প্রথম ম্যাচে নেই রায়না

সাউদির হুঙ্কারের দিনে প্রকৃতিতে ডুবে কোহালি

বন্ধুরা, এখনই ধর্মশালা পৌঁছলাম। জায়গাটা অবিশ্বাস্য সুন্দর। আমার হোটেলের বাইরেটা যেমন সুন্দর, ভেতরটাও তাই। দাঁড়ান, দেখাই আপনাদের... আমি এর পর জাস্ট এক কাপ কফি নিয়ে বসব। টুইটারের লেখককে ভারতীয় ক্রিকেট এক ডাকে চেনে। চেনে বললেও বোধহয় কম বলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৯
Share:

ধর্মশালার পথে বিমানে তরুণ টিমের সঙ্গে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।

বন্ধুরা, এখনই ধর্মশালা পৌঁছলাম। জায়গাটা অবিশ্বাস্য সুন্দর। আমার হোটেলের বাইরেটা যেমন সুন্দর, ভেতরটাও তাই। দাঁড়ান, দেখাই আপনাদের... আমি এর পর জাস্ট এক কাপ কফি নিয়ে বসব।

Advertisement

টুইটারের লেখককে ভারতীয় ক্রিকেট এক ডাকে চেনে। চেনে বললেও বোধহয় কম বলা হয়। বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠ পরিচয়পত্রই তিনি। তিনি, বিরাট কোহালি। যিনি ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে খেলতে পৌঁছে পারিপার্শ্বিক তো বটেই, নিজের হোটেল নিয়েও মুগ্ধ হয়ে গেলেন!

মুগ্ধ হওয়ারই কথা। ভারতের শৈলশহরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ যখনই হয়, আলোচনার একটা অংশ থাকে ধর্মশালার সৌন্দর্য নিয়ে। ছবির মতো সুন্দর স্টেডিয়াম। পাহাড়ের কোলে আলতো করে বসিয়ে দেওয়া। উপরের নীল আকাশ। সব মিলিয়ে একটা আলাদা মাদকতা তৈরি দেয়। কোহালিও যে সেই একই মোহে আচ্ছন্ন হয়ে পড়বেন, তাতে আর আশ্চর্য কী?

Advertisement

ভারতের টেস্ট অধিনায়ক অবশ্য কয়েক দিন ধরেই ভাল রকম ফুরফুরে মেজাজে আছেন। টেস্ট ক্রিকেটে দেশকে এক নম্বরের সিংহাসনে বসানোর পর একদিনের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। বাড়ির খাবার, পোষ্যের সঙ্গে সময় কাটানোর মুহূর্তগুলো যে কোহালিকে কতটা ঝরঝরে করে রেখেছিল, তা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তাঁর পরের পর টুইট থেকেই পরিষ্কার। তার উপর ধর্মশালা। প্রকৃতির দমবন্ধ করা সৌন্দর্য, কাঠের হোটেল রুম— সব মিলেজুলে যেন বিরাট কোহালির চরিত্রের আর একটা দিকের খোঁজ দিয়ে গেল ধর্মশালা!

ঘটনা হল, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির টিম ইন্ডিয়ার সার্বিক আবহ এতটাও ফুরফুরে নয়। কারণ, আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে ধর্মশালায় শুরু হতে চলা ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারত পাচ্ছে না সুরেশ রায়নাকে। রায়না অসুস্থ, ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত। প্রথম ম্যাচে তিনি পারবেন না। দ্বিতীয়ত, ধর্মশালা উইকেট। এই প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে হচ্ছে ধর্মশালায়। ওয়ান ডে-তে শৈলশহরে বাইশ গজ কেমন ব্যবহার করে, তার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। আপাতত যা খবর, ব্যাটিং ট্র্যাক। পিচে গতি-বাউন্স দু’টোই থাকার সম্ভাবনা।

এবং এই দু’টোর বাইরে আরও একটা কারণ আছে একটু চিন্তায় থাকার। যে কারণের নাম—প্রতিপক্ষ।


ধর্মশালায় পা অনিল কুম্বলেদের। বৃহস্পতিবার।

এমনিতে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে যে ভাবে নিউজিল্যান্ডকে পদপিষ্ট করেছে কোহালির ভারত, তাতে ব্ল্যাক ক্যাপস নিয়ে ভয় পাওয়াটাই আশ্চর্যের। সমালোচনা—তা-ও তো দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের এক কাগজ লিখেছে, টিমের কোচ মাইক হেসনের উচিত ভারতে টিম রেখে নিউজিল্যান্ডে ফিরে আসা! এসে দিন দু’য়েক সময় নিয়ে নিউজিল্যান্ড বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পেশ করা যে, কেন এমন হল? কেন টেস্ট সিরিজে এ ভাবে পর্যদুস্ত হতে হল টিমকে? দশটা প্রশ্নের তালিকা নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সামনে ফেলে দিয়েছে ওই কাগজ। যেখানে টিমের ব্যাটিং বা বোলিং কোচ স্পেশ্যালাইজড কি না বা টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে কেন পনেরো জন খেলিয়ে আদতে তামাশা করা হয়— এ রকম মারাত্মক কিছু প্রশ্ন আছে। কিন্তু তার পরেও নিউজিল্যান্ডকে ওড়ানো যাবে না। মার্টিন গাপ্টিল— ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে তাঁর দশা কী হয়েছিল, সবাই জানে। সেই একই লোকের কিন্তু ওয়ান ডে-তে নামডাক আছে বোলার-নির্যাতনের কারণে। ওয়ান ডে-তে গাপ্টিলের দু’টো সেরা স্কোর হল ২৩৭ নটআউট এবং ১৮৯ নটআউট! ধর্মশালার গতিশীল উইকেটে গাপ্টিলের সুবিধে হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। টিম সাউদি তো আবার প্রচ্ছন্ন হুমকিই দিয়ে রাখলেন।

ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারেননি সাউদি। নিউজিল্যান্ড পেস-আক্রমণের সেরা অস্ত্রকে চোট ছিটকে দিয়েছিল। কিন্তু ওয়ান ডে-তে প্রথম ম্যাচ থেকেই তাঁকে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাউদি নিজেও বলে দিচ্ছেন ফিট।

এক সাক্ষাৎকারে সাউদি বলেছেন, ‘‘আমি ফিট। ভাল ট্রেনিংও চলছে। আমি দেখেছি, টেস্ট সিরিজে কী হয়েছে না হয়েছে। একটা কথা বুঝতে হবে যে, ভারত সফর কখনও সহজ হয় না। পরিবেশ কঠিন থাকে। ওরা খুব ভাল টেস্ট টিমও। তবে আমি বিশ্বাস করি, ওয়ান ডে-তে ও রকম হবে না। টেস্ট সিরিজ যেমন একপেশে হয়েছে, ওয়ান ডে সিরিজ তা হবে না। লড়াই হবে দু’টো টিমে।’’ সোজাসুজি বললে, সাউদি পাল্টা আক্রমণের বারুদ ছড়িয়ে রাখলেন। ছড়াবেনও না কেন? অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ফাইনালিস্ট তাঁরা? বর্তমান ওয়ান ডে র‌্যাঙ্কিংয়েও ভারতের আগে। ভারত চার, নিউজিল্যান্ড তিন। একমাত্র ওয়ান ডে সিরিজ ৪-১ জিতলে তবেই ভারত সাউদিদের বর্তমান পজিশনটা নিতে পারবে।

ছবি: টুইটার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন