আশঙ্কা: সানিয়ার মিক্সড ডাবলস সঙ্গী ইভান ডডিজ উইম্বলডনে নামতে পারবেন কি না অনিশ্চিত। ফাইল চিত্র
ব্যক্তিগত ফর্মের দিক থেকে ভাল জায়গায় থাকার পরেও কেরিয়ারের এক অদ্ভুত কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ক্লে কোর্ট টুর্নামেন্ট আর উইম্বলডনের প্রস্তুতি টুর্নামেন্টে আমার একাধিক সঙ্গীর চোট-আঘাতের সমস্যা ভুগিয়েছে। সঙ্গে আমার কোর্টে সাফল্যের সম্ভাবনাও বিরাট ধাক্কা খেয়েছে। টেনিসে ডাবলস সঙ্গীদের ভাগ্য এক সূত্রে বাঁধা। দু’জনের মধ্যে সব কিছু ঠিকঠাক না থাকলে সাফল্য পাওয়া খুব কঠিন।
আমার নিয়মিত পার্টনার ইয়ারোস্লাভা শ্বেদোভার গোড়ালির পুরনো চোট আমাদের ইউরোপের ক্লে কোর্ট টুর্নামেন্টে ভুগিয়েছে। শ্বেদোভা তার পরে ঠিক করে, ঘাসের কোর্টে টুর্নামেন্টে নামার আগে কয়েক সপ্তাহ বিশ্রাম নেবে। যাতে উইম্বলডনের আগে ফিট হয়ে উঠতে পারে। আমি তাই কোকো ভ্যান্ডেওয়েগের সঙ্গে জুটি বেঁধে বার্মিংহামে নেমেছিলাম। আমাদের জুটিটা বেশ ভালই খেলছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড় কোকো পায়ের চোটে সেমিফাইনাল থেকে সরে দাঁড়াল।
চিকিৎসকরা এ দিকে আবার উইম্বলডনের নাম জমা দেওয়ার চূড়ান্ত সময়সীমার তিন দিন আগে শ্বেদোভাকে জানিয়ে দিল, তাঁর চোট সারাতে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এই অবস্থায় নতুন ডাবলস পার্টনার খোঁজাটা ভীষণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বেশির ভাগ ডাবলস খেলোয়াড়ই তখন সঙ্গী চূড়ান্ত করে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে আমি ঠিক করি বেলজিয়ামের কার্স্টেন ফ্লিপকেন্সের সঙ্গে উইম্বলডনে নামব। ইস্টবোর্ন টুর্নামেন্টে খেলে উইম্বলডন অভিযান শুরু করব। ফ্লিপকেন্সের ডাবলসে খুব একটা অভিজ্ঞতা না থাকলেও ওর ঘাসের কোর্টে খেলার দক্ষতার জন্যই সঙ্গী হিসেবে ওকে বেছেছিলাম। কিন্তু ইস্টবোর্ন টুর্নামেন্টে নামার আগেই প্র্যাকটিসে কাঁধে চোট পেয়ে ফ্লিপকেন্স টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়াল। সমস্যা যেন কিছুতেই মিটছে না।
আরও পড়ুন: স্পিনারদের দাপটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জয় এল ধোনিদের
শুধু ডাবলসই নয়, মিক্সড ডাবলসেও একই সমস্যা ভোগাচ্ছে। মিক্সড ডাবলসে আমার সঙ্গী ইভান ডডিজ ফরাসি ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনালের ঠিক আগে পিঠে চোট পেয়ে বসল। শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটাও আমরা হারলাম এ বারের চ্যাম্পিয়ন রোহন বোপান্না আর গ্যাব্রিয়েলা ডাব্রোস্কির বিরুদ্ধে। ইভান তার পরে চোট সারিয়ে উঠলেও ইস্টবোর্ন থেকে আমাদের সরে দাঁড়াতে হল টুর্নামেন্টের সিঙ্গলসে নেমে ফের ও চোট পাওয়ায়। যদি ইভান সময়ের মধ্যে চোট সারিয়ে না উঠতে পারে, তা হলে আমায় আবার নতুন মিক্সড ডাবলস সঙ্গীর খোঁজ করতে হবে। যেটা এই অবস্থায় ভীষণ কঠিন।
এ সব ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তার মধ্যে একটা জিনিস উইম্বলডনে এ বার দেখে খুব ভাল লাগছে। বালক আর বালিকা বিভাগে এক ঝাঁক ভারতীয় এ বার চ্যালেঞ্জ সামলাতে নামছে। জিল দেসাই, মেহক জৈন এবং মিহিকা যাদব মেয়েদের মধ্যে সরাসরি খেলার যোগ্যতা পেয়েছে। বালক বিভাগের মূলপর্বে একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড় সিদ্ধান্ত বান্তিয়া। টেনিস বিশ্বের এত বড় মঞ্চে এই উঠতি ভারতীয় খেলোয়াড়দের নামার ব্যাপরাটায় দারুণ উত্তেজিত আমি। ভবিষ্যতে আমরা কত দ্রুত আবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন তুলে আনতে পারব, সেটা কিন্তু এই লড়াইগুলো থেকেই বোঝা যাবে।