৭০ পেরোলে ঠাঁই মিলবে না বিসিসিআই-এ, রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট

সাতাশি বছরের পর অবশেষে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেও উদারীকরণের হাওয়া। লোঢা কমিশনের সুপারিশ মেনে সোমবার এক ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ বার থেকে কোনও মন্ত্রী, আমলা বা সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)-এর কোনও পদে থাকতে পারবেন না। সোমবার এই রায় দেওয়ার পর সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, আগামী ছ’মাসের মধ্যে এই নিয়ম কার্যকরী করতে হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ১৫:৩৮
Share:

সাতাশি বছরের পর অবশেষে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেও উদারীকরণের হাওয়া। লোঢা কমিশনের সুপারিশ মেনে সোমবার এক ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ বার থেকে কোনও মন্ত্রী, আমলা বা সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)-এর কোনও পদে থাকতে পারবেন না। সোমবার এই রায় দেওয়ার পর সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, আগামী ছ’মাসের মধ্যে এই নিয়ম কার্যকরী করতে হবে।

Advertisement

ভারতীয় বোর্ডের ‘শুদ্ধকরণে’র জন্য লোঢা় কমিশনকে নিয়োগ করে সুপ্রিম কোর্ট। কমিশনের তিন সদস্য— সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা, প্রাক্তন বিচারপতি অশোক ভান এবং প্রাক্তন বিচারপতি আর রবীন্দ্রনের প্রায় সবক’টি সুপারিশই মেনে নিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। মোট ১৫৯ পাতার রিপোর্টে বেশ কিছু বৈপ্লবিক সুপারিশ করেছিল কমিশন। তবে প্রাথমিক ভাবে তা মানতে নারাজ ছিল অনেকেই। গত জানুয়ারিতেই সিএবি এ নিয়ে বেশ আপত্তি জানায়। মন্ত্রী, আমলা বা সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তিদের বিসিসিআইয়ের প্রশাসনিক পদে থাকা-সহ লোঢা কমিশনের মোট ১০টি সুপারিশে আপত্তি জানিয়েছিল সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভের গঙ্গোপাধ্যায় ও তার অনুমোদিত সংস্থার কর্তারা। গত মার্চে বিসিসিআই-ও সর্বোচ্চ আদালতে হলফনামা পেশ করে জানায়, বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে লোঢা কমিশন সুপারিশগুলো দিলেই ভাল হত। তবে তা উড়িয়ে দেয় আদালত।

এ দিন প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর ও প্রধান বিচারপতি ইব্রাহিম কলিফুল্লাহের বেঞ্চ জানিয়েছে, মন্ত্রী, আমলা বা সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তিদের জন্য বোর্ডের প্রশাসনিক দরজা বন্ধ করার পাশাপাশি মোট ন’বছর বা তার বেশি সময়কার পদাধিকারীদেরও এ বার আর ঠাঁই মিলবে না বোর্ডে। পাশাপাশি, বিসিসিআইয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকবেন কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মনোনীত এক ব্যক্তি। এ ছাড়া, কমিশনের ‘এক রাজ্য, এক ভোটে’র সুপারিশেও সায় দিয়েছে আদালত। এর ফলে মহারাষ্ট্র ছাড়া প্রতি রাজ্য কেবলমাত্র একটি ভোটের অধিকারই পাবে। রাজ্য ছাড়া অন্য ক্রিকেট সংস্থার ভোটাধিকারের বিলোপ ঘটানো হয়েছে। এর ফলে সার্ভিসেস বা রেলওয়েজ-এর মতো ক্রিকেট সংস্থার আর কোনও ভোট রইল না। তবে মহারাষ্ট্রের তিনটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রত্যেকেই পালা করে এক বার ভোট দিতে পারবে। কমিশনের সুপারিশ মেনে বোর্ডের প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা আনতে এর আগেই এক জন আইনজীবী নিয়োগ করেছিল বিসিসিআই। এর পাশাপাশি, এক জন করে এথিক্স অফিসার ও ইলেকটোরাল অফিসার নিয়োগেরও কথা বলা হয়েছে। তবে বেটিংকে আইনসিদ্ধ করার সুপারিশ নিয়ে সংসদের কোর্টেই বল ঠেলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

এ দিনের রায়ের পর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর এম লোঢা বলেন, “ভারতীয় ক্রিকেট তথা ক্রীড়া জগতের পক্ষে একটি অসাধারণ দিন। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর ক্রীড়াপ্রেমীদের আনন্দ করা উচিত।” আইপিএল চেয়ারম্যান তথা সাংসদ রাজীব শুক্ল বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে সম্মান জানাই। তবে এই রায়কে কী ভাবে কার্যকর করা যায় তা নিয়ে বিচার-বিবেচনা করা হবে।” এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার বিষেণ সিংহ বেদী ও কীর্তি আজাদ। এই রায়ের পর বিসিসিআইয়ের পরিচিত সমীকরণের যে আমূল পরিবর্তন ঘটবে, তা বলাই বাহুল্য।

আরও পড়ুন

সাতাশি বছর পর বোর্ডে উদারীকরণের পরোয়ানা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন