‘এগিয়ে নাদালই, চমকে দিতে পারে সেরিনাও’

গত বছর নাদাল ফরাসি ওপেনে নামার সময় ওর খেতাব জেতা নিয়ে সংশয় কম ছিল না। ২০১৫ আর ২০১৬ দু’বছর নাদাল রোলঁ গ্যারোজে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি।

Advertisement

বরিস বেকার

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০৪:৩৩
Share:

মহড়া: প্যারিসে অনুশীলনে নাদাল ও সেরিনা। ছবি: এএফপি

ফরাসি ওপেনে এ বার পুরুষদের সিঙ্গলসে সবাইকে ছাপিয়ে ট্রফির দৌড়ে এক জনকেই এগিয়ে রাখছেন অনেকে। অর্থাৎ রাফায়েল নাদাল। তেমনই মেয়েদের সিঙ্গলসে খেতাব জেতার লড়াইটা সমানে সমানে।

Advertisement

গত বছর নাদাল ফরাসি ওপেনে নামার সময় ওর খেতাব জেতা নিয়ে সংশয় কম ছিল না। ২০১৫ আর ২০১৬ দু’বছর নাদাল রোলঁ গ্যারোজে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। তাতেই হয়তো সব বাধা কাটিয়ে নাদাল ওর ১০ নম্বর ফরাসি ওপেন জয়ের নজির গড়তে পারবে কি না অনেকের মনে সন্দেহটা তৈরি হয়েছিল।

এ বছরও পরিস্থিতি অনেকটা একই রকম আবার আলাদাও। একই রকম যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা হল, এ বারও নাদাল ফের ক্লে-কোর্ট মরসুমে খেলার সময় বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে। দুরন্ত রেকর্ড ওর এ বার ক্লে-কোর্টে। মাত্র একটা ম্যাচ হেরেছে। ডমিনিক থিয়েমের বিরুদ্ধে এবং এ বারও এই একটা হার বাদ দিলে ও সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সেট হারিয়েছে মাত্র দুটো। তাই নাদালকে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে। খেতাব জেতার দিকে তাই ওই যে এগিয়ে রয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Advertisement

নাদালকে দারুণ ফিট, আত্মবিশ্বাসী এবং ১১ নম্বর ফরাসি ওপেন জেতার জন্য তৈরি মনে হচ্ছে। অবশ্য নাদালকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কয়েক জন তারকা এ বারও আছেন। কিন্তু তারা ছন্দে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করে যাচ্ছে। নোভাক জকোভিচ কোর্টে ফিরে আসার পরে যত দিন যাচ্ছে আরও উন্নতি করছে। ক্লে-কোর্ট মরসুমেও ওকে এ বার দারুণ মনে হয়েছে। স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কাও তাই। ২০১৫-র ওয়ারিঙ্কা এখন ও আর নেই। ওকে হাঁটুর চোট কাটিয়ে ফিরে আসতে আরও কিছুটা সময় দিতে হবে।

ঘটনা হল, এই পরিস্থিতিতে দু’জনকে খুব ভাল ছন্দে আছে বলে মনে হচ্ছে। যাঁরা স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে অন্তত একটা সেট জেতার ক্ষমতা রাখে। এই দু’জন হল, আলেকজান্ডার ‘সাশা’ জেরেভ এবং‌ থিয়েম। গত বছরও থিয়েম দারুণ খেলেছিল, শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে ওর দৌড় থামিয়ে দিয়েছিল নাদাল। রোম মাস্টার্সে খুব ভাল খেলেছে এ বার জেরেভ। ওকে ভবিষ্যতের তারকা বলছেন অনেকে। আমার মনে হয় রোমে ফাইনালে বৃষ্টি হওয়ার জন্য নাদাল কিছুটা হলেও সুবিধে পেয়েছিল। জেরেভ অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে দেখা যাবে ও কিন্তু বিশেষ এক জন খেলোয়াড়। তবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার মতো ক্ষমতা ওর মধ্যে আছে কি না সেটার আন্দাজ হয়তো আগামী মরসুমে পাওয়া যাবে। মনে হচ্ছে, ওর মধ্যে ক্ষমতাটা আছে। জার্মান হিসেবে এ ব্যাপারটা আমার কাছে কম উত্তেজক নয়।

মেয়েদের সিঙ্গলসে এ বার সবচেয়ে দুরন্ত ব্যাপার হল সেরিনা উইলিয়ামসের কোর্টে ফেরা। মেয়ে হওয়ার বছর খানেকও হয়নি সেরিনাকে আবার গ্র্যান্ড স্ল্যামে দেখা যাবে। এতেই বোঝা যায় ওর প্রতিভা আর ফিটনেস ঠিক কোন পর্যায়ের। নিশ্চিত ভাবে তাই ওকে অনেকে এ বার খেতাবের দৌড়ে দেখছে। সেরিনা ফরাসি ওপেনে বাছাই হিসেবে এ বার নামতে পারত। এক নম্বরে থাকার সময় ও কোর্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিল। মেয়েদের সার্কিটে বাছাই হিসেবে ওর নামাটা তাই স্বাভাবিক ব্যাপারই ছিল। ফরাসি ওপেন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত ভাবে এ ব্যাপারে ভাল সিদ্ধান্ত নেননি। এ ছাড়া নজর রয়েছে শীর্ষবাছাই সিমোনা হালেপ, গত বারের চ্যাম্পিয়ন ইয়েলেনা অস্তাপেঙ্কো, গারবিনে মুগুরুজা এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে সব সময় বিপজ্জনক মারিয়া শারোপভা।

এই লড়াইয়ে যে কেউ জিততে পারে। শুধু দুটো সপ্তাহ দারুণ যাওয়া চাই তার প্যারিসের কোর্টে। অস্তাপেঙ্কো গত বার অবাছাই হিসেবে নেমেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তার পর থেকে ও কিন্তু নিজের জায়গাটা ধরে রেখেছে। যেটা বুঝিয়ে দিচ্ছে, ও কিন্তু শুধু একটা টুর্নামেন্টেই চমকে দেওয়ার মতো খেলোয়াড় নয়। আশা করি হালেপও এ বার অনেক দূর যাবে প্রতিযোগিতায়। ওর গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা প্রাপ্য। আর ক্লে-কোর্ট তো ওর পছন্দের। মেয়েদের সিঙ্গলসে এ বার যে কেউ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে— ভবিষ্যদ্বাণী করা তাই খুব কঠিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন