মাঝে এক দিন। তার পর দু’জনেই চেন্নাইয়ান জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন আটলেটিকো কলকাতার বিরুদ্ধে টক্করে। কিন্তু রবিবারটা আইএসএলে দুই টিমমেটের এক জন যেন বেশি করে প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, অন্য জন প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ফুটবলার! ম্যান সিটির সেই পুরনো শত্রু এলানোর অধুনা চেন্নাইয়ান সতীর্থ ফরাসি বিশ্বকাপার মিকায়েল সিলভেস্ত্রে এ দিন সন্ধেয় টিভিতে ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি দেখতে বসার আগে হায়াত রিজেন্সির লবিতে আড্ডা দিলেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।
প্রশ্ন: আটলেটিকো দে কলকাতা, না ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি কোনটা এ দিন বেশি প্রাধান্য পেল আপনার কাছে?
সিলভেস্ত্রে: আটলেটিকো ম্যাচ নিয়ে আজ আর বেশি ভাবিনি। বরং ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি দেখতেই মনে মনে তৈরি হচ্ছিলাম।
প্র: আপনার চেন্নাইয়ান সতীর্থ এলানো আজ ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বিতে নিশ্চয়ই ও দিকে! মানে ম্যান সিটির সাপোর্টার!
সিলভেস্ত্রে: শুধু কি এলানো একা? ওর সঙ্গে ডেনসন, খাবরাও ও দিকে! তবে শিল্টন-সহ বাকিরা কিন্তু আমার সঙ্গেই ম্যান ইউকে সাপোর্ট করবে বলে কথা দিয়েছে।
প্র: আপনি ইন্টার মিলান, আর্সেনালের মতো ক্লাবেও খেলেছেন। তা হলে ম্যান ইউ নিয়ে এত বেশি নস্ট্যালজিক কেন?
সিলভেস্ত্রে: বন্ধু, ন’টা বছর ওই ক্লাবে খেলেছি। স্যর অ্যালেক্সের কোচিং, সাফল্য...! আমার জীবন থেকে ম্যান ইউকে মুছে ফেলা শক্ত!
প্র: ম্যান ইউয়ের চেয়েও তা হলে বেশি করে অ্যালেক্স ফার্গুসনের জন্য?
সিলভেস্ত্রে: অফ কোর্স। আমার জীবনের সেরা কোচ। নিরানব্বইয়ে ম্যান ইউতে প্রথম খেলতে আসার দিন আমাকে আনতে সোজা এয়ারপোর্টে চলে গিয়েছিলেন স্যর অ্যালেক্স। আমি নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছিলাম! ম্যান ম্যানেজমেন্টে লোকটা একদম জিনিয়াস। পাখি পড়ার মতো একটা কথা আমাকে বলতেন, লেফট ব্যাক আর সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার দু’টোর জন্যই তৈরি থাকো। ফলে ম্যান ইউতে প্রথম দলে ঢোকার জন্য আমার হাতে অন্যদের চেয়ে অপশন বেশি থাকত। দিস ইজ ফার্গুসন।
প্র: ফার্গুসনের ম্যানেজার না থাকাটাই কি এখন ম্যান ইউয়ের ছন্নছাড়া অবস্থার মূল কারণ?
সিলভেস্ত্রে: তা বলব না। ফান গল দারুণ কোচ। আসলে ওদের সমস্যা হয়ে গিয়েছে বিশ্বকাপের পর কোচ, ফুটবলাররা ক্লাবে যোগ দেওয়ায়। তবে সবে তো অক্টোবর শেষ হল। ইপিএলের অনেক বাকি। ম্যান ইউ অঘটন ঘটিয়ে যদি শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়...তখন!
প্র: শেষ আট বছরে দু’টো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে পারল না আপনার দেশ ফ্রান্স। কী বলবেন?
সিলভেস্ত্রে: এ বার কার কাছে হেরেছি দেখুন! জার্মানি। তাও এক গোলে। দু’বছর পর আমাদের দেশে যখন ইউরো কাপ হবে তখন কাবায়ে, পোগবা, ভালবুয়েনাদের দেখবেন! সঙ্গে বেঞ্জিমা। দু’বছর ধরে তো রিয়ালকে কাঁধে তুলে নিচ্ছে। শেষ এল ক্লাসিকোতেও গোল করল।
প্র: চেন্নাইয়ানে মাতেরাজ্জির সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব হয়েছে?
সিলভেস্ত্রে: কেন? বন্ধুত্ব না হওয়ার কী হয়েছে!
প্র: ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে মাতেরাজ্জি যদি জিদানকে মাঠে গালাগাল না দিতেন, তা হলে হয়তো ‘হেড-বাট’ ঘটনা ঘটতই না। ইতালির বদলে কাপটা হয়তো আপনারা ফ্রান্সে নিয়ে যেতেন। সে দিন বেঞ্চে বসে সব দেখার পরেও আপনি কি চেন্নাইয়ানে মাতেরাজ্জিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন?
সিলভেস্ত্রে: ওটা মার্কোর ভুল নয়। সে দিন দোষটা ছিল জিদানেরই! আরে তুমি জিনেদিন জিদান। তোমাকে বিপক্ষ উত্যক্ত করবেই। তা বলে তুমি ও রকম দুর্ব্যবহার করে কাপ ফাইনালটাই ঘুরিয়ে দিলে!
প্র: কলকাতা ম্যাচ নিয়ে কী পরিকল্পনা?
সিলভেস্ত্রে: আমাদের শিল্টন-খাবরা-জেজে-বলবন্তদের থেকে কলকাতা টিম নিয়ে টিপস পেয়েছি। মাঠে সেগুলো কাজে লাগাতে হবে।
প্র: ১৪ নভেম্বর এই ম্যাচটাই আপনাদের খেলতে হবে কলকাতায়। যা দেখতে আটলেটিকো মাদ্রিদ কোচ দিয়েগো সিমিওনে নাকি আসছেন।
সিলভেস্ত্রে: সত্যিই! দারুণ খবর। ইন্টারে যখন ছিলাম তখন এক বছর ওর সঙ্গে খেলেছি। দারুণ মানুষ। কলকাতায় দেখা হলে কিছু বিশেষ ব্যাপার নিয়ে কথা বলব। তবে প্লিজ, কী ব্যাপারে জানতে চাইবেন না!