ফেরার ম্যাচে হিট বিরাটদের জুটি

দেখুন, ভারতের কোচ হওয়া মানে এই নয় যে ক্রিকেটের প্রাথমিক পাঠ দিতে হবে ভারতীয় দলের ব্যাটসম্যান বা বোলারকে। যেটা জরুরি, সেটা হল ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বসে ঠিক মতো গেমপ্ল্যান তৈরি করা। আর এই জায়গাটায় আমি কোহালি-শাস্ত্রী জুটিকে একশোয় পঁচানব্বই দেবো।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৪:২২
Share:

প্রথম টেস্ট জয়ের পর বিরাট কোহালি ও অভিনব মুকুন্দ। ছবি: রয়টার্স।

টিম গেমে সাফল্য পেতে গেলে একটা ব্যাপার খুব জরুরি হয়ে পড়ে। কোচ আর ক্যাপ্টেনের রসায়ন। যেটা ঠিক হলে সাফল্য কিন্তু আসবেই। শনিবারের গলে ভারতের জয়ের মধ্যে দিয়ে যেটা দেখা গেল।

Advertisement

অনেকে বলতেই পারেন, শ্রীলঙ্কা কী এমন দল? আমি বলব, ভারত গলে চার দিন ধরে যে নিঁখুত ক্রিকেটটা খেলল, সেটা যে কোনও দলের বিরুদ্ধেই সাফল্য এনে দিতে পারত। আর এ রকম নিঁখুত ক্রিকেট তখনই সম্ভব, যখন কোচ-ক্যাপ্টেনের মধ্যে সম্পর্কটা ভাল জায়গায় থাকে।

বলতে গেলে, এই শ্রীলঙ্কাতেই দু’বছর আগে বিরাট কোহালি-রবি শাস্ত্রী জুটির শুরুটা হয়েছিল। আবার সেখানেই এই জুটির জোড়া লাগল।

Advertisement

দেখুন, ভারতের কোচ হওয়া মানে এই নয় যে ক্রিকেটের প্রাথমিক পাঠ দিতে হবে ভারতীয় দলের ব্যাটসম্যান বা বোলারকে। যেটা জরুরি, সেটা হল ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বসে ঠিক মতো গেমপ্ল্যান তৈরি করা। আর এই জায়গাটায় আমি কোহালি-শাস্ত্রী জুটিকে একশোয় পঁচানব্বই দেবো।

একটা উদাহরণ দিই। এই গল টেস্টের দল নির্বাচন। সবাই ভেবেছিল, কুলদীপ যাদবকে এই টেস্টে খেলানো হবে। কিন্তু কোহালিরা খেলায়নি। যাকে খেলাল, সেই রবীন্দ্র জাডেজা দু’ইনিংসেই ভাল বল করে গেল। কোচ-ক্যাপ্টেনের এই ঠিক জায়গায় ঠিক খেলোয়াড় বাছাটাই একটা বড় কাজ। পাশাপাশি ঠিক খেলোয়াড়ের ওপর ভরসা রাখাটাও দরকার। আমি শুনেছি, অনিল কুম্বলের জমানায় শিখর ধবনের ওপর টেস্টে সে রকম ভরসা রাখা হয়নি। শাস্ত্রী ফিরতেই ছবিটা বদলে যায়। ফলটাও হাতে নাতে পাওয়া গিয়েছে।

শাস্ত্রীর সঙ্গে আমি খেলেছি। ওর সবচেয়ে বড় গুণ হল, ম্যাচ রিডিং। একটা টেস্টে ভারতের অধিনায়কত্ব করেছিল। আর মাদ্রাজের (তখনও চেন্নাই হয়নি) সেই টেস্টে নরেন্দ্র হিরওয়ানিকে দিয়ে ফাটকা খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দেয় শাস্ত্রীর ভারত। আমি শুনেছি, ও নাকি মাঠকর্মীদের বলেছিল, দু’দিন আগে থেকে পিচে জল দেওয়া বন্ধ করে দিতে। যাতে উইকেট পুরো শুকিয়ে যায়। এও শুনেছি, শাস্ত্রী নাকি প্রত্যেক মাঠকর্মীকে তখনকার দিনে এক হাজার টাকা করে দিয়েছিল। এটাই হল শাস্ত্রীয় বুদ্ধি।

আমি জানি না, ভারতীয় ড্রেসিংরুমে শাস্ত্রী এখন ঠিক কী পরামর্শ দিচ্ছে। তবে এটুকু নিশ্চিত, এমন কিছু দিচ্ছে যাতে বিপক্ষের দুর্বলতার সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারছে কোহালিরা।

শাস্ত্রী আসায় আরও একটা সুবিধে হবে ভারতের। আমার মনে হয়, কুম্বলের সময় ব্যাটসম্যানরা কোনও সমস্যায় পড়লে সে ভাবে কারও কাছে যেতে পারত না। শাস্ত্রী জমানায় যেটা হবে না।

কিন্তু আর একটা সমস্যা থাকল। সেটা টিম বাছাইয়ের। ওরা চার জনকে নিয়ে সমস্যা। মানে ভারতীয় দলের চার ওপেনার। যে দু’জন এখানে খেলে রান পেল, তারা প্রথম পছন্দ ছিল না। ধবন, মুকুন্দ রান পেয়ে গেল। মুরলী বিজয় না হয় চোটের জন্য পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গিয়েছে। কিন্তু কে এল রাহুল তো ফিট। এ বার দেখব, টিম ম্যানেজমেন্ট কাকে খেলায়।

এই সমস্যা থাকলেও শাস্ত্রী-কোহালি জুটি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সকাল যদি বাকি দিনের পূর্বাভাস হয়, তা হলে বলব এই জুটি হিট হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন