নায়ক: শিখর ধবন। ছবি: পিটিআই
আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যাচটা দেখতে বসে দু’দলের দুই বিদেশি ক্রিকেটারের কথা মনে পড়ছিল। দু’জনেই অস্ট্রেলীয়। রাজস্থান রয়্যালসের স্টিভ স্মিথ। আর সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ডেভিড ওয়ার্নার। দু’জনেই সাম্প্রতিক বল-বিতর্কের জেরে মাঠের বাইরে। তবে আমার মতে, স্টিভ স্মিথ টেস্টে যে রকম দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। ঠিক তেমনই ওয়ার্নার টি-টোয়েন্টি-তে স্মিথের চেয়ে একটু বেশি কার্যকরী। সেই হিসেবে রাজস্থান রয়্যালস-এর চেয়েও ক্ষতিটা বেশি হায়দরাবাদের।
তবে প্রথম ম্যাচেই কেন উইলিয়ামসনের দল ২৫ বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেটে ম্যাচটা জিতে বুঝিয়ে দিল, এ বারের আইপিএলে অন্যতম সেরা তারাই। দলটায় ভুবনেশ্বর কুমার, শাকিব আল হাসান, সিদ্ধার্থ কল, স্ট্যানলেক, রশিদ খানের মতো বোলার রয়েছে। উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। ব্যাটসম্যান হিসেবে ঋদ্ধি ছাড়াও শিখর ধবন, উইলিয়ামসন, মণীশ পাণ্ডে, ইউসুফ পাঠান, শাকিব। ফিল্ডিংয়ে রশিদ, সিদ্ধার্থদের মতো চনমনে ক্রিকেটার। দুর্দান্ত ভারসাম্য দলটায়। এখনও পর্যন্ত আইপিএলের যে চারটে ম্যাচ দেখলাম তাতে মনে হচ্ছে, ঋদ্ধিমানদের দলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনেক রসদ রয়েছে। যদিও এখনও অনেকটা পথ যেতে হবে ওদের।
দলটার বোলিং শক্তি এতটাই যে এ দিন ষষ্ঠ বোলার ব্যবহার করতে হয়নি হায়দরাবাদের। ওদের পাঁচ বোলারের মধ্যে কেউ কিন্তু চার ওভারে ৩০ রানের বেশি দেয়নি। এদের মধ্যে অন্যতম সেরা ভুবনেশ্বর কুমার (১-৩০)। এ দিন শেষের ওভারগুলোতে ওর সেই বিখ্যাত ‘নাকল বল’ করে চমক দিলেও, আমার মতে এই ম্যাচে হায়দরাবাদ বোলিংয়ের আসল কাজটা করে গিয়েছে আফগান রশিদ খান (১-২৩) ও সিদ্ধার্থ কউল (২-১৭)।
রশিদ শেষের ওভারগুলোতে জোরের উপর লেগ স্পিন আর গুগলি মিশিয়ে এমন বল করে গেল যে, ব্যাটসম্যান মারার জায়গা পায়নি। গত কয়েক বছরে এ রকম বুদ্ধিদীপ্ত আফগান বোলার আমি দেখিনি। আর সিদ্ধার্থ লাইন, লেংথ-এর সঙ্গে পিচের বাউন্স কাজে লাগিয়ে এমন বল করছিল যে রাজস্থান রয়্যালস কোনও অবস্থাতেই ওকে সামনের পায়ে খেলতে সাহস করেনি। এর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিলি স্ট্যানলেক (১-২৯)। ছেলেটা শুরুর দিকে ১৪৫ কিলোমিটার বেগে বল করছিল। ওই এক্সপ্রেস গতি খেলতে গিয়ে বার বার সমস্যা হচ্ছিল বেন স্টোকস (৫)-দের। এর সঙ্গে শাকিব (২-২৩)-ও বুদ্ধি করে বল করে গেল। আমার মতে, কেকেআর শাকিব-কে না রাখায় একদিক দিয়ে আশীর্বাদ নেমে এসেছে এই বাংলাদেশি ক্রিকেটারের কাছে। কারণ কেকেআর-এ ওকে লড়তে হত কুলদীপ যাদব, সুনীল নারাইন, পীযূষ চাওলা-দের সঙ্গে। সেখানে হায়দরাবাদে ও অনেক চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারছে।
রাজস্থান রয়্যালস ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব কিছুতেই পর্যুদস্ত। ব্যতিক্রম স়ঞ্জু স্যামসন (৪২ বলে ৪৯)। একমাত্র ওকেই শেন ওয়ার্নের দলের হয়ে মেজাজে ব্যাট করতে দেখলাম। বোঝা যাচ্ছে গত কয়েক মাসে নেটে অনেক সময় ব্যয় করেছে ও। অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে (১৩) রান পায়নি। তার উপর ফিল্ডিংয়ের সময় শুরুতেই শিখর ধবন-কে শূন্য রানে ফেলে দিয়ে হারকে আমন্ত্রণ করে আনল। আর সেই শিখরই (৩৬) ম্যাচ সেরা হয়ে জিতিয়ে দিল দলকে।