অভাবের সঙ্গে লড়েই সাঁতারে প্রথম সায়নী

পথে হাজারও বাধা। এই লড়াই শুধু প্রতিযোগিতা জেতার নয়, অভাবের বিরুদ্ধেও। তবু না দমে ‘রাজ্য সিনিয়র সাঁতার ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা-২০১৬’ তে চ্যাম্পিয়ন হলেন হাওড়ার সায়নী ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০০:৫১
Share:

সায়নী ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।

পথে হাজারও বাধা। এই লড়াই শুধু প্রতিযোগিতা জেতার নয়, অভাবের বিরুদ্ধেও। তবু না দমে ‘রাজ্য সিনিয়র সাঁতার ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা-২০১৬’ তে চ্যাম্পিয়ন হলেন হাওড়ার সায়নী ঘোষ। সকল প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে শুধু প্রথম হয়েছেন তা নয়, ৫টি বিভাগেই রেকর্ড গড়েছেন! পরের লক্ষ্য ২০২০ টোকিও অলিম্পিক্স। তার আগেই রয়েছে এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমস। প্রত্যয়ী সায়নীর কথায়, “আমার লক্ষ্য অলিম্পিক্স। লক্ষ্যে পৌঁছতে যত কষ্টই হোক না কেন, সহজে হাল ছাড়ব না।”

Advertisement

শুধু রাজ্যে নয়, চলতি বছরের ‘সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন গেমস’-এ ৫ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে (আগের রেকর্ড ছিল ৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ড) ৪০০ মিটার মিড রিলেতে আন্তর্জাতিক রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ পদক ছিনিয়ে এনেছিলেন সায়নী। এ বার সেকেন্ডের ভগ্নাংশে হাতছাড়া হয়েছে কর্ণাটকের তেজস্বিনী ভি এর গড়া ২০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকের জাতীয় রেকর্ড। কিন্তু তাতে কী। ২০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোক, ২০০ এবং ৪০০ মিটার মিডলে, ২০০ মিটার বাটারফ্লাই ও ৪০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে রাজ্যে রেকর্ড গড়ে সাঁতারের জগতে তিনিই এখন রাজ্যের মুখ। ডাইভিংয়ে পুরুষদের বিভাগে প্রথম হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দন বেরা, ডাইভিংয়ে মেয়েদের বিভাগে জয়ী হুগলির মৌপিয়া মিত্র।

পুকুরের ঘোলা জলে সাঁতার কেটেই এমন অভাবনীয় সাফল্যে আপ্লুত বেঙ্গল অ্যামেচার সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের (বাসা) সদস্যরা। সাঁতারের জন্যই এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারেননি। সে জন্য অবশ্য দুঃখ নেই। এ বার পরীক্ষায় বসবেন। বাবা শ্যামল ঘোষের ফাস্ট ফুডের দোকান। সংসারে অনটন নিত্য সঙ্গী। তবু সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশিক্ষণ ও নিজের প্রচেষ্টায় লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছপা হননি তিনি। সায়নীর কথায়, “পুকুরের ঘোলা জলে সাঁতার কাটি। অভাব নিত্য সঙ্গী। ফলে লড়াইটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।” তাঁর শুধু একটাই আবেদন, ‘‘একটু সরকারি সাহায্য পেলে ভাল হত। দু’বেলা একটু ভাল খাবার, প্রশিক্ষণের জন্য একটু উন্নত পরিকাঠামো পেলে অলিম্পিক্সেও ভাল ফল করতে পারব বলেই
আমার আশা।’’

Advertisement

সায়নীর সঙ্গেই তিনটি বিভাগে রেকর্ড গড়েছেন কলকাতার শ্রেয়ন্তী পান। সৃষ্টি বসু রেকর্ড গড়েছেন একটি বিভাগে। ছেলেদের মধ্যে রয়েছেন শুধু রাজদীপ রায়। তিনটি বিভাগে রেকর্ড গড়ে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ান উত্তর চব্বিশ পরগনার একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাজদীপ। সব মিলিয়ে এ বারের রাজ্য সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১৩টি নতুন রেকর্ড হয়েছে। তবে কেউ জাতীয় রেকর্ড গড়তে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন