‘পিসি’ কিন্তু ওর প্রাপ্য কৃতিত্ব পাচ্ছে না

সারা সপ্তাহ ধরে যা ঘুরতে হয়েছে আমাদের, তাতে ক্লান্তি আসারই কথা। বুধবার কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমাদের ড্রেসিংরুমে কিছু অবসন্ন শরীর দেখে তাই অবাক হইনি।

Advertisement

গৌতম গম্ভীর

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০৪:১৮
Share:

সারা সপ্তাহ ধরে যা ঘুরতে হয়েছে আমাদের, তাতে ক্লান্তি আসারই কথা। বুধবার কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমাদের ড্রেসিংরুমে কিছু অবসন্ন শরীর দেখে তাই অবাক হইনি। কিন্তু দলের সবচেয়ে ফিট ছেলেটাও যখন এগিয়ে এসে ক্লাম্তির নালিশ করে, তখন ক্যাপ্টেন তো নার্ভাস হবেই।

Advertisement

তা সত্ত্বেও আমাদের ছেলেরা সে দিন মাঠে নিজেদের লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে যা লড়াই করল, তা বলা যে কোনও ক্যাপ্টেনের কাছে বেশ গর্বের ব্যাপার। এই ম্যাচে তো শুধু আমাদের বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হয়নি। শারীরিক, মানসিক ও আবেগের চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধেও ছেলেদের লড়তে হয়েছে।

কলকাতার আবহাওয়া বেশ আর্দ্র হলে কী হবে, সন্ধ্যায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে অন্তত সহ্য করা যাচ্ছে। বুধবারও আবহাওয়া সে রকমই ছিল। ম্যাচের পরিস্থিতির চাপের সঙ্গে আর্দ্রতা মিশে আমাদের যেন আরও বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছিল। আর সেই চাপ থেকে আরাম দেওয়ার জন্যই যেন মাঝে মাঝে ঠান্ডা হাওয়া ভেসে আসছিল গঙ্গার দিক থেকে। ঘরের মাঠে ফিরে এসে আরসিবি-র বিরুদ্ধে জয়ের ছন্দটা হারাতে চাইছিলাম না। আর পুরো দলটা ভাল খেলায় আমরা ফের লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠে পড়েছি।

Advertisement

আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান সুপারম্যান ‘রাসেল দ্য মাসল’-এর ট্যাঙ্কে যেন সবসময়ই অতিরিক্ত জ্বালানি মজুত থাকে। বুধবার ওর শুরু ও শেষের বিস্ফোরণটাই আমাদের জয়ের রাস্তায় এনে দেয়। অক্ষর পটেলকে যে ভাবে রান আউটটা করল ও, তার পর আর নিশ্চয়ই কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে, ও আসলে জাত অ্যাথলিট।

তবে আমার মনে হয়, আমাদের পীযূষ চাওলা তার প্রাপ্য কৃতিত্ব পাচ্ছে না। দিল্লির অমিত মিশ্রর মতো পীযূষও কিন্তু যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বোলিংটা করছে। রীতিমতো শৈল্পিক বোলিং। ‘পিসি’-র আগ্রাসনটাও আমার খুব ভাল লাগে। যার ফলে শুধু ইকনমি রেটে উন্নতি নয়, উইকেট নেওয়ার প্রবণতাও ওর মধ্যে যথেষ্ট। এ বছর পীযূষ শুধু ওর গুগলির উপর নির্ভর করে নেই। বোলিংয়ে বৈচিত্র বাড়াতে টপ স্পিনার আর ফ্লিপারও দিচ্ছে। বুধবার তো ম্যাক্সওয়েলকে আউট করে ও-ই খেলাটা পুরো ঘুরিয়ে দিল। আমরা অনেকেই লেগস্পিনের শিল্প নিয়ে রোমাঞ্চিত হই। কিন্তু এই ক্রমশ ছোট হয়ে আসা বাউন্ডারি ও বেড়ে চলা ব্যাটের ব্লেডের যুগে কোনও স্পিনারের রাস্তাই কিন্তু এখন আর মসৃণ নেই।

কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের জন্য খারাপ লাগছে। লিগ টেবিলে সবার নীচে ওরা। ওদের দলটা কিন্তু মোটেই সে রকম নয়। বরং অনেক ভাল দল ওরা। বিজয়, সাহা, মিলার, ম্যাক্সওয়েলদের ব্যাটিং লাইন-আপ যে কোনও রান তাড়া করে জিতিয়ে দিতে পারে। ওদের বোলিংটাও যে খারাপ নয়, তা তো বুধবার পাঠান আর রাসেলকে আটকে দেওয়া দেখেই বোঝা গিয়েছে। তবে আমার মনে হচ্ছে মিলারকে সরিয়ে বিজয়কে ক্যাপ্টেন করার সিদ্ধান্তটা ওদের দলে একটা আতঙ্ক তৈরি করে দিয়েছে। পরের ম্যাচগুলোর জন্য ওদের প্রতি শুভেচ্ছা রইল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন