বিজয়ী: টাটা স্টিল ২৫-কে দৌড়ে পুরুষদের বিভাগে জয়ের পরে উগান্ডার জোশুয়া চেপতেগেই। ছবি: পিটিআই।
টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫-কে (২৫ কিলোমিটার) দৌড়ে পুরুষদের বিভাগে যাঁকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল, সেই উগান্ডার জোশুয়া চেপতেগেই নিজের সুনাম বজায় রাখলেন। তিনি ছিলেন পুরুষদের বিভাগের প্রধান আকর্ষণ। দৌড়ে ৫০০০ মিটার ও ১০০০০ মিটারে তাঁর বিশ্বরেকর্ড রয়েছে, অলিম্পিক্সে দু’বার সোনা জিতেছেন। এক বার দৌড় শুরু করার পরে তিনি আর পিছনে ফিরে তাকাননি। ১ ঘণ্টা ১১ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে তিনি ২৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করেন।
জয়ের পরে তিনি বলেছেন, “আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ। বিশ্বখ্যাত অ্যাথলিটদের সঙ্গে দৌড়নোয় রোমাঞ্চিত। আমরা সবাই সবাইকে স্বপ্নপূরণে সাহায্য করব।” তাঁর সংযোজন, “রেকর্ড গড়ার চেয়ে জয়ই আমার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়। বেঙ্গালুরু ও দিল্লিতে জিতেছি। কলকাতায় জিতেও দারুণ লাগছে। এই পরিবেশ দেখে মুগ্ধ। এত মানুষের যোগদান প্রতিযোগিতাকে আরও সাফল্যের দিকে এগিয়ে দিয়েছে। বিশ্বমানের অ্যাথলিটদের হারিয়ে জয় পাওয়া আমাকে আগামী দিনের ম্যারাথনের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস জোগাবে।”
রবিবার ভোরে তখন রেড রোডে ভাল করে আলো ফোটেনি। শহরের ব্যস্ততা, কোলাহল তখনও ব্যস্ততার তুঙ্গে পৌঁছয়নি। কিন্তু সেই জায়গা হাজার হাজার মানুষের কলরবে মুখরিত। টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫-কে (২৫ কিলোমিটার) উপলক্ষে তখন শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্রে প্রায় তেইশ হাজার অ্যাথলিট জড়ো হয়েছেন। ভারতের অন্যতম বিখ্যাত দৌড়ের দশম সংস্করণে তিলোত্তমায় তৈরি হল একাধিক নজিরও।
নামীদামি অ্যাথলিট থেকে প্রথম বার দৌড়তে আসা, তরুণ তুর্কি থেকে ষাটোর্ধ্ব মানুষ— সকলেই কুয়াশা চিরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সামনে। বিশেষ করে মহিলা অ্যাথলিটদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। শুধু সংখ্যাতেই নয়, উৎসাহতেও তাঁরা পুরুষদের তুলনায় কিছুমাত্র কম ছিলেন না।
মেয়েদের বিভাগে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে প্রথম হয়েছেন ইথিওপিয়ার দেজিতু আজ়িমেরো। তিনি শেষ করেন ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড সময়ে। এই নিয়ে কলকাতায় তৃতীয় বার দৌড়ে অংশ নিলেন তিনি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন সুতুমে আসেফা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি সময় নিয়েছেন ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট ২৮ সেকেন্ড।
ভারতীয় এলিট বিভাগেও রেকর্ড গড়ে চ্যাম্পিয়ন হন গুলবীর সিংহ। ২০২৪ সালে তিনি শেষ করেছিলেন ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময়ে। রবিবার শেষ করেন ১ ঘণ্টা ১২ মিনিট ৬ সেকেন্ড সময়ে। জয়ের পরে তিনি বলেছেন, “নিয়মিত পরিশ্রম ও ধারাবাহিকতার ফলেই নতুন রেকর্ড তৈরি হয়। আমি দারুণ খুশি। এই পরিবেশ দেখে মুগ্ধ।” মেয়েদের বিভাগে রেকর্ড গড়ে জিতেছেন সীমা।
আকর্ষণ: ম্যারাথনের প্রধান অতিথি বেদনারেক। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর টোকিয়ো ও প্যারিস অলিম্পিক্সে রুপোজয়ী কেনি বেদনারেক। শীতের সকালে প্রতিযোগীদের এই উৎসাহ তাঁকেও আবেগপ্রবণ করে তুলেছিল। তিনি বলেছেন, “কলকাতায় শীতের ভোরে এই দৌড় নিয়ে উৎসাহ দেখে আমি রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। এই উদ্যাপন, মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমার ভালবাসাকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় অ্যাথলিটদের প্রতিভা নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই। আগামী কয়েক বছরে ভারত থেকে আরও বেশি অ্যাথলিট অলিম্পিক্সে প্রতিনিধিত্ব করবে ও পদক আনবে। সবার আগে প্রয়োজন পরিশ্রম, সঠিক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার শীর্ষে আরোহণ। আশা করি বিশ্বমঞ্চে আরও বেশি ভারতীয় প্রতিনিধিকে দেখতে পাব।”
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে