আইপিএলে লিগের লড়াই ওতরাতে বাকি আর মাত্র তিন দিন। অথচ দেখুন, এখনও বলা যাচ্ছে না, কারা পরের পর্যায়ে যেতে পারে বা না পারে। মাত্র তিন পয়েন্টের ব্যবধানের মধ্যে রয়েছে ছ-ছ’টা দল। মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত নেট রানরেট বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে। লিগের শেষ দিকে এমন লড়াই কখনও হয়েছে বলে তো মনে পড়ছে না।
প্রথম দু’সপ্তাহে এমন কয়েকটা ব্যাপার ঘটেছিল যাতে শেষ পর্যন্ত যে এমন অবস্থা হবে, তা তখন ভাবাই যায়নি। রাজস্থান রয়্যালস যেমন খুব কম হেরেছিল, তেমন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কম জিতেছিল। পরের দিকে ঘটল পুরো উল্টোটাই। কলকাতা নাইট রাইডার্স আর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। এখানেই শেষ নয়। এ বারের আইপিএলের দুই ‘পাঞ্চিং ব্যাগ’ কিঙ্গস ইলেভেন পঞ্জাব আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মধ্যেও হঠাৎ যেন প্রাণের সঞ্চার হতে শুরু করেছে লিগের শেষ দিকে। বেঙ্গালুরু আর চেন্নাইয়ের আগের ম্যাচে ওদের কেমন বেগ দিল দেখলেন না?
সত্যি বলতে, শনিবারের পঞ্জাব-চেন্নাই ম্যাচ নেহাতই নিয়মরক্ষার। কারণ, দুটো দল লিগ টেবলের দুই মেরুতে। চেন্নাই যেখানে প্লে অফে ঢুকে পড়েছে, সেখানে পঞ্জাবের আর কোনও সম্ভাবনাই নেই। চেন্নাইয়ের এ বার সবচেয়ে বড় সম্পদ ওদের বোলাররা। বোলারদের জন্যই এত দূর আসতে পেরেছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল। ডোয়েন ব্র্যাভো আর আশিস নেহরার সেরা পাঁচ বোলারের তালিকায় থাকা তারই প্রমাণ। ওদের অনেক জয়ই এসেছে এক বা দুই রানে। জয়টা ওদের অভ্যাস, এই নিয়ে সন্দেহ নেই। সে জন্যই কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতি সামলে নিতে ওরা ওস্তাদ। কিন্তু এ বার চেন্নাইকে ঘোড়া ছোটাতেই হবে। ওদের কিন্তু সে রকম অপ্রতিরোধ্য মনে হয়নি এ বার। এই ম্যাচটা আসলে চেন্নাইয়ের কাছে নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে প্লে অফের প্রস্তুতি সেরে নেওয়ার ম্যাচ। আর এটাই সম্ভবত ব্রেন্ডন ম্যাকালামের শেষ ম্যাচ। ম্যাচটা খেলেই বোধহয় নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে ইংল্যান্ডের বিমান ধরতে ছুটতে হবে। জীবনে কত ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হচ্ছে ওকে, ভাবুন!
নিউজিল্যান্ডের এই ইংল্যান্ড সফরের জন্য আইপিএলের আরও তিন দলকে ক্ষতি স্বীকার করতে হবে। হায়দরাবাদ পাবে না ট্রেন্ট বোল্ট আর কেন উইলিয়ামসনকে। রাজস্থান রয়্যালস টিম সাউদির অভাব অনুভব করবে। কোরি অ্যান্ডারসনকে ছাড়াই এগোতে হবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। অ্যান্ডারসন যদিও কয়েকটা ম্যাচে চোটের জন্য খেলতে পারছে না। কিন্তু ও এখন দলে থাকলে অবশ্যই চোট সারিয়ে মাঠে নামত।
এর মধ্যেই হায়দরাবাদ একটা বড় সুযোগ হারাল কেভিন পিটারসেনকে না পেয়ে। ইংল্যান্ড দলে ডাক না পেয়ে আইপিএলে আসার কথা থাকলেও পায়ের চোটের জন্য বেচারা কেপি শেষ পর্যন্ত আসতেই পারল না। ও এলে কিন্তু সানরাইজার্স শিবির চনমনে হয়ে উঠত। ওয়ার্নারদের দুর্ভাগ্য যে কেপি-কে ওরা পেল না।