গোটা দেশের আশা ছিল তাঁদের নিয়ে। সবাই এক রকম ভেবেই রেখেছিলেন হয়তো রবিবারই পদক-খরা কাটবে ভারতের। কিন্তু সেমিফাইনাল হারের যন্ত্রণা ব্রোঞ্জ জিতে মেটাতে পারলেন না সানিয়া মির্জা-রোহন বোপান্না। চোখের জলে রিওকে বিদায় জানালেন ভারতীয় টেনিসের ‘পোস্টার গার্ল’।
মিক্সড ডাবলসের ব্রোঞ্জ ম্যাচ তখন সবেমাত্র শেষ হয়েছে। প্রত্যাশা থাকলেও শেষমেশ স্তেপানেক-হ্রাদেকা জুটির বিরুদ্ধে ১-৬, ৫-৭ হেরে গিয়েছে সানিয়া-বোপান্না। দেশকে পদক না দিতে পারার যন্ত্রণায় কোর্টেই কেঁদে ফেললেন সানিয়া। গ্যালারির দিকে হাত নাড়া তো দূরের কথা, মাথা নিচু করে কাঁদতে কাঁদতে কোর্ট ছেড়ে বেরোলেন সানিয়া।
মিক্সড জোনে যখন এলেন, সানিয়ার চোখ তখনও ছলছল করছে। ভাবতেই পারছেন না কী করে এত ভাল শুরু করেও সব শেষ হয়ে গেল চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে। ‘‘ভাবতেই পারছি না। মারে-ওয়াটসনকে হারানোর পর আমরা ভাল ফর্মে ছিলাম। কিন্তু কী করে এমন হয়ে গেল বুঝলাম না,’’ বলছেন সানিয়া।
ট্রফি ক্যাবিনেটে ডাবলস ও মিক্স়ড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব রয়েছে। কিন্তু ইচ্ছা ছিল গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলোর পাশে এ বার থাকবে একটা অলিম্পিক্স পদকও। কিন্তু সে আশা সানিয়ার পূরণ হল কোথায়! তিনি বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম একটা পদক অন্তত জিতে ফিরব। আমার ক্যাবিনেটে অনেক ট্রফি আছে। শুধু অলিম্পিক্স পদকটাই ছিল না। কিন্তু হল না। তাই আরও কষ্ট হচ্ছে।’’
মেয়েদের ডাবলসে প্রথমে ছিটকে গেলেও মিক্সড ডাবলসে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছিলেন সানিয়া-বোপান্নারা। সেমিফাইনালে ভেনাস উইলিয়ামস-রাজীব রামের বিরুদ্ধে প্রথম সেট জিতেও গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু দ্বিতীয় সেটেই সব উল্টে যায়। ভেনাসরা ম্যাচের দখল নিতে শুরু করেন। দ্বিতীয় সেটও জিতে নেন। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকে তৃতীয় সেট হেরে সোনা বা রুপো পাওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে যান সানিয়ারা।
কিন্তু অলিম্পিক্সে সোনার দৌড় থেকে ছিটকে গেলেও ব্রোঞ্জ জেতার তো সুযোগ ছিল সানিয়াদের সামনে। রবিবার তাতে দাঁড়াতেই পারলেন না সানিয়া-বোপান্না। সবশেষে সানিয়া বলে গেলেন, ‘‘চার বছর পর আমি আবার অলিম্পিক্সে খেলব কি না, জানি না।’’