গত বারের কথা ভাবলে গোলটা মধুর লাগছে: পস্টিগা

তিনি ফুরিয়ে যাননি। তাঁকে আবার মার্কি বানিয়ে ভুল করেনি টিম। শুক্রবার গুয়াহাটিতে এ কথাই যেন প্রমাণ করে দিলেন আটলেটিকো দে কলকাতার হেল্ডার পস্টিগা।

Advertisement

সোহম দে

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১৪
Share:

পস্টিগা-বরণ। গুয়াহাটিতে ১-১ করার পর। -পিটিআই

তিনি ফুরিয়ে যাননি। তাঁকে আবার মার্কি বানিয়ে ভুল করেনি টিম। শুক্রবার গুয়াহাটিতে এ কথাই যেন প্রমাণ করে দিলেন আটলেটিকো দে কলকাতার হেল্ডার পস্টিগা।

Advertisement

দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগিজ স্ট্রাইকার নামতেই এতক্ষণ নড়বড়ে দেখানো আটলেটিকো দলের খোলনলচে যেন বদলে গিয়েছিল শুক্রবার। এটিকে ০-১ পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকে পস্টিগার কাঁধে ভর রেখেই আক্রমণের ঝড় তুলল শেষ পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তবে হেডে অসাধারণ গোল করার পর পস্টিগাকেই কিন্তু সতীর্থদের মতো উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভেসে যেতে দেখা গেল না ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে। টিমমেটদের সঙ্গে হাত মেলানো বা একটু গলা জড়িয়ে ধরা। ব্যাস, ওইটুকুই। হয়তো অভিজ্ঞ পস্টিগা হিসেব করেছিলেন, শুধু সমতা ফেরালেই চলবে না। গুয়াহাটি থেকে তিন পয়েন্ট না নিয়ে ফিরলে বাকি আইএলএলে চাপ বাড়বে এটিকের উপর। তবে মুখাবয়বে অদ্ভুত একটা তৃপ্তির রেখা উঁকি দিচ্ছিল। সচেতন থেকেও সেটা পুরোপুরি গোপন করতে পারলেন না পস্টিগা। ম্যাচের পর মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে বলে গেলেন, ‘‘সেকেন্ড হাফে কোচ কিছু স্ট্র্যাটেজি বদলেছিলেন। সে জন্যই আমরা সাফল্য পেয়েছি। আর নিজে গোল পেয়েছি, টিম জিতেছে, খুশি তো হবই। এই তিন পয়েন্টটা আমাদের ভীষণ দরকার ছিল।’’

গত বছর প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ানের সঙ্গে আইএসএলে তাঁর শেষ গোল করেছিলেন পস্টিগা। তার পর চোট পেয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। পরে ফিরলেও আর নামা হয়নি। এ বছর আবার গোল এ দিনই। চোটের জন্য শেষ চার ম্যাচ মাঠে নামতে পারেননি। যা নিয়ে এত দিন সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল। টিমের মধ্যেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, পস্টিগাকে আবার সই করিয়ে এটিকে কর্তারা ভুল করেছেন। হয়তো এ সব কথা তাঁর কানেও পৌঁছেছিল। এ দিন তাই পস্টিগা বলছিলেন, ‘‘গত বছর চোটের জন্য টিমকে কোনও সাহায্য করতে পারিনি। এ বছরও শুরুতে চোট পেয়ে চার ম্যাচ খেলতে পারিনি। সে জন্য এই গোলটা পেয়ে খুব ভাল লাগছে।’’ সঙ্গে আবার প্রকৃত টিমম্যানের মতো যোগ করলেন, ‘‘বেলেনকোসোর গোলেই আমরা জিতেছি। ডিকার পাসটাও খুব ভাল ছিল। আসলে এই জয়ের পিছনে কারও একার কৃতিত্ব নেই। টিমগেম খেলেছি, তাই জিতেছি।’’

Advertisement

কলকাতার পরের ম্যাচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের এফসি পুণে সিটির বিরুদ্ধে। পুণেয়, ৬ নভেম্বর। হাবাস বনাম মলিনা লড়াইটা যে এই আইএসএলের অন্যতম সেরা আকর্ষণ হতে চলেছে, সেটা স্বীকার করছেন পস্টিগাও। ‘‘হাবাসকে আমরা যেমন জানি, হাবাসও কিন্তু আমাদের সম্পর্কে জানেন। আর পুণে বেশ ভাল টিম। আমার তো মনে হচ্ছে ম্যাচটা ঘিরে উন্মাদনা থাকবে।’’

পস্টিগা ফেরায় আপাতত অবশ্য স্বস্তিতে এটিকে শিবির। দেবজিৎ মজুমদার যেমন বললেন, ‘‘পস্টিগার মতো প্লেয়ার টিমে থাকলে আমাদের শক্তি বেড়ে যায়।’’ সেরেনো আবার বলছেন, ‘‘পস্টিগার জাতই আলাদা। ওর মতো প্লেয়ার গোলে ফেরা মানে টিমের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাওয়া।’’ এমনকী বিপক্ষ নর্থ-ইস্টের কোচ নেলো ভিনগাদাও স্বীকার করে গেলেন, ‘‘পস্টিগার মতো বিশ্বমানের ফুটবলাররা সব সময় সুযোগসন্ধানী হয়। সুযোগ পেলেই সেটা কাজে লাগাতে এরা একটুও ভুল করে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন