বাংলাকে ফাইনালে তোলার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই শঙ্কর রায়ের জীবনের ছবিটা বদলাতে শুরু করল।
তাঁর দু’হাত বৃহস্পতিবার বাংলাকে সাডেন ডেথে ছয় বছর পর ফাইনালে তুলেছিল। আর সেই সুবাদেই নারকেলডাঙ্গার ছেলেটির পরিবারের দুদর্শার খবর প্রকাশিত হয় আনন্দবাজারে। সেই খবরের জেরেই শঙ্করের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য চাকরির ব্যবস্থা করলেন আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। এবং সেটা তাঁর নিজের কোম্পানিতেই। যা সাধারণত হয় না। শুক্রবার সকালেই গোয়ায় বাংলার টিম হোটেলে ফোন করেন সচিব। সেমিফাইনালের নায়ককে বলে দেন, ‘‘মাকে আর লোকের বাড়ি কাজ করতে পাঠিও না। তুমি কলকাতায় এসে চাকরিতে যোগ দাও। আমি ব্যবস্থা করছি। মন দিয়ে ফুটবলটা খেল।’’ সচিবের এই কথায় পিয়ারলেস টিমে খুব কম টাকার মাসিক মাইনেতে খেলা শঙ্কর আপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে টিম হোটেলে ফোনে ধরা হলে মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের টিমের কিপার বলে দিলেন, ‘‘এটা আমার কাছে স্বপ্ন সফল হওয়ার মতো। চাকরিটা আমার খুব দরকার ছিল। পরিবারটা বাঁচবে। যে করেই হোক বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করতেই হবে। ট্রফি নিয়ে ফিরতে চাই।’’ আপাতত সচিবের বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি পেলেও ময়দানের খবর লিগে খেলা রেলের একটি টিম ডাকতে চলেছে তাঁকে। তবে সমস্যা হল বস্তি পরিবারের ছেলেটি মাধ্যমিক পাস নন। ফলে নতুন নিয়মে রেলে স্থায়ী চাকরি পাওয়া কঠিন।
এ দিকে রবিবার ফাইনালের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন কোচ মৃদুল। রাতে মোটিভেশন ক্লাসের পাশাপাশি গান এবং নাচও হল চাপ কাটাতে। মুমতাজ আখতার গান গাইলেন। ভাংড়া নাচলেন মনবীর সিংহ। মৃদুল বললেন, ‘‘গোয়া খুবই ভাল টিম। টুনার্মেন্টে ওরা খুব ভাল খেলছে। ওদের প্রচুর দর্শক থাকবে মাঠে। তাতে সমস্যা নেই। কারণ আমার টিমে যাঁরা খেলছে তাদের মধ্যে সবাই ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলা ছেলে।’’
বাংলা টিম অবশ্য চোট-আঘাতে বিপর্যস্ত। রানা ঘরামি থেকে বসন্ত সিংহ—সবারই চোট। ডাক্তার কাউকে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিয়েছেন। কাউকে ওষুধ দিয়েছেন। এই অবস্থায় আজ শনিবার ম্যাচের আগের দিন পাঁচ জনকেই বিশ্রাম দিচ্ছেন মৃদুল। বললেন, ‘‘ওদের হালকা ওয়ার্ম আপ করিয়ে ছেড়ে দেব।’’