‘সান্টিনা’ পৌঁছে গেলেও তৈরি কি না জানে না

তাঁদের জুটির বিচ্ছেদ ঘটে গিয়েছে গত অগস্টে। তার আগের দেড় বছরে তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম আর ১১টা ডব্লিউটিএ খেতাব জেতা সত্ত্বেও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২০
Share:

সিঙ্গাপুরে ডব্লিউটিএ বর্ষসেরা ফাইনালসে জুটিতে শেষ বার নামার আগে পার্টির মেজাজে ‘সান্টিনা’।ছবি: টুইটার।

তাঁদের জুটির বিচ্ছেদ ঘটে গিয়েছে গত অগস্টে। তার আগের দেড় বছরে তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম আর ১১টা ডব্লিউটিএ খেতাব জেতা সত্ত্বেও। যত দিন জুটিটা ছিল, প্রায় আগাগোড়া তারাই মেয়েদের ডাবলসের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ছিল। অপরাজিত ছিল টানা ৪১ ম্যাচ।

Advertisement

সাম্প্রতিক কালের সেই অপ্রতিরোধ্য টেনিস জুটি মেয়েদের পেশাদার ট্যুরের বছর শেষের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে সিঙ্গাপুরে পৌঁছে নিজেদের সম্ভাবনা নিয়ে প্রথম কথা কী বলতে পারে? নিশ্চয়ই তাদের গত বারের খেতাব অটুট রাখতে পারার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য-টন্তব্য!

কিন্তু ‘সান্টিনা’ এ জন্যই বোধহয় ‘সান্টিনা’! কোর্টে যেমন অসাধারণ, কোর্টের বাইরে তেমনই অনন্য!

Advertisement

সিঙ্গাপুরে পৌঁছে মার্টিনা হিঙ্গিসকে পাশে নিয়ে সানিয়া মির্জার তৎক্ষণাৎ ছবি-সহ টুইটার পোস্ট— ‘আমরা পৌঁছে গিয়েছি, তবে প্রস্তুত কি না জানি না!’

তা হলে এই টুর্নামেন্টে কেন জুটি বাঁধলেন? বিচ্ছেদের আগেই এ বারের প্রথম জুটি হিসেবে সিঙ্গাপুরের টিকিট পেয়ে যাওয়ায়— কমিটমেন্ট! একের অন্যের কাছে দায়বদ্ধতা। যেটা সানিয়া-মার্টিনা সেই অগস্টেই বলে রেখেছিলেন সিঙ্গাপুরের সংগঠকদের।

‘সান্টিনা’ জুটি তাদের চমকপ্রদ সাফল্য-অধ্যায়ে যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছে, কার্যত সর্বত্র শীর্ষ বাছাই ছাড়া কিছু হয়নি। হবে না-ই বা কেন? জুটি বাঁধার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তো দু’জনের একজন ডাবলসের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে তো, অপর জন দুই! সানিয়া তো এখনও শীর্ষে। টানা ৮১ সপ্তাহ ধরে।

কিন্তু সিঙ্গাপুরে এ দিন ডব্লিউটিএ ফাইনালসের প্রকাশিত বাছাই তালিকায় সানিয়া মির্জা-মার্টিনা হিঙ্গিস দ্বিতীয় বাছাই! শীর্ষ বাছাই ফরাসি জুটি ক্যারোলিন গার্সিয়া-ক্রিস্টিনা মাডেনোভিচ। এবং সঙ্গে সঙ্গে টেনিস দুনিয়ায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, গার্সিয়া-মাডেনোভিচের মধ্যে কেউ কি সানিয়ার থেকে সিংহাসন কেড়ে নেবেন সিঙ্গাপুরে? পাশাপাশি আবার অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ভারতীয় টেনিস সুন্দরীর সিংহাসন অক্ষত থাকা-না থাকা অনেকটা নির্ভর করছে ‘সুইস মিস’-এর সিঙ্গাপুরে পারফরম্যান্সের উপর। তিনি— মার্টিনা হিঙ্গিস। যিনি সানিয়াকে ছেড়ে মার্কিন মেয়ে কোকো ভ্যান্ডেওয়েগ-কে নিয়ে খেলে শেষ আড়াই মাসে ততটাই ব্যর্থ, যতটা সফল চেক মেয়ে বারবারা স্ট্রাইকোভাকে নিয়ে খেলে সানিয়া। সানিয়া গত বছর পেশাদার ট্যুরে দশটা খেতাব জিতে থাকলে এ বছর জিতেছেন আটটা। যার মধ্যে গোটা তিনেক স্ট্রাইকোভাকে পার্টনার নিয়ে। যেখানে কোক-মার্টিনা জুটির ট্রফি-ঝুলি এখনও শূন্য।

মার্টিনার সঙ্গে সানিয়ার বিচ্ছেদের পিছনে সবচেয়ে বড় টেকনিক্যাল কারণ শোনা যায়, পঁয়ত্রিশের সুইস ইদানীং ম্যাচ সুপার টাইব্রেকে গড়ালে আর দমে পেরে উঠছিলেন না। ক্লান্তি দেখা যাচ্ছিল নেটের সামনে তাঁর নড়াচড়া, রিফ্লেক্সে। সার্ভিসের গতি কমে যাচ্ছিল উল্লেখযোগ্য ভাবে। মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে সেগুলোর কতটা উন্নতি ঘটেছে মার্টিনার খেলায়, সেটা সিঙ্গাপুরে ‘সান্টিনা’-র আসন্ন সাফল্য-ব্যর্থতার পিছনে বড় কারণ হয়ে উঠবে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।

বছরের সেরা আট ডাবলস টিমের টুর্নামেন্ট এ বার আগের বছরগুলোর মতো রাউন্ড রবিন-কাম নক আউট নয়। সরাসরি নক আউট। তাই ‘সান্টিনা’ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলছে তাইপেই জুটি হাও চান-ইয়ান চানের বিরুদ্ধে। জিতলে সেমিফাইনাল খেলবেন রুশ জুটি ভেসনিনা-মাকারোভা এবং চেক জুটি হ্রাদেকা-হালাককোভা ম্যাচের জয়ীর সঙ্গে। সেটা টপকাতে পারলে তবে ফাইনালে ওঠা এবং‌ খেতাব অটুট রাখতে পারার প্রশ্ন!

কী দাঁড়াচ্ছে? সিঙ্গাপুরে পা রেখেই সানিয়ার টুইটটা কঠিন বাস্তব। কোনও রসিকতা নয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন