ভাল খেলে আশা জাগাচ্ছে সুতন্বী

নিজের বিভাগে (অনূর্ধ্ব ১৫) সেরা হওয়া শুধু নয়। মাত্র বছর তিনেকের মধ্যে যে ভাবে উন্নতি করেছে সুতন্বী, তাতে ওই ছাত্রীকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছে বাংলার ব্যাডমিন্টন সংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৮
Share:

মেজাজে: রাজ্য সাব জুনিয়র ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায়। সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার সিউড়িতে শেষ হয় রাজ্য সাব জুনিয়র ও জুনিয়র ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা। রাজ্যস্তরের ওই প্রতিযোগিতায় হাতে গোনা সফল খেলোয়াড়দের তালিকায় রয়েছে বীরভূমের সুতন্বী সরকার।

Advertisement

নিজের বিভাগে (অনূর্ধ্ব ১৫) সেরা হওয়া শুধু নয়। অনূর্ধ্ব ১৭-র রানার্স হয়েছে সাঁইথিয়া শশীভূষণ দত্ত বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী। মাত্র বছর তিনেকের মধ্যে যে ভাবে উন্নতি করেছে সুতন্বী, তাতে ওই ছাত্রীকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছে বাংলার ব্যাডমিন্টন সংস্থা। কর্তারা বলছেন, ‘‘পরিশ্রম ধরে রাখতে পারলে অনেক দূর যাবে।’’ আর নিজে বলছে, “শুধু রাজ্যস্তরে নয়। জাতীয় স্তরে সফল হওয়াই লক্ষ্য।” আশাবাদী সুতন্বীর বাবা, মা ও কোচ তুষার কাঞ্জিলালও।

শুক্রবার দুপুরে অনূর্ধ্ব ১৭-র শীর্ষ বাছাই মন্দিরা খাটুয়াকে হারিয়ে যখন ওই গ্রুপের ফাইনালে উঠেছে সুতন্বী, তখনই ব্যাডমিন্টন সংস্থার এক কর্তা বলছিলেন, ‘‘দুর্দান্ত উন্নতি করেছে এই মেয়ে। এই মুহূর্তে বাংলার মেয়েদের মধ্যে সেরা উৎসবা পালিতের কাছে হারতে হলেও যথেষ্ট লড়াই দিয়েছে বীরভূমের ওই কিশোরী।’’ ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই করার মানসিকাতাকেই প্রশংসা করেছেন সকলে।

Advertisement

সাঁইথিয়া ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর ব্যাডমিন্টনে উন্নতির পিছনে নিজের পরিশ্রম, অধ্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ওর মা ও বাবার সমর্থন ও প্রশিক্ষকের যত্ন। সুতন্বীর বাবা সুশান্ত সরকার আসানসোল–দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট কর্মরত। মা সোমা সরকার গৃহবধূ। আসানসোলে পুলিশ আবাসনে থাকতে থাকতেই পঞ্চম শ্রেণিতে ব্যাডমিন্টনে হাতে খড়ি হয়। খেলাটার প্রতি আগ্রহ দেখে মেয়েকে আরও উন্নততর প্রশিক্ষণ দিতে সুশান্তবাবুরা মেয়েকে নিয়ে কলকাতা, এমনকি হায়দরাবাদও গিয়েছেন। দিদিকে দেখে ব্যাডমিন্টনে আগ্রহী বোন সায়নীও। পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীও কিছু দিন আগে কলকাতায় আয়োজিত একটি অনূর্ধ্ব ১৩-র প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছে।

কোচ তুষার কাঞ্জিলাল বলছেন, ‘‘২০১৫ সাল থেকে ওকে শেখাচ্ছি। ওর সব থেকে বড় গুণ লেগে থাকা। পরিশ্রম করতে পারে। নিয়মিত শরীরচর্চায় শারীরিক সক্ষমতাও বাড়ছে।’’ জানা গিয়েছে, এ বারের সাফল্য ছাড়াও ২০১৬ সালে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৩ তে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, ২০১৭ সালে অনূর্ধ ১৫ তে সেরা ও অনূর্ধ্ব ১৭ তে রানার্স হয় প্রায় ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার ওই কিশোরী। এর মধ্যেই ২০১৭ সালে আসানসোল থেকে ফিরে সাঁইথিয়ার স্কুলে ভর্তি হয়েছে সুতন্বীরা। কিন্তু, খেলাকেই পাখির চোখ করছে সে। পাশে দাঁড়িয়েছে স্কুলও।

সুতন্বী বলছে, ‘‘বছরের বেশ কয়েকটা মাস হায়দরাবাদে থাকতে হয়। তখন পড়াশোনো চলে ওখানে। শিক্ষিকারা এবং বন্ধুরা পাশে রয়েছে।’’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পাল বলছেন, ‘‘ওই ছাত্রী দারুণ খেলে বলে শুনেছি। ও যাতে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে তার জন্য কিছুটা ছাড় তো দিতেই হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন