সেরিনা উইলিয়ামস। যে নামটা মনে পড়লেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অসাধারণ জিনগত শক্তিশালী এক চূড়ান্ত অ্যাথলিট। যদিও আপনি বাবা-মার থেকে বংশপরম্পরায় কী অর্জন করেছেন সেটা কোনও ব্যাপার নয়। কঠিনতম পরিশ্রম আর জেতার মানসিকতাই একজনকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে তোলে। এখনও মনে আছে, ভেনাস যখন বিশ্ব টেনিস দাপিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে চলেছে, তখন উইলিয়ামস বোনেদের বাবা রিচার্ড বোঝানোর চেষ্টা করতেন সেরিনার কাছে তাঁর প্রত্যাশা আরও অনেক বেশি।
কোর্টে সেরিনা যে পাওয়ার আর ব্যাল্যান্সের পরিচয় রাখে সেটা আসে ওর প্রচণ্ড কঠিন পরিশ্রমসাধ্য ট্রেনিং শিডিউলের সুবাদে। ফরাসি ওপেনে আমি ওর সঙ্গে জিম করেছি। দেখেছি সেরিনা এমন সব ফিটনেস ড্রিল করে যা অবিশ্বাস্য। টেনিসের প্রায় সব কিছু জিতেও ও নিজের মধ্যে আত্মতৃপ্তিকে ঘেঁসতে দেয়নি। যা ওর মানসিক শক্তিরও পরিচয় দেয়। সেরিনা আর আমি ওয়ার্ল্ড টিম টেনিসে ওয়াশিংটন ক্যাসেলসে একসঙ্গে খেলি। সেখানেও ওর ভয়ঙ্কর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মনোভাব সারাক্ষণ ঠিকরে বেরোয়।
প্রথম রাউন্ড জিতে। ছবি:এএফপি
কিন্তু ক’জন সেরিনার দারুণ রসিকতাবোধের কথা জানেন! আমাকে বয়স নিয়ে খোঁচাতে ভালবাসে সেরিনা। গত বছর আইপিটিএলের জাপান পর্বে সারাক্ষণ আমার ‘আসল’ বয়স বলার জন্য চাপ দিচ্ছিল। নাগাড়ে কানের কাছে বলে যাচ্ছিল, বিয়াল্লিশ বছর বয়সে নাকি আমার পক্ষে কিছুতেই কোর্টে এত ভাল নড়াচড়া সম্ভব নয়! সেরিনা কারও পিছনে লাগা মানে তার রক্ষা নেই।
উইম্বলডনে এ বারও সেরিনা ফেভারিট। আমার অন্য বন্ধু গার্বাইন মুগুরুজার সঙ্গে। আমার মনে হয়, সেরিনার পাওয়ার গেম আর গতির সঙ্গে এই মুহূর্তে সার্কিটে একমাত্র মুগুরুজাই পাল্লা দিতে পারে। যদিও খেলাধুলোয় জয়-হারের মধ্যে এতই সূক্ষ্ম ব্যবধান যে, চ্যাম্পিয়ন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করাটা স্রেফ মূর্খামি। সে জন্য আমি অহেতুক গলা বাড়িয়ে বলতে যাচ্ছি না, ওরা দু’জনই আবার একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলবে। তবে মেয়েদের মধ্যে ওরা দু’জনই সবচেয়ে শক্তিশালী।