ওঝা-দিন্দা। বাংলা যাঁদের মধ্যে দূরত্ব চায় না।
মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে হাইওয়ে উইকেটে যখন হিমশিম খাচ্ছেন বিরাট কোহালিরা, তখন তার প্রায় যমজ উইকেট দেখার পরও মনোজ তিওয়ারির মুখে জয়ের কথা শোনা যাচ্ছিল।
মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট গ্রাউন্ডেও একই রকম পাটা উইকেট। তবু মনোজ তিওয়ারি দল নিয়ে নামার আগে ম্যাচ জেতার কথা বলছিলেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।
কিন্তু প্র্যাকটিসে ওই ঘটনাটাই ম্যাচ শুরুর আগে কিছুটা ধাক্কা দিয়ে গেল বাংলাকে।
ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ দেখে বাংলার বোলাররা এমনিতেই দুশ্চিন্তায়। কিন্তু সেই দুশ্চিন্তার মাত্রা যে এ ভাবে বেড়ে যাবে, তা কে জানত। প্র্যাকটিসের আগে ফুটবল খেলাটা এখন প্রচলিত ব্যাপার। কিন্তু এই ফুটবলে একটা নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, ট্যাকল করা যাবে না। কিন্তু নিয়ম ভেঙে এ দিন অশোক দিন্দা নাকি বারবার কড়া ট্যাকল করছিলেন বলে অভিযোগ। আগুনে ঘি পড়ে একটা ঘটনায়। মাঠে বল বসিয়ে প্রজ্ঞান ওঝার তাতে শট নেওয়ার কথা ছিল। দিন্দা নাকি সেই বলে আগেই শট মেরে দেন আর ওঝার কান ঘেঁষে তা উড়ে যায়। কানে লাগলে মারাত্মক কিছু হতে পারত বলে নাকি তার প্রতিবাদ করেন ওঝা। আর তার জেরেই দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝামেলা বেধে যায়। ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারি যদিও ঘটনাটাকে ‘‘তেমন সিরিয়াস কিছু নয়,’’ বলে উড়িয়ে দেন। বলেন, ‘‘প্র্যাকটিসে ফুটবল খেলার সময় এমন ঝামেলা হয়। পরে তা মিটমাটও হয়ে যায়।’’ তবে দলীয় সূত্রের খবর, এই ঝামেলাটা মিটতে রাত গড়িয়ে যায়। তাও আগুন ধিকিধিকি এখনও জ্বলছে কি না, দলের কেউ তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
বাংলা শিবিরে এই ঝামেলার আগে পর্যন্ত আলোচনা ছিল উইকেট নিয়ে। পাটা উইকেটে বোলারদের কী হাল হতে পারে, এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে। বোলারদের প্র্যাকটিসে মেজাজ হারানোর অন্যতম কারণ কি পিচ নিয়ে চিন্তা? প্রশ্নটা থেকেই গেল। তবে আত্মবিশ্বাসী মনোজ অন্য কথা বলছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাটা উইকেট থেকেও আমাদের বোলাররা উইকেট তুলতে জানে। ওদের উপর ভরসা আছে। তাই আমরা ম্যাচ জেতার কথা ভেবেই নামব। প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার পর এটাই হবে আমাদের লক্ষ্য।’’
তামিলনাড়ুর দীনেশ কার্তিক, অভিনব মুকুন্দ আর বাবা ইন্দ্রজিৎ ছাড়া কারও ব্যাটে তেমন রান নেই। এ দিকে অভিমন্যু ঈশ্বরন, মনোজ তিওয়ারি, সায়নশেখর মণ্ডল, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়— বাংলার সব ব্যাটসম্যানই ফর্মে। ফলে ব্যাটসম্যানদের যুদ্ধে খাতায় কলমে বাংলাই এগিয়ে।
রাজকোটের উইকেট দেখে খুশি দলের ব্যাটসম্যানরা। টস জিতে ব্যাট করে বিপক্ষের উপর বড় রান চাপানোর পরিকল্পনা বাংলা শিবিরে। কিন্তু উল্টোটা হলে কী হবে, এই আশঙ্কা তো থেকেই যাচ্ছে।