শুক্রবার বিকেলে পুলিশি ঘেরাটোপে সভা মোহনবাগানে

সচিবের ডাকা সরকারি কর্মসমিতির সভা হবে ক্লাব-তাঁবুর ভিতর, বাইরের লনে উপস্থিত থাকবেন সহ সচিব, অর্থ সচিব-সহ  পদত্যাগী সদস্যরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০৯:১৫
Share:

ক্লাবের একশো সাতাশ বছরের ইতিহাসে কখনও যা হয়নি, শুক্রবার বিকেলে সম্ভবত তা-ই হতে চলেছে মোহনবাগানে। পরিস্থিতি যা, তাতে একসঙ্গে আজ দু’টি সভা হতে পারে ক্লাবে। একটি ক্লাব-তাঁবুর ভিতরে, অন্যটি ক্লাব লনে।

Advertisement

সচিবের ডাকা সরকারি কর্মসমিতির সভা হবে ক্লাব-তাঁবুর ভিতর, বাইরের লনে উপস্থিত থাকবেন সহ সচিব, অর্থ সচিব-সহ পদত্যাগী সদস্যরা। এবং মজার ব্যাপার হল, সরকারি সভায় সাত জন উপস্থিত থাকলে তাঁদের উপর চাপ বাড়াতে বাইরে প্রায় দ্বিগুণ কর্মসমিতির সদস্য উপস্থিত করানোর চেষ্টা চলছে। অবস্থা এতটাই উত্তেজক যে, সভার সময় যাতে কোনও গণ্ডগোল না হয়, সে জন্য দুপুর থেকেই পুলিশ মোতায়েন থাকবে ক্লাবে। সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, ‘‘বাইরের কেউ এসে যাতে ক্লাবের পরিবেশ নষ্ট না করে, সে জন্য পুলিশকে জানিয়ে রাখা হয়েছে।’’

প্রয়াত সচিব ধীরেন দে’কে তাঁবুতে হেনস্থা, সুব্রত ভট্টাচার্যের মতো সর্বাধিক ট্রফি দেওয়া ফুটবলারকে ক্লাব লনে নিগ্রহ বা অন্য নানা ঘটনায় পুলিশ বহু বার এসেছে মোহনবাগান তাঁবুতে। কিন্তু পুলিশি নিরাপত্তায় কর্মসমিতির সভা কখনও হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না ক্লাবের কোনও প্রবীণ সদস্যই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার, সভার আগের দিন প্রায় কোনও কর্তাই ক্লাবমুখো হননি। দু’পক্ষই একে অপরকে কী ভাবে বিপদে ফেলা যায়, তাঁর ঘুঁটি সাজিয়েছেন। এই সুযোগে সবুজ-মেরুন সমর্থক রাজ্যের শাসক দলের মন্ত্রী, মেয়র, নেতাদের নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। আজ কর্মসমিতির সভায় আলোচনার প্রধান তিনটি বিষয় রাখা হয়েছে, এক) ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দুই) পদত্যাগী সদস্যদের চিঠি নিয়ে আলোচনা। তিন) ফুটবলারদের গত মরসুমের বকেয়া কী ভাবে মেটানো হবে ও সামনের মরসুমের টাকা কী ভাবে আসবে তা নিয়ে আলোচনা।

ক্লাবের নির্বাচন হওয়ার কথা এই মাসেই। গত তিন বছর মোহনবাগানে কোনও ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। ঠিক নির্বাচনের মাসে কেন ওই পদাধিকারী নিয়োগ হচ্ছে? সচিব বললেন, ‘‘যা করার আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করেই করছি। আর এত দিন সবাই এটা করতে দেয়নি বলে হয়নি।’’ যা শুনে পদত্যাগী অর্থ সচিব দেবাশিস দত্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সচিবের হাতেই তো সব ক্ষমতা। উনি চাইলেই হত।’’ শোনা যাচ্ছে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে হাওড়ার এক মন্ত্রী, মেয়র এবং পুরনো একজন ভাইস প্রেসিডেন্টকে বসাতে চাইছেন সচিব। যা আটকাতে তৎপর তাঁর বিরোধীরা। যা থেকে স্পষ্ট, নির্বাচনের বছরে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও নারাজ।

পদত্যাগী ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় এ দিন ফের বললেন, ‘‘নির্বাচন তো হবেই। ফুটবল দলটা যাতে সফল হয় সেই চেষ্টা করুন সচিব।’’ যা শুনে সচিবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দেখুন না কী হয় সভায়।’’ শোনা যাচ্ছে, সামনের মরসুমের একটি স্পনসরের নাম ঘোষণা করে চমক দিতে পারেন সচিব। তবে এত ৈৈঝামেলার মধ্যে সবথেকে বড় প্রশ্ন থাকছে ক্লাব প্রেসিডেন্টকে নিয়ে। তিনি আজ শহরে ফিরে কী ভূমিকা নেন, সেটাই দেখার। আর পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন চুক্তিবদ্ধ ২৫ ফুটবলার। কর্তাদের ঝামেলায় তারাই সবথেকে শঙ্কিত। দু’তিন জন ফুটবলার নাকি ইতিমধ্যেই চুক্তি ভাঙার জন্য ঘনিষ্ঠ ফুটবল কর্তাদের কাছে দরবার করতে শুরু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন