যুযুধান: পেপ বনাম মোরিনহো দ্বৈরথই আকর্ষণের কেন্দ্রে । —ফাইল চিত্র।
মরসুম শুরুতে সকলে ভেবেছিল, দুই চাণক্যের দ্বৈরথই ঠিক করে দেবে কাদের ভাগ্যে ইপিএল আছে। কে জানত, সবচেয়ে হেভিওয়েট দুই কোচকে খেতাবি যুদ্ধ ছেড়ে প্রথম চারের মধ্যে থাকার জন্য লড়তে হবে! এখন আর ট্রফি নয়, দুই মহাতারকা কোচেরই লক্ষ্য, টেবলে প্রথম চারের মধ্যে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জন করা।
আজ, বৃহস্পতিবার, এতিহাদে ফের মুখোমুখি দু’জনে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জোসে মোরিনহো এবং ম্যাঞ্চেস্টার সিটির পেপ গুয়ার্দিওলা। এমনিতেই ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি মানে ফুটবলের সেরা দ্বৈরথের একটি। তার উপর দুই যুযুধান কোচের লড়াইয়ের তিক্ত ইতিহাস রয়েছে। যখন যেখানে একে অন্যের সংস্পর্শে এসেছে ফুটবল কোচিংয়ের এই দুই চকমকি পাথর, ঠোকাঠুকি হয়ে আগুন উৎপন্ন হয়েছে। এতিহাদে ফের আগুনের ফুলকি ওড়ার কথা। তা সে যতই দুই দল ছিটকে যাক খেতাবি যুদ্ধ থেকে।
দ্বৈরথের আগের খবর অবশ্যই দু’জনের কাউকে স্বস্তি দিচ্ছে না। মোরিনহোর ম্যান ইউ চোট-আঘাতে জর্জরিত। আগেই তারা হারিয়েছে জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ, মার্কোস রোহো-কে। নেই খুয়ান মাতাও। বুধবার প্রাক-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মোরিনহো জানিয়ে দিলেন, পল পোগবাও খেলতে পারবেন না। ম্যান সিটি তেমনই পাচ্ছে না দাভিদ সিলভা-কে। নতুন তারকা গ্যাব্রিয়েল জেসুস পুরোপুরি সুস্থ হননি এখনও। গুয়ার্দিওলার জন্য সুখবর, তাঁর প্রধান গোল স্কোরার সের্জিও আগুয়েরো সেরে উঠেছেন। পেপ ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগুয়েরো এবং জেসুস-কে একসঙ্গে খেলালেও খেলাতে পারেন। কিন্তু সেটা নির্ভর করবে তিনি কোন পদ্ধতিতে দলকে খেলাতে চাইছেন, তার উপর।
এই মুহূর্তে গুয়ার্দিওলার সিটি রয়েছে লিগ টেবলের চার নম্বরে। ৩২ ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট। মোরিনহোর ম্যান ইউ এক পয়েন্ট কম নিয়ে পাঁচে। বৃহস্পতিবার যারা জিতবে, তারা খেতাবি যুদ্ধে ফিরে আসতে পারবে না। কিন্তু প্রথম চারে শেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার ব্যাপারে এগিয়ে যাবে। ম্যান ইউ এই জায়গায় কিছুটা সুবিধেজনক অবস্থায়। ইপিএল টেবলে প্রথম চারের মধ্যে না থেকেও তারা ইউরোপা লিগ জিতেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
বার্সেলোনায় কোচিং জীবন শুরু করা গুয়ার্দিওলার কেরিয়ারে কখনও এমন সন্ধিক্ষণ আসেনি, যখন গোটা মরসুমে তিনি একটাও ট্রফি জেতেননি। বায়ার্ন মিউনিখে থাকতেও তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারেননি। কিন্তু বুন্দেশলিগায় তাঁর দল ছিল অবিসংবাদী এক নম্বর। ইপিএলে এসে যদি প্রথম চারের মধ্যেও না থাকতে পারেন, তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠতে পারে। মোরিনহোও একই রকম চাপে। গুয়ার্দিওলার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত দ্বৈরথ নিয়েও ভাবিত নন তিনি। বলে দিয়েছেন, ‘‘প্রথম চারের মধ্যে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারলাম কি না, সেটাই আসল।’’ গত ১৮টি সাক্ষাতে পেপের বিরুদ্ধে মাত্র চার বার জিতেছেন জোসে। এ বারে টানা ২৩ ম্যাচ ধরে অপরাজিত মোরিনহোর ইউনাইটেড। সেই মনস্তাত্ত্বিক সুবিধে নেওয়ার মতো সুস্থ দল পাবেন কি না, সেটাই দেখার।