Team India Women

Team India: বাবার ইচ্ছাপূরণ করে এ বার ভারতীয় দলে, নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া তরুণী পেসার

২০১৯ সালে বিসিসিআই-এর একদিনের প্রতিযোগিতায় ২৩টি উইকেট নেয় রেনুকা। সর্বাধিক উইকেট শিকারিদের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২১ ১৩:০০
Share:

ভারতীয় দলে ডাক পেলেন রেনুকা সিংহ ঠাকুর। ছবি: টুইটার থেকে

মাত্র তিন বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন রেনুকা সিংহ ঠাকুর। সেই বয়সেই বুঝে গিয়েছিলেন ক্রিকেটের প্রতি বাবার কতটা টান ছিল। বাবা চেয়েছিলেন খেলার মাধ্যমে ছেলে মেয়ে গর্বিত করুক দেশকে। বাবার সেই স্বপ্নই সত্যি করলেন রেনুকা। ডাক পেলেন ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে।

বাবা কেহর সিংহ ঠাকুর তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলির নামে নাম রেখেছিলেন ছেলের। রেনুকার দাদা বিনোদ দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলতে না পারলেও তিনি পেরেছেন। রেনুকা বলেন, “আমার জন্য খুব আবেগের দিন। নিজের মনের মধ্যে কী চলছে তা বোঝাতে পারছি না। আমার বাবা ছিল ক্রিকেটপ্রেমী। প্রিয় ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলির নামে দাদার নাম রেখেছিল। খুব ছোট বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলাম। মনে হয় ক্রিকেটের প্রতি ওর ভালবাসাটাই আমি পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার বিমান ধরার সময়, ভারতীয় দলের জার্সি পরার সময় বাবাও নিশ্চয়ই আমার জন্য চিৎকার করবে।”

Advertisement

২৫ বছরের রেনুকার বাবা মারা যান ১৯৯৯ সালে। মা সুনিতার কাঁধেই এসে পড়ে সংসারের দায়িত্ব। ছেলে মেয়েকে মানুষ করতে ২০০০ সালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি। সুনিতা বলেন, “আমার স্বামী চেয়েছিলেন ছেলে মেয়েরা খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকুক। দেশকে গর্বিত করুক। তাই আমি কখনও ওদের খেলা বন্ধ করিনি। আমি কাজে চলে গেলে রেনুকা ওর দাদা এবং বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে চলে যেত। কখনও কখনও অন্য গ্রামেও খেলতে যেত। হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পাওয়ার পর রেনুকা বাড়ি থেকে দূরে থাকত। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া যেন সেই কষ্টের পুরস্কার।”

রেনুকার খেলার প্রতি আগ্রহ প্রথম লক্ষ্য করেছিলেন তাঁর কাকা ভুপিন্দর সিংহ ঠাকুর। তিনিই রেনুকাকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করার কথা বলেছিলেন। ভুপিন্দর বলেন, “রেনুকা ওর দাদা এবং বন্ধুদের ডেকে নিয়ে গ্রামের মাঠে বল করে যেত। গরমকাল হোক বা শীতকাল, কখনও ক্লান্ত হত না ও। ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ট্রায়াল শুরু হলে রেনুকাকে সেখানে পাঠাই। ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ার পিছনে রয়েছে কোচ এবং রেনুকার পরিশ্রম।”

Advertisement

২০১৯ সালে বিসিসিআই-এর ঘরোয়া একদিনের প্রতিযোগিতায় ২৩টি উইকেট নেন রেনুকা। তিনিই ছিলেন সর্বাধিক উইকেট শিকারি। সেই বছরেই ডাক আসে ভারত এ দলের হয়ে খেলার। অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে যান তিনি। রেনুকার কোচ পবন সেন বলেন, “২০০৯ সালে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে আসে রেনুকা। খুব ফিট ছিল ও। ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দৌড়ত রেনুকা। ধীরে ধীরে ওর বলের গতিও বাড়তে থাকে। ওর আসল শক্তি বলের লাইন এবং লেংথ ঠিক রেখে ইনসুইং করে যাওয়া। কর্ণাটকের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব-১৯ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে রেনুকা। ওর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল এই হ্যাটট্রিক।”

২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছিলেন রেনুকা। তবে সেখানকার নেটে বল করে পরিস্থিতি বুঝে নিয়েছিলেন। এ বারের অস্ট্রেলিয়া সফরে যা তাঁর কাজে লাগবে বলেই মনে করছেন তরুণী পেসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন