১১তম ওভারে তাসকিনের বলে পয়েন্টে যে ক্যাচটি দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, তা মোটেও কঠিন ছিল না। অথচ, সেই ক্যাচটিই সাকিবের হাত থেকে ফসকে বেরিয়ে গেল ! সঙ্গে বেড়িয়ে গেল বোধহয় ম্যাচটাও। ২১ রানের মাথায় বেঁচে যাওয়া সেই রোহিত শর্মাই হয়ে উঠলেন ভয়ঙ্কর, ৫৫ বলে ৮৩ রানের তাঁর ক্লাসিক ইনিংসটাই ভারতের জয়েটা নিশ্চিত করে দিয়েছিল।
ওই ক্যাচ ড্রপটাই যে তাঁদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে, তা মানছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি নিজেও। তবে সরাসরি অভিযুক্ত না করেও মাশরাফি বলেছেনÑ‘ অবশ্যই অন্য কিছু হতে পারতো। তবে ক্যাচ মিস খেলারই একটি অংশ। দল হারলে এমন অনেক কিছুই মনে হয়।’
ওয়ানডে কিংবা টুয়েন্টি-২০, পয়েন্ট পজিশনে বাংলাদেশ দলে স্পেশলিস্ট ফিল্ডারের স্টিকারটা লেগে গেছে সাব্বির রহমান রুম্মানের গায়ে। এক সময়ে নাসির ছিলেন এই পজিশনের অপরিহার্য ফিল্ডার। এখন তাঁর বাল্যবন্ধু সাব্বির সামলান পয়েন্ট। সেই পয়েন্ট পজিশনে ফিল্ডিংয়ে কেন বেছে নেয়া হলো সাকিবকে ? ম্যাচের পরের সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্নবানেই জর্জরিত হতে হয়েছে মাশরাফিকে। তবে পয়েন্টে সাকিবকে ফিল্ডিংয়ে বেছে নেয়ার কারন হিসেবে মাশরাফির যুক্তি‘ওই খানে
সাধারনত রুম্মান ( সাব্বির) বা নাসির ফিল্ডিং করে। তবে ১২-১৩ ওভার থেকে দলের প্রধান ফিল্ডারদের সাধারনত যে সব পজিশনে বেশি বল আসে, সেখানে
পাঠানো হয়। কারন, শটস খেললে লং অন, লং অফ, মিড উইকেটে বল চলে আসবে। ওই সময়ে পেস বোলার বোলিং করছে বলেই পয়েন্টে একজন ভাল ফিল্ডার দরকার ছিল। সাকিব আমাদের দলে অন্যতম সেরা ফিল্ডার বলেই পয়েন্টে ফিল্ডিং করেছে সে। ও অনেক ভাল ভাল ক্যাচ নিয়েছে এর আগে।’’
সাকিবের ক্যাচ ড্রপের মাশুল যে দিতে হয়েছে, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারে ১১৪ রান যোগ করেছে ভারত। যে দলটি নিজেরাও ১৪০ পর্যন্ত স্কোর টেনে নেয়াকে যথেস্ট মনে করেছে, সেই দলটিই কি না স্কোর করেছে ১৬৬/৬। রোহিতের ক্যাচ ড্রপে তাই আক্ষেপ চাপা রাখতে পারেননি মাশরাফিÑ‘ ওই সময়ে রোহিত আউট হলে ১৩৫ থেকে ১৪০’র মধ্যে ভারতকে আটকানোর টার্গেট করতে পারতাম। কিন্তু রোহিত বেঁচে যাওয়ায় বলেই মনে হচ্ছিল ১৫০ হতে পারে। সেখান থেকে ১৫-২০ টা রান বেশি দিয়ে ফেলেছি। কৃতিত্বটা রোহিতকেই দিতে হবে। জানতাম রোহিত সুযোগ নিবে,তারপরও কিছুই করতে পারিনি। ’’
যাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমন সাজানো হয়েছে, সেই মুস্তাফিজুর অস্ত্র কাজে আসেনি। তার কারন হিসেবে শিশিরকে দায়ি করছেন মাশরাফি। ১১তম ওভার থেকে শিশির পড়ায় বল গ্রিপিংয়ে সমস্যা হয়েছে, তাতেই ইনিংসের শেষ দিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি রান পেয়েছে ভারত। এমনটাই মনে করছেন মাশরাফিÑ‘নতুন বল খুব ভালোভাবেই সুইং করছিল। দু’দলই প্রথম ৬ ওভাওে ভাল বল করতে পেরেছে। উইকেটে ঘাস ছিল। ওটা সাহায্য করছিল। আমরা চারজন পেসার নিয়ে খেললেও আমরা খুব ভালোভাবেই ম্যাচে ছিলাম। এরকম উইকেটে স্পিন হেল্প করবে না সেটা আমরা জানতাম। তারপরও সাকিব ভালো বোলিং করেছে। রিয়াদও করেছে। তবে শিশির ১০/১১ ওভার পর পড়া শুরু করলে মুস্তাফিজুরের বল গ্রীপিংয়ে সমস্যা হয়েছে। ও একটা কাটার মেরেছিল, তা মিসটাইম হয়ে ছক্কা হয়েছে। শেষ ৪ ওভারে একটু বেশি রান দিয়ে ফেলেছি। রোহিত শর্মা ওখানে সেট ব্যাটসম্যান ছিল। ওখানে আমরা যেগুলো করেছি, শ্লোয়ার কাজে লাগেনি। মুস্তাফিজ কাটারগুলো গ্রিপ করতে পারিনি। বল ভেজা ছিল। ওখানেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।’