ঋষভ বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
ক্রীড়া জগতে ফের ছাপ ফেলল মল্লরাজধানী বিষ্ণুপুর। সদ্য শেষ হওয়া রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে ১০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হয়ে সোনার পদক পেল বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ঋষভ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও রাজ্য বা দেশের নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কৃতীদের তালিকায় উঠে এসেছে বিষ্ণুপুরের আরও কয়েকজন কৃতী ক্রীড়াবিদের নাম।
শহরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা ঋষভ আগেও স্কুল স্তরের দৌড় প্রতিযোগিতায় নজর কেড়েছে। ২০১২ সালে স্কুল গেমস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার অ্যাথলেটিক্স মিট-এ ১০০ মিটার দৌড়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছিল ঋষভ। চলতি বছরেও স্কুল স্তরের এই প্রতিযোগিতায় রাজ্যের মধ্যে সে দ্বিতীয় এবং জাতীয় স্তরে দশম হয়।
স্কুলের বাইরে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সেই প্রথমবার পা বাড়িয়েছিল ঋষভ। সেখানে সফল হয়ে আলোড়ন ফেলেছে সে। আপাতত এই প্রতিযোগিতার জাতীয় স্তরে ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় ঋষভ। সে বলে, “রাজ্যস্তরে প্রথম হতে পেরে আমার খুব ভাল লাগছে। তবে জাতীয় স্তরে সুযোগ এলে সেখানেও বাজিমাত করাই আমার প্রথম লক্ষ্য।” খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও ঋষভ সাফল্য পেয়ে আসছে। প্রতিবারই তার নম্বর ৯০ শতাংশের মধ্যে থাকে বলে জানাচ্ছেন তার বাবা তথা বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের খেলাধুলার শিক্ষক অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “অনেক অভিভাবকের মধ্যে একটা ভুল ধারনা থাকে খেলাধুলা করলে নাকি পড়াশোনা ভাল হয় না। এই ধারনা যে মিথ্যা তা ঋষভ প্রমাণ করে দিয়েছে।”
ঋষভের মা ওন্দা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা চৈতালিদেবী বলেন, “খুব ছোট থেকেই ওর বাবার কাছে কোচিং নিয়েছে ঋষভ। ছেলের মধ্যে নিষ্ঠা, বাধ্যতা ও সর্বোপরি ঈশ্বরের আশীর্বাদ রয়েছে। আর তাই এই সাফল্য এসেছে। আমি গর্বিত।” সাফল্যের পরে ঋষভকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিষ্ণুপুরের চেয়ারম্যান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “অনেক ভাল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে ঋষভের জন্য। ওকে দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হবে।” বাঁকুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঋষভ যে সাফল্য পাবেই প্রথম থেকেই আমি নিশ্চিত ছিলাম। শেষ পর্যন্ত ও রাজ্যের মধ্যে প্রথম হওয়ায় গোটা জেলারই মুখ উজ্বল করেছে।” বিষ্ণুপুর ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বরুণ দে-র কথায়, “এই শহর থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, যোগব্যায়াম, জিমনাস্টিকের মতো বহু ক্ষেত্রেই চ্যাম্পিয়নরা উঠে এসেছে। তাঁদের মধ্যে নতুন সংযোজন ঋষভ। তবে এখানকার ছেলেমেয়েরা কলকাতা বা শহরতলির ছেলেমেয়েদের মতো ভাল প্রশিক্ষণ বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পায় না।” রাজ্য যদি একটু গুরুত্ব দেয় তাহলে আগামী দিনে বিষ্ণুপুর ক্রীড়া ক্ষেত্রে আরও চমক দেবে বলেই তাঁর মত।