোড়েল। তাঁর বাউন্সার সামলাতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান গোবিন্দ পোদ্দার। গ্লাভসে লেগে তা চলে যায় স্লিপে। চার উইকেট হারিয়ে ওড়িশার রান ১৫১। বাংলার চেয়ে এখনও ১৮১ রানে পিছিয়ে।

শনিবার সকালের এক ঘণ্টা কাজে লাগাতে হবে পেসারদের। পিচের সামান্য আর্দ্রতা কাজে লাগিয়ে বিপক্ষকে দ্রুত অলআউট করাই এখন লক্ষ্য। সব চেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বিপ্লব সামন্তরায় ব্যাট করতে আসেননি। অধিনায়ক শুভ্রাংশু সেনাপতিও রয়েছেন। তাই শনিবারের সকাল ঈশানদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

কোচ অরুণ লাল যদিও আত্মবিশ্বাসী, ‘‘এই পরিস্থিতি থেকে পিছনোর জায়গা নেই। এটা ঠিক, আমরা পঞ্চাশ রান কম করেছি। কিন্তু বোলারদের পারফরম্যান্স শিবিরের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। বলও ঘুরতে শুরু করেছে। কটক থেকে হতাশা নিয়ে বাংলায় ফেরা যাবে না।’’ যোগ করেন, ‘‘এই পিচে প্রথম দিনের এক ঘণ্টাই বোলারদের জন্য কিছুটা সাহায্য ছিল। তার পর থেকে বল নড়াচড়াই করেনি। আজ আমরা যে সময় বোলিং করেছি, তখন চড়া রোদ। হাওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আশা করি শনিবার সকালে একই পরিস্থিতি থাকবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement