চর্চায়: প্রফুল্ল পটেলের ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন কৌতূহল। ফাইল চিত্র
প্রফুল্ল পটেলের অপসারণ নিয়ে ভিতরে-ভিতরে রাজনৈতিক অঙ্ক কষাকষিও শুরু হয়ে গিয়েছে। এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট পদ থেকে প্রফুল্লকে সরতে বলেছে দিল্লি হাই কোর্ট। একটি জনস্বার্থ মামলার জেরেই এই রায়।
স্বয়ং প্রফুল্ল এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও দেননি। তবে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার পক্ষে বলেই দেওয়া হয়েছে, উচ্চতর আদালতে যাওয়া হবে এই রায়ের বিরুদ্ধে। ফুটবল মহলের বিশ্লেষণ, ফের নির্বাচন হলে প্রফুল্লেরই জিতে আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
শোনা যাচ্ছে, প্রফুল্ল-ঘনিষ্ঠ কয়েক জন তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, আইনি দিক খতিয়ে দেখে সব কিছু বুঝে নিয়ে তবেই সুপ্রিম কোর্টে যাও। এঁদের পরামর্শ, মামলায় টেকনিক্যাল দিক থেকে এগিয়ে থাকলে তবেই উচ্চতর আদালতে যাওয়া ঠিক হবে।
প্রফুল্ল কী করবেন, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও ফুটবলের ‘হট সিট’ নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, আদালতের রায়ের পরে তাদের দিক থেকেও প্রফুল্লকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে অবাক হওয়ার নেই। এ ব্যাপারে তাদের অস্ত্র হতে পারে আদালতে পেশ করা প্রফুল্ল-বিরোধী নথিপত্র এবং ফুটবল ফেডারেশনে তহবিল সংক্রান্ত অভিযোগ। দুর্নীতি নিয়ে যে সব প্রশ্ন উঠেছে, সেটাকে হাতিয়ার করে সরব হতে পারে বিজেপি হাইকম্যান্ড।
ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন এবং তহবিল ঘিরে দুর্নীতি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সে সব পুরনো ফাইল নিয়ে ফের নাড়াচাড়া হতে পারে। দীপক তলোয়ার নামে এক প্রাক্তন আমলার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এনফোর্সমেন্ট দফতর তদন্ত চালাচ্ছে। প্রফুল্লের বিশেষ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তলোয়ার। তিনি ফুটবল বাণিজ্যের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। শোনা যাচ্ছে, বিজেপি উচ্চ নেতৃত্ব নাকি ফুটবল সংস্থায় দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা নিয়েও তদন্ত শুরু করার পক্ষপাতী।
ইউপিএ জমানায় প্রফুল্ল ছিলেন বিজেপি বিরোধী। তখন শরদ পওয়ার এবং তিনি ছিলেন খেলার প্রশাসনে অবিচ্ছেদ্য জুটি। কলকাতায় যে ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়াকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন শরদ পওয়ার, সেই নির্বাচনেও বেশ সক্রিয় ছিলেন প্রফুল্ল। আইপিএলের শুরর দিকেও তাঁকে প্রায়ই দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই প্রফুল্লই বিজেপি জমানায় হয়ে উঠেছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের ‘কাছের লোক’।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি প্রফুল্লের সঙ্গে সেই মধুচন্দ্রিমা শেষ হয়ে গেল অমিত শাহ-দের? রাজনৈতিক মহলের মতে, মহারাষ্ট্র ভোটের আগে প্রফুল্লকে চাপে ফেলার মাধ্যমে এনসিপি-র সঙ্গে দর কষাকষির দরজা খোলা রাখতে চায় বিজেপি।