শাস্ত্রীয় মত, মোহালির পর এটাই সেরা

ধবন যখন মোহালিতে অভিষেক ঘটাচ্ছেন, কোচ ছিলেন ডানকান ফ্লেচার। কিন্তু শাস্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন মাঠে। কমেন্ট্রি বক্স থেকে সেই ইনিংস দেখে তিনিও উচ্ছ্বসিত ভাবে বলেছিলেন, ভারত আরও এক জন দাপুটে সিংহ পেয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

গল শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৪
Share:

জুটি: শিখর ধবনের সঙ্গে বরাবরই ভাল শাস্ত্রীয় রসায়ন। ফাইল চিত্র

হেড কোচ হিসেবে অফিসে যোগ দিয়েই এমন দুর্দান্ত শুরু। রবি শাস্ত্রীকে দেখা গেল দিনের খেলা শেষে ভারতীয় ড্রেসিংরুমের বারান্দায় ফুরফুরে মেজাজে দাঁড়িয়ে। কখনও ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে কথা বলছেন, কখনও আবার মাঠের মধ্যে ট্রেনিংয়ে ব্যস্ত বিরাট কোহালিদের বারান্দা থেকেই চেঁচিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন।

Advertisement

কিন্তু শাস্ত্রী সবচেয়ে খুশি হবেন নিশ্চয়ই শিখর ধবনের পারফরম্যান্সে। বরাবর তিনি ধবনকে সমর্থন করে গিয়েছেন। রান না পাওয়ার মধ্যেও তাঁর পাশে থেকেছেন। বহু বার বলেছেন, ‘‘শিখর ধবন হচ্ছে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার। ও একা ম্যাচের ভাগ্য পাল্টে দিয়ে যেতে পারে।’’ এখানেও তাঁর মনে কোনও সংশয় ছিল না। ধবন প্রাথমিক স্কোয়াডে না থাকলেও শাস্ত্রী নিশ্চিত ছিলেন, তাঁর ঘোড়া এখানেও ছুটবে। কারণ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রান করা ধবন যে ভাল ফর্মে আছেন, তাঁর বিচক্ষণ মস্তিষ্ক বুঝতে ভুল করেনি।

এর আগে ডিরেক্টর হিসেবে যখন ২০১৫-তে ভারতীয় দল নিয়ে গলে এসেছিলেন, তখনও ধবন এখানে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। শাস্ত্রী সেই ইনিংস ভোলেননি। ‘‘গলে আগের বারও কঠিন পরিস্থিতি ছিল। তখনও সেঞ্চুরি করেছিল,’’ বলে দিচ্ছেন তিনি। যদিও সেই সেঞ্চুরির পরেই চোট পেয়ে বাকি সিরিজের জন্য ছিটকে যান ধবন।

Advertisement

তখন ছিলেন ডিরেক্টর। দু’ বছর পরে এখন ফিরে এসেছেন হেড কোচ হিসেবে। বুধবার ধবনের ১৬৮ বলে ১৯০ রানের ইনিংস নিয়ে কী বলবেন? শাস্ত্রী উচ্ছ্বসিত ভাবে বলে উঠলেন, ‘‘দুর্ধর্ষ। আমার মতে শিখরের অভিষেকের ইনিংসের পর এটাই আমার দেখা সেরা।’’ মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে ১৮৭ করেছিলেন ধবন। এত দিন সেটাই সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর ছিল তাঁর। মোহালিতে ১৮৭ করেছিলেন ১৭৪ বলে। আক্রমণাত্মক সেই ইনিংস দেখে অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, বীরেন্দ্র সহবাগের যোগ্য উত্তরসূরি পেয়ে গিয়েছে ভারত।

আরও পড়ুন:ভেবেছিলেন, ছুটিতে যাবেন মেলবোর্নে

ধবন যখন মোহালিতে অভিষেক ঘটাচ্ছেন, কোচ ছিলেন ডানকান ফ্লেচার। কিন্তু শাস্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন মাঠে। কমেন্ট্রি বক্স থেকে সেই ইনিংস দেখে তিনিও উচ্ছ্বসিত ভাবে বলেছিলেন, ভারত আরও এক জন দাপুটে সিংহ পেয়ে গিয়েছে। তখনও তিনি জানতেন না, একদিন ধবনের কোচ হিসেবে একই ড্রেসিংরুমে থাকবেন।

কেন গলের ইনিংসকে অন্যতম সেরা হিসেবে বাছবেন? জিজ্ঞেস করায় হেড কোচ বলছেন, ‘‘ক্রিকেটের ম্যানুয়ালে যত রকম স্ট্রোক আছে, সব খেলেছে শিখর। প্রতিপক্ষ বোলিংকে পুরোপুরি শাসন করেছে।’’ দিনের শেষে ৩৯৯-৩। হেড কোচ খুশি। বললেন, ‘‘পূজারার সঙ্গে শিখরের পার্টনারশিপটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওরা দু’জনে মঞ্চটা দারুণ ভাবে সাজিয়ে দিয়েছে।’’

শিখরের মতোই তাঁর জন্যও বুধবার ছিল প্রত্যাবর্তনের দিন। এক বছর পর আবার বিরাট কোহালিদের দায়িত্বে ফিরেই এটাই ছিল আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথম দিন। কী বলবেন এখন? শাস্ত্রী তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই জবাব দিয়ে গেলেন, ‘‘ধুর, এ সব কিছু মনেই হয়নি। আমার তো মনে হচ্ছিল, গত কালের পর আবার আজ ড্রেসিংরুমে ঢুকছি।’’

সকালে টসের আগে একটা দৃশ্য দেখা গেল। শাস্ত্রী এবং কোহালি খুব গভীর আলোচনায় মগ্ন। কারও কারও যা দেখে মনে হল, ‘‘আহ্! কত দিন পর আবার কোচ এবং অধিনায়ককে এমন নিবিড় ভাবে কথা বলতে দেখা গেল। গোটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তো কোচ কুম্বলে ছিলেন এক মেরুতে, অধিনায়ক কোহালি আর এক মেরুতে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন