প্রথম রাউন্ডে অপ্রত্যাশিত হার সিন্ধুর

সাইনা টুর্নামেন্টের শুরুতেই কঠিন হার্ডল টপকালেও অলিম্পিক্স ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপোজয়ী পিভি সিন্ধু কিন্তু প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে গেলেন বিশ্বের দশ নম্বর চিনের চেন ইউফের কাছে হেরে গিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

বিষাদ: ব্যর্থ হলেন সিন্ধু। ডেনমার্ক ওপেনে। টুইটার

প্রায় দু’বছর পরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্যারোলিনা মারিনকে হারিয়ে আগের মতো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলেন বলে জানালেন লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ী সাইনা নেহওয়াল। যিনি ডেনমার্ক ওপেনের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে স্পেনের তারকা মারিনকে ছিটকে দেন। ৪৬ মিনিটের ম্যাচে সরাসরি জেতার পরে সাইনা বলছেন, গ্লাসগোয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পরেই তিনি উপলব্ধি করেন সেরা খেলোয়াড়দের হারিয়ে বিশ্বের সেরা দশে ফিরে আসতে হলে স্ট্যামিনা বাড়ানোর জন্য তাঁকে আরও পরিশ্রম করতে হবে। সে রকম পরিশ্রম করেই তিনি আগের জায়গায় ফিরে এলেন বলে জানালেন।

Advertisement

সাইনা টুর্নামেন্টের শুরুতেই কঠিন হার্ডল টপকালেও অলিম্পিক্স ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপোজয়ী পিভি সিন্ধু কিন্তু প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে গেলেন বিশ্বের দশ নম্বর চিনের চেন ইউফের কাছে হেরে গিয়ে। ফল ১৭-২১, ২১-২৩। কোরিয়া ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে সিন্ধুর এই নিয়ে পরপর দু’টি বড় টুর্নামেন্টে অপ্রত্যাশিত হার। গত মাসে জাপান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি।

বুধবার ক্যারোলিনা মারিনকে ২২-২০, ২১-১৮-এ হারানোর পরে সাইনা বলেন, ‘‘আমার র‌্যাঙ্কিং যেহেতু এখন ১২, তাই আমাকে যে এখন সব টুর্নামেন্টেই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে খেলতে হবে, তা জানাই ছিল। র‌্যাঙ্কিংয়ে আমার পরে থাকা খেলোয়াড়রা ভাল ড্র পাচ্ছে। অথচ আমার কঠিন ড্র পড়ছে, এটা ভেবে ভয় পেয়ে লাভ নেই। কারণ, সেরা দশের মধ্যে ফিরতে হলে আমাকে কঠিন ম্যাচই জিততে হবে।’’

Advertisement

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পরে তাঁর উপলব্ধির কথা শুনিয়ে সাইনা বলেন, ‘‘তখনই আমি বুঝতে পারি যে আমাকে স্ট্যামিনা বাড়াতে হবে। আমার শটের ধার আরও বাড়াতে হবে। আর পা আর কোমরের নীচের অংশকে আরও সচল করে তুলতে হবে।’’ বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের দেখেই তাঁর এই কথা মনে হয় বলে জানান সাইনা। বলেন, ‘‘(নজোমি) ওকুহারা, ক্যারোলিনা ও সিন্ধুরা যে ভাবে নিজেদের উন্নত করে তুলেছে, যে ভাবে ওরা লম্বা লম্বা র‌্যালি খেলে, আমিও তার কাছাকাছি চলে এসেছি। তবে এখনও আরও উন্নতি করতে হবে আমাকে। পরিশ্রম করতে হবে আরও।’’

দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও বর্তমান ইউরোপ সেরা মারিনের বিরুদ্ধে শেষ পাঁচটি লড়াইয়ের চারটিতেই হারার পরেও সাইনা দমে যাননি এতটুকু। তার ওপর রিও অলিম্পিক্সে হাঁটুর চোটে তাঁর কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। সেই জায়গা থেকে নিজেকে নিঃশব্দে ফিরিয়ে আনলেন ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা। বুধবারের ম্যাচে সাইনা দুটো ব্যাপারে প্রচণ্ড সতর্ক ছিলেন। মারিনকে ম্যাচের গতি ও র‌্যালি নিয়ন্ত্রণ করতে দেবেন না এবং তাঁকে কোনও ভাবেই বেশি ব্যবধান তৈরি করতে দেবেন না। পরিকল্পনা রূপায়ণে সফল সাইনা। সারা ম্যাচে দু-একবারের বেশি এগোতে পারেননি মারিন। তাও দু-এক পয়েন্টের বেশি ব্যবধানে।

তিন বছর বেঙ্গালুরুতে বিমল কুমারের তত্ত্বাবধানে থাকার পরে গোপীচন্দের অ্যাকাডেমিতে ফিরে আসার পরেই তাঁর মধ্যে এই উন্নতি দেখা যায়। এই ব্যাপারে সাইনা বলেন, ‘‘গোপীস্যার ও অন্য কোচিং স্টাফ আমার জন্য একটা পরিকল্পনা তৈরি করে। ওরা আমাকে দেখে বলে, কোর্টে আমার গতি কমে যাচ্ছে। কোর্টে পড়ে গেলে উঠে দাঁড়াতে আমি বেশি সময় নিচ্ছি। বিপক্ষরা এতেই আমাকে পিছিয়ে দিচ্ছে। ওরাই আমাকে বোঝান যে ঠিক কোন কোন জায়গায় আমাকে উন্নতি করতে হবে। নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে, অল আউট না গিয়ে ভাবনাটা আরও স্মার্ট হতে হবে।’’

এ দিকে সাইনার মতো বড় জয় পেলেন ভারতের এইচ এস প্রণয়ও। পুরুষদের সিঙ্গলসে তিনি প্রাক্তন বিশ্বসেরা এবং অলিম্পিক্সে রুপোজয়ী লি চং উই-কে হারান ২১-১৭, ১১-২১, ২১-১৯। চার মাস আগে ইন্দোনেশিয়া সুপার সিরিজেও লি চং-কে হারিয়ে দিয়েছিলেন প্রণয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন