দক্ষিণ আফ্রিকার তাস ইমরান তাহির
মহাত্মা গাঁধী-নেলসন ম্যান্ডেলা সিরিজের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দলকে সচিন তেন্ডুলকরের পরামর্শ কী?
এক পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত লেগ স্পিনার থেকে সাবধান!
ভারতীয় ক্রিকেটের আইকন মনে করছেন, ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উচিত ইমরান তাহিরকে খুব সাবধানে খেলা। ‘‘ইমরান তাহির খুব ভাল বোলার। আমাদের ব্যাটসম্যানদের উচিত ওকে ঠিকঠাক ভাবে খেলা। একটু সাবধানেই খেলা। তাহিরই সম্ভবত এই সিরিজে ওদের প্রধান বোলার হতে চলেছে,’’ এ দিন বলেন সচিন।
নিজের শহরে এক বাণিজ্যিক সংস্থার অনুষ্ঠানে তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হিসেবে হাজির হয়ে সচিন আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের এখনকার জাতীয় ক্রিকেট দলটা আমার মতে দুর্দান্ত। ছেলেগুলো প্রচণ্ড প্রতিভাবান আর দায়বদ্ধ। আমি জানি প্লেয়ারদের সম্পর্কে অনেক কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু এ-ও জানি যখন বিষয়টা ক্রিকেট খেলায় এসে দাঁড়ায় তখন সেখানে সফল হওয়ার জন্য কোনও শর্টকাট রাস্তা থাকে না। আর আমাদের ছেলেরা সে ব্যাপারে পুরোপুরি দায়বদ্ধ।’’
সচিনের বিশ্বাস, প্রতিপক্ষের নাম যখন দক্ষিণ আফ্রিকা তখন টি-টোয়েন্টি হোক কিংবা ওয়ান ডে— আসন্ন সিরিজ দারুণ উত্তেজক হবে। ‘‘তবে আমি টেস্ট সিরিজটার দিকে তাকিয়ে আছি। দু’টো টিমেরই ব্যালান্স খুব ভাল। ব্যাটিং-বোলিং দু’দিকেই,’’ বলেন সচিন।
সচিনের স্মৃতিচারণ, ‘‘আমি কখনও এমন কোনও দক্ষিণ আফ্রিকা টিমের বিরুদ্ধে খেলিনি যাদের বলা যায় মোটামুটি দল। ওরা সব সময়ই দারুণ শক্তিশালী। এবি ডে’ভিলিয়ার্স, হাসিম আমলা... ডেল স্টেইন-মর্নি মর্কেলকেও ভুলে যাবেন না!’’ নিজের স্মরণীয় দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের কথা বলতে গিয়ে সচিনের গলায় উঠে আসছে বিরানব্বই হিরো কাপ সেমিফাইনাল।
বলছেন, ‘‘দেখুন, ওরা একানব্বইয়ে যখন প্রথম ভারতে এল তখন ওদের বিরুদ্ধে খেলাটা একটা অসাধারণ অনুভূতি। কারণটা ওদের সেই অবাক মুখগুলো... ওরা ইডেনে এক লাখ দর্শক দেখে একদম আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল! ওর চেয়ে ভাল ভাবে ওদের অভ্যর্থনা জানানো বোধহয় আর কোথাও সম্ভব ছিল না। আমিও খুব খুশি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এর পর আমরাও দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে যাব। যেটা বিরানব্বইয়ে গিয়েছিলাম আর আমরাও অসাধারণ অভ্যর্থনা পেয়েছিলাম। এখান থেকে গিয়ে ডারবানে নেমেছিলাম আমরা। তিরিশ কিলোমিটার দূরের হোটেলের পুরো রাস্তাটা আমাদের সবাইকে বিশাল দামি দামি গাড়িতে চড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গোটা রাস্তার দু’ধারে ওখানকার মানুষ দাঁড়িয়ে আমাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্কে আমার প্রথম অভিজ্ঞতাটাই দুর্দান্ত।’’
এর পর সচিন ঢোকেন প্রোটিয়াদের সঙ্গে ম্যাচ প্রসঙ্গে। বলেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচের কথা এলে কী করে ভুলি বলুন তো সেই হিরো কাপ সেমিফাইনালের কথা? শেষ বল অবধি খেলা হয়েছে এমন ম্যাচগুলোর মধ্যে সেটাই আমার গোটা ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ। কেউ জানত না সে দিন শেষমেশ কী ঘটতে চলেছে। ম্যাচের রং অনবরত পাল্টে পাল্টে যাচ্ছিল। সব মিলিয়ে ওই ম্যাচটা আমার জীবনের একটা বিরাট অভিজ্ঞতা।’’ এখানে উল্লেখ্য, সে দিন ইডেনে ম্যাচের শেষ ওভারে বল করে ভারতকে জিতিয়েছিলেন সচিন। মাত্র ২ রানে।
সচিন এ দিন আরও বলেছেন, ‘‘এ বারেরটা ঘরের মাঠে সিরিজ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় আপনি যখনই যাবেন প্রতিবার একটা না একটা নতুন কিছুর সঙ্গে আপনার পরিচয় ঘটবেই। নতুন নতুন ক্রিকেটীয় চ্যালেঞ্জ। কন্ডিশন, পিচ... জো’বার্গ, সেঞ্চুরিয়নের মতো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচু শহরের মাঠে আপনার এমন একটা অভিজ্ঞতা হবে যা পৃথিবীর আর কোনও ক্রিকেট মাঠে হবে না— অক্সিজেনের অভাব!’’