এখনও কমেনি যন্ত্রণা, শহরে এসে বললেন ঝুলন

অভিভাবকদের প্রতি তাঁর অনুরোধ, ‘‘প্লিজ, প্লিজ, ছেলেমেয়েদের মাঠে আসতে দিন। পেশাগত ভাবে খেলায় আসার দরকার নেই। যত মাঠে আসবে, পড়াশোনারই উপকার হবে।’’ খেললে শরীর ভাল হবে, একাগ্রতা বাড়বে। তাতে আখেরে পড়াশোনা ভাল হবে বলে তাঁর মত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫১
Share:

সম্মান: ঝুলন গোস্বামীকে সংবর্ধনা জানাচ্ছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শুক্রবার শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

সারা দেশ তাঁদের সংবর্ধনা দিচ্ছে। চা পানে ডেকে উৎসাহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীও। কিন্তু কোনওকিছুই বিশ্বকাপের হারের যন্ত্রণাকে কমাতে পারছে না। শুক্রবার শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুরসভার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথাই জানালেন ঝুলন গোস্বামী।

Advertisement

ঝুলন বলেন, ‘‘ওয়ার্ল্ড কাপে হারের যন্ত্রণাটা এখনও যায়নি। যত দিন না আবার এ রকম ফাইনালে উঠে জিততে পারছি ততদিন যাবেও না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখনও ঘুমোতে গেলে মনে হয় এত কাছে গিয়েও কী করে অঘটন ঘটল?’’ ফাইনালে হেরে যাওয়াটা দুঃস্বপ্নের মতো বলেই জানিয়েছেন তিনি।

অভিভাবকদের প্রতি তাঁর অনুরোধ, ‘‘প্লিজ, প্লিজ, ছেলেমেয়েদের মাঠে আসতে দিন। পেশাগত ভাবে খেলায় আসার দরকার নেই। যত মাঠে আসবে, পড়াশোনারই উপকার হবে।’’ খেললে শরীর ভাল হবে, একাগ্রতা বাড়বে। তাতে আখেরে পড়াশোনা ভাল হবে বলে তাঁর মত। নিজের কথা বলতে গিয়ে ঝুলন জানান, বাড়ির লোকেরা তাঁকে বলতেন পড়শানো না করলে কেউ তাঁর কথা শুনবে না, খেতে দেবে না, অটোগ্রাফ নেবে না। তাই বাড়ির লোককে দেখানোর

Advertisement

জন্য খেলেই কেরিয়ার করার জেদ হয়েছিল তাঁর।

শুক্রবার শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের হাত থেকে সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ঝুলন। এই অনুষ্ঠানেই সম্প্রতি সাঁতরে ইংলিশ চ্যানেল পার হওয়া সায়নী দাসকে এবং এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জয়ী জলপাইগুড়ি মেয়ে স্বপ্না বর্মনকে সংবর্ধনা জানানো হল। বন্যা দুর্গতদের পাশে থাকতে ও রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গি নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন হতে অনুরোধ করেন ঝুলন। শহরকে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত রাখা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বানে পুরসভার তৈরি প্লেক্সে সই করেন ঝুলন, স্বপ্না, সায়নীরা। পরিকাঠামোর অভাবের মধ্যেই কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পার হতে হয়েছে তা বলেন সায়নী।

মেয়রের প্রশাংসা করে ঝুলন জানান, ‘‘১২ বছর ধরে ওনার সঙ্গে পরিচয়। যখন খেলে উঠে আসছি তখন কোনও কিছুর জন্য তিনি এসএমএস পাঠিয়ে উৎসাহ দিতেন।’’ এ দিন মঞ্চে শহরের বাসিন্দা মূক ও বধির টেবল টেনিস খেলোয়াড় পলি সাহা এবং সুরভি ঘোষদেরও সংবর্ধনা জানানো হয়। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ, রেফারি অ্যান্ড অ্যাম্পায়ার অ্যাসোসিয়েশন, শহরের বিভিন্ন ক্লাব, ক্রীড়া সংগঠনের তরফেও উপহার তুলে দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সঙ্গেই আয়োজন করা হয়েছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সাধারণ সভা। বস্তুত ন্যাশনাল আর্বান লাইভলিহুড মিশনের অধীনে ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ প্রকল্পের অর্থেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ব্যাঙ্কের ক্রেডিট অ্যাকাউন্টের চেকবই, পাসবই ঝুলন, স্বপ্নাদের হাত দিয়ে সদস্যাদের তুলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন